আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত কয়েক দশক ধরে তাঁর উপস্থিতি শিল্পকে সমাজকর্মের সঙ্গে একত্রিত করেছে। দর্শকদের মনে করিয়ে দিয়েছেন যে থিয়েটার কেবল একটি মঞ্চ পরিবেশনা নয়, বরং জীবনের দর্শন। ১২ সেপ্টেম্বর সিস্টার নিবেদিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগ দ্বারা আয়োজিত একটি বিশেষ মাস্টারক্লাসে কিংবদন্তি নাট্যকার এবং আধুনিক কন্নড় থিয়েটারের পথিকৃৎ শ্রী প্রসন্ন। এই অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থী, কলেজের শিক্ষক এবং নাট্যপ্রেমীরা উপস্থিত ছিলেন। সকলেই এমন একজন ব্যক্তিত্বের কাছ থেকে কিছু শেখার জন্য আগ্রহী ছিলেন, যাঁর কাজ অভিনয় এবং জনজীবন উভয়কেই প্রভাবিত করেছে।

মাস্টারক্লাসটি কেবল কৌশল বা অভিনয়ের পদ্ধতি শেখানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। থিয়েটার কীভাবে চিন্তাভাবনা এবং চরিত্র গঠন করে তার একটি সম্পূর্ণ রূপরেখা তৈরি করার চেষ্টা হয়েছিলে এই ক্লাসে। শুরু থেকেই প্রসন্ন সেখানে উপস্থিত সকলের একটি উন্মুক্ত পরিবেশ তৈরি করেছিলেন। তাঁর মতে, থিয়েটার কেবল পেশাদার শিল্পীদের নয়, থিয়েটার সকলের। তিনি সূক্ষ্ণভাবে বুঝিয়েছেন, কীভাবে ক্ষুদ্রতম অঙ্গভঙ্গি, গল্প এবং অভিজ্ঞতাগুলি সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষার উৎস হয়ে উঠতে পারে। মাস্টারক্লাসে অংশগ্রহণকারীদের দৈনন্দিন কার্যকলাপে অর্থ অনুসন্ধান করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

প্রসন্ন তাঁর দু’টি উল্লেখযোগ্য বই সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিলেন। সেগুলি হল ‘ইন্ডিয়ান মেথড ইন অ্যাক্টিং’ এবং ‘অ্যাক্টিং অ্যান্ড বিয়ন্ড’। দু’টি বই ব্যাপক হারে বিক্রি হয়েছিল।

বিকেলের আলোচনাগুলি শুরু হয়েছিল এক একটি অধ্যায়ের মতো, প্রতিটি অধ্যায় এক একটি নতুন স্তর যোগ করেছিল। অংশগ্রহণকারীদের মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে থিয়েটার কোনও বিচ্ছিন্ন শিল্প নয় বরং সমাজ, মূল্যবোধ এবং দৈনন্দিন সংগ্রামের সঙ্গে জড়িত। তাঁর নিজের গল্পের সঙ্গে ভবিষ্যতের প্রতিফলন মিশ্রিত করে তিনি শিখিয়েছেন যে, থিয়েটার প্রদর্শনের বিষয় নয় বরং সচেতনতা, সহানুভূতি এবং উপলব্ধি গড়ে তোলার বিষয়।

আরও পড়ুন: 'গ্রাউন্ড জিরো বিজনেস ব্যাটল', শিলিগুড়ি ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে বিশেষ দিনে বিশেষ আয়োজন

মাস্টারক্লাসের ইন্টারেক্টিভ প্রকৃতি ছিল এর অন্যতম আকর্ষণ। শিক্ষার্থীরা আগ্রহের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছিলেন। নিজেদের প্রশ্ন রেখেছিলেন শিল্পীর সামনে। প্রসন্ন একজন শিক্ষকের ধৈর্য এবং একজন শিল্পীর প্রজ্ঞার সঙ্গে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন।

দিনটি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি অনুভূতি স্পষ্ট হয়ে উঠল, অংশগ্রহণকারীরা কেবল থিয়েটার সম্পর্কেই শিখেননি, তাঁরা সংবেদনশীলতা এবং উদ্দেশ্য নিয়ে বেঁচে থাকার পদ্ধতিও শিখেছেন।