আজকাল ওয়েবডেস্ক: অনেক সময় আমরা ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন ফাইল করার সময় কিছু তথ্য বাদ দিয়ে ফেলি বা ভুলভাবে জমা দিই। কিন্তু উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই — আয়কর দফতর এখন এমন একটি সুযোগ দিচ্ছে, যার মাধ্যমে আপনি পরবর্তী সময়েও সেই ভুল সংশোধন করতে পারেন। এই ব্যবস্থার নামই হলো “আপডেটেড রিটার্ন”।
আপডেটেড রিটার্ন কী?
আপডেটেড রিটার্ন হল এমন একটি বিশেষ বিধান, যা করদাতাদের অতিরিক্ত সময় দেয় নিজেদের ভুল বা বাদ পড়া আয় স্বেচ্ছায় প্রকাশ করার জন্য। এর মূল উদ্দেশ্য হলো করদাতারা যেন ভয় বা জরিমানার আশঙ্কা ছাড়াই নিজেদের ভুল সংশোধন করতে পারেন, এবং সরকারও স্বচ্ছ কর ব্যবস্থার দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে যায়।
নিয়ম অনুযায়ী, কোনও আর্থিক বছরের শেষে থেকে ৪৮ মাসের (চার বছর) মধ্যে আপডেটেড রিটার্ন জমা দেওয়া যায়। অর্থাৎ মূল্যায়ন বছর ২০২৫–২৬–এর ক্ষেত্রে আপডেটেড রিটার্ন জমা দেওয়ার সর্বশেষ সময়সীমা ৩১ মার্চ, ২০৩০।
আরও পড়ুন: শুধু রিটার্ন নয়, ফান্ডের ‘স্বাস্থ্য’ দেখাও জরুরি, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা
তবে সব ক্ষেত্রেই এই রিটার্ন জমা দেওয়া যায় না। যদি কোনও করদাতা এমন একটি রিটার্ন দাখিল করতে চান যেখানে মোট আয় দেখানো হচ্ছে ক্ষতির, বা আগের তুলনায় করের দায় কম দেখানো হচ্ছে, তবে তিনি আপডেটেড রিটার্ন ফাইল করতে পারবেন না। একইভাবে, আয়কর আইনের ১৩২ ধারার অধীনে কোনও সার্চ বা সার্ভে শুরু হলে সংশ্লিষ্ট বছরটির জন্য আপডেটেড রিটার্ন ফাইল করা যাবে না। এছাড়াও, একটি নির্দিষ্ট অর্থবছরের জন্য আপডেটেড রিটার্ন কেবল একবারই ফাইল করা যায় — এটি পরবর্তীতে সংশোধনযোগ্য নয়।
অতিরিক্ত কর কত দিতে হয়?
আপডেটেড রিটার্ন দাখিলের সুবিধা থাকলেও, এর সঙ্গে একটি অতিরিক্ত খরচ যুক্ত আছে। এটিকে মূলত বিলম্বজনিত জরিমানা বলা যেতে পারে।
যদি আপডেটেড রিটার্ন মূল্যায়ন বছরের শেষ থেকে ১২ মাসের মধ্যে জমা দেওয়া হয়, তবে মোট কর ও সুদের উপর ২৫% অতিরিক্ত কর দিতে হবে।
১২ থেকে ২৪ মাসের মধ্যে জমা দিলে এই হার ৫০%,
২৪ থেকে ৩৬ মাসের মধ্যে হলে ৬০%,
৩৬ থেকে ৪৮ মাসের মধ্যে হলে ৭০% অতিরিক্ত কর দিতে হবে।
এই অতিরিক্ত করের উদ্দেশ্য হল দেরিতে আয় ঘোষণা করা করদাতাদের ক্ষেত্রে একটি ন্যায্য জরিমানা আরোপ করা, তবে একই সঙ্গে তাঁদের আইনি সুযোগ দেওয়া যাতে তাঁরা পরবর্তীতে জটিলতায় না পড়েন।
কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?
এই বিধান মূলত তাঁদের জন্য যারা অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনও তথ্য বাদ দিয়েছেন বা আয়ের কিছু অংশ রিপোর্ট করতে ভুলে গেছেন। আপডেটেড রিটার্ন ফাইল করার মাধ্যমে তাঁরা নিজেরাই সেই ভুল সংশোধন করতে পারেন, কর দফতরের নোটিশ বা তদন্তের অপেক্ষা না করেই। অর্থাৎ, যদি আপনি এখন বুঝতে পারেন যে মূল্যায়ন বছর ২০২৫–২৬-এর ITR-এ কোনও তথ্য বাদ পড়েছে বা আয় কম দেখানো হয়েছে, তাহলে চিন্তার কিছু নেই — ২০৩০ সালের মার্চ পর্যন্ত সময় রয়েছে সেই ভুল সংশোধন করে সঠিক রিটার্ন জমা দেওয়ার। এই প্রক্রিয়াটি শুধু স্বচ্ছ করব্যবস্থারই প্রতিফলন নয়, বরং এটি করদাতাদের দায়িত্বশীল ও আইনসম্মত পথে থাকার সুযোগও দেয়।
