আজকাল ওয়েবডেস্ক: দীপাবলিতে ভারতের পণ্য ও পরিষেবা বিক্রির মোট পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ ট্রিলিয়নেরও বেশি। কেন্দ্র সরকারের জিএসটি হ্রাস উদ্যোগের ফলে গ্রাহক আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাজারে অভ্যন্তরীণ চাহিদা তীব্রভাবে বেড়েছে। 


প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বছরের দীপাবলির সিজনে শুধুমাত্র পণ্য বিক্রির পরিমাণই দাঁড়িয়েছে ৫.৪০ ট্রিলিয়ন, আর পরিষেবা খাতে বিক্রি হয়েছে প্রায় ৬৫,০০০ কোটি টাকা। গত বছর একই সময়ে মোট বিক্রি ছিল প্রায় ৪.২৫ ট্রিলিয়ন, অর্থাৎ এই বছর বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৪১%।


কোন কোন খাত বিক্রিতে নেতৃত্ব দিয়েছে?
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই বছর অ-কপোরেট ও ঐতিহ্যবাহী বাজারের খুচরো ব্যবসা মোট বিক্রির প্রায় ৮৫% অবদান রেখেছে। অর্থাৎ ডিজিটাল যুগেও দোকানে গিয়ে কেনাকাটা এবং ছোট ব্যবসায়ীদের কাছে ক্রেতাদের ভিড় আগের তুলনায় অনেক বেশি বেড়েছে।


বিভিন্ন খাতের অবদান নিম্নরূপ:
গ্রোসারি ও এফএমসিজি: ১২%
সোনা ও গয়না: ১০%
ইলেকট্রনিকস ও ইলেকট্রিকাল সামগ্রী: ৮%
কনজিউমার ডিউরেবলস: ৭%
প্রস্তুত পোশাক: ৭%
উপহার সামগ্রী: ৭%
হোম ডেকর (গৃহসজ্জা) পণ্য: ৫%
এই খাতগুলিই মোট খুচরো বিক্রিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে।

আরও পড়ুন: নোয়েল-মেহলি বিবাদ থামাতে কাকে বিশেষ দায়িত্ব দিল টাটা গোষ্ঠী, এবার কী সমস্যা মিটবে


পরিষেবা খাতের ৬৫,০০০ কোটি টাকার বিক্রির মধ্যে প্যাকেজিং, হসপিটালিটি, ক্যাব সার্ভিস, ভ্রমণ, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, তাঁবু ও সাজসজ্জা, মানবসম্পদ এবং ডেলিভারি পরিষেবার বিক্রি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।


প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কেন্দ্র সরকারের নতুন জিএসটি ব্যবস্থা যা পূর্ববর্তী বহুতল কাঠামোর পরিবর্তে দুই স্তরের (৫% ও ১৮%) কর কাঠামো প্রবর্তন করেছে। এটি ব্যবসায়িক পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।


সার্ভেতে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীদের মধ্যে ৭২% জানিয়েছেন যে বিক্রির বৃদ্ধি সরাসরি জিএসটি হ্রাসের ফল। বিশেষ করে জুতো, পোশাক, মিষ্টি ও কনফেকশনারি, গৃহসজ্জা সামগ্রী এবং কনজিউমার ডিউরেবলস-এর উপর কর কমানোর ফলে ক্রেতারা বেশি কেনাকাটায় আগ্রহী হয়েছেন।


কর্মসংস্থানে দীপাবলির প্রভাব
দীপাবলি শুধু বিক্রিই বাড়েনি, তৈরি হয়েছে প্রায় ৫০ লক্ষ অস্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ। এই চাকরিগুলি মূলত লজিস্টিকস, প্যাকেজিং, পরিবহন এবং খুচরো পরিষেবা খাতে সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া, গ্রামীণ ও অর্ধনগরাঞ্চলীয় এলাকা থেকেও উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ দেখা গেছে। এই অঞ্চলের বাণিজ্য মোট বিক্রির প্রায় ২৮% দখল করেছে।


বিশ্লেষকদের মতে, এই প্রবণতা প্রমাণ করে যে ভারতের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে, এবং ছোট ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাজারগুলি আবারও দেশের অর্থনীতির কেন্দ্রে ফিরে আসছে। দীপাবলি তাই শুধু উৎসব নয়, বরং ভারতের খুচরো বাজারের পুনরুত্থানের প্রতীক হয়ে উঠেছে।