নিজস্ব সংবাদদাতা: আকাশ আট-এ বরাবরই সাহিত্য কিংবা ঐতিহাসিক চরিত্রদের নিয়ে ধারাবাহিক দেখা যায়। এই চ্যানেলের মূল বৈশিষ্ট্য সেটিই। এবার আরও একবার এক ঐতিহাসিক চরিত্রকে দর্শকের সামনে তুলে ধরছে আকাশ আট। শুরু হয়েছে নতুন ধারাবাহিক 'খনার কাহিনী'। 

'খনা'র ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয় করছে ঋষিতা নন্দী। তাকে দর্শক শেষ দেখেছিলেন জি বাংলার ধারাবাহিক 'আলোর কোলে'র 'পুপুল'-এর চরিত্রে। বয়স অল্প হলে কী হবে, অভিনয় দক্ষতায় দর্শকের মন জয় করেছে সে। 

গল্পে খনার ও মিহিরের বয়স এখন প্রায় আট বছর। 'মিহির'-এর চরিত্রে আদ্রিয়ান বিশ্বাস।‌ তাদের বন্ধুত্ব ধীরে ধীরে নিবিড় হচ্ছে। সেটা রাজমাতা সহ বাকিদের চক্ষুশূল হতে থাকে। কিন্তু একমাত্র রাজকন্যা বাবার প্রশ্রয়ে ও আদরে কোনও বাধাই পায়না। তারই মধ্যে চাষের জমিতে জল জমে যখন শস্যক্ষেত ভেসে যেতে বসেছিল খনা ও মিহিরের বুদ্ধিমত্তায় রক্ষা পেয়েছিল সব। সমগ্র রাজ্য তাদের নামে জয়জয়ক্কার করতে থাকে। তবে কি এই ভাবেই সমগ্র রাজ্য ও রাজ্যবাসীকে সাহায্য করতে পারে তারা? নাকি কুনজর পড়বে মিহির – খনার বন্ধুত্বেও? 
 

আরও পড়ুন: গোপালকে কোলে নিয়ে আদর থেকে শুরু করে নিজেই কৃষ্ণের মতো সাজা, জন্মাষ্টমীতে আর কী করলেন টলি তারকারা?


এর মধ্যেই রাজা অটনাচার্য আর ছোট ভাই গুনাচার্যের পারিবারিক অশান্তি সারা রাজ্যবাসীর সামনে আসে। আর ভরা রাজসভায় রাজার মাথায় চোট পাবার পর, খনা নিজেকে দোষী মনে করে। সে মিহিরের মুখ দেখার কারনেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে নিজেকে শাস্তি দিতে, সে নির্বাসনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। খনার সাথে রানী কলাবতি যত্নি কাঠুরানীকে পাঠায় বনবাসে। তাই মিহির আবার মাকে ছেড়ে দূরে থাকতে হবে বলে রেগে যায় খনার উপর। খনার এই সিদ্ধান্তে যখন কেউ তাকে আটকাটে পারছে‌ না, শয্যাশায়ী রাজামশাই কী পারবে খনাকে আটকাটে? কী হবে খনার?   

 

এই ধারাবাহিকের গল্পে দেখানো হবে খনার জীবন কাহিনি। কথিত আছে খনা যা ভবিষ্যদ্বাণী করে গিয়েছেন, তার অধিকাংশই মিলে যায় বলে বিশ্বাস অনেকের। খনা ছিলেন জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী এক বিদুষী নারী। যিনি তাঁর বচনের জন্য সমাদৃত। তাঁর আসল নাম নাকি লীলাবতী। খনার ভবিষ্যতবাণীগুলি 'খনার বচন' নামে পরিচিত। কথিত আছে, খনা বা লীলাবতী ছিলেন সিংহলরাজের কন্যা।


বরাহমিহির বা বররুচির পুত্র মিহির ছিলেন খনার স্বামী। খনা এবং মিহির দুজনেই জ্যোতিষশাস্ত্রে দক্ষতা অর্জন করেন। মিহির একসময় বিক্রমাদিত্যের সভাসদ হন। একদিন মিহির আকাশের তারা গণনায় সমস্যায় পড়েন। খনা সেই সমস্যার সমাধান দিয়ে দেন। তা রাজা বিক্রমাদিত্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। গণনা করে খনার দেওয়া পূর্বাভাসে রাজ্যের কৃষকরা উপকৃত হতেন বলে রাজা বিক্রমাদিত্য খনাকে তাঁর সভার 'দশমরত্ন' আখ্যা দেন। কিন্তু শ্বশুর বরাহ তাঁর বউমার এই প্রতিপত্তি মোটেই ভালভাবে নিলেন না। রাজসভায় প্রতিপত্তি হারানোর ভয়ে প্রতিহিংসা জাগলো তাঁর মনে। তিনি পুত্র মিহিরকে আদেশ দিলে মিহির তাঁর স্ত্রী লীলাবতীর জিহ্বা কেটে দেন। এর কিছুকাল পরে খনার মৃত্যুও ঘটে। বাঙালির লোকসংস্কৃতিতে খনার বচনের বিশেষ জায়গা রয়েছে। খনার বচন মূলত কৃষিতত্ত্বভিত্তিক ছড়া। এবার তাঁর কাহিনিই ফুটে উঠছে এই ধারাবাহিকে।