আজকাল ওয়েবডেস্ক: আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। রবিবারেই মহাকাশের উদ্দেশে পাড়ি দেবে ইসরোর সবচেয়ে ভারী কৃত্রিম উপগ্রহ। চার হাজার কেজিরও বেশি ওজন এই উপগ্রহের। ইসরো জানিয়েছে, এটিই দেশের সবচেয়ে ভারী কৃত্রিম উপগ্রহ, যা মহাকাশে পাড়ি দিতে চলেছে। এত ভারী ওজনের উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করবে বলে এই রকেটকে ‘বাহুবলী’ নাম দিয়েছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। 

কোথা থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে? 

দেশের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরোর তরফে ঘোষণা করা হয়েছে, আজ রবিবার অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে চার হাজার ৪১০ কেজি ওজনের উপগ্রহ সিএমএস-০৩। এর আগে এত ওজনের কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠায়নি ইসরো। ইসরোর তরফে আরও জানানো হয়েছে, ভারতের মাটি থেকে জিওসিনক্রোনাস ট্রান্সফার অরবিট (জিটিও)-তে প্রতিস্থাপন করা হবে এই উপগ্রহটিকে। এলভিএম৩-এম৫ রকেটে করে মহাকাশে পাড়ি দেবে সে। 

কখন মহাকাশে পাড়ি দেবে? 

ইসরো জানিয়েছে, রবিবার বিকেল পাঁচটা বেজে ২৬ মিনিটে এলভিএম৩-এম৫ রকেটে চাপিয়ে উৎক্ষেপণ করা হবে এই উপগ্রহ। এলভিএম৩-এম৫ রকেট হল ইসরোর পঞ্চম সক্রিয় ফ্লাইট। এর দৈর্ঘ্য হল ৪৩.৫ মিটার। আজ সিএমএস-০৩ উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করা হবে, তা মহাসাগরের বিস্তৃত এলাকার তথ্য দেবে। 

দেশের সবচেয়ে ভারী কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণে পিছনে খরচ কত? 

সূত্রের খবর, দেশের সবচেয়ে ভারী কৃত্রিম উপগ্রহ 
শুধুমাত্র উৎক্ষেপণ ও মহাশূন্য পৌঁছনো পর্যন্ত খরচ হতে পারে ৫০০ কোটি টাকার অধিক। এর আগে ২০২৩ সালে এলভিএম-৩ বা ‘বাহুবলী’ রকেটকে মহাশূন্যে পাঠিয়েছিল ইসরো। সেই বছর চন্দ্রযান ৩-কে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল এটি। আর এবার নিয়ে যাবে সিএমএস-০৩ কৃত্রিম উপগ্রহকে। 

কেন এই ভারী কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানো হচ্ছে? 

জানা গেছে, ভারতীয় নৌবাহিনীর সামুদ্রিক প্রতিরক্ষা যোগাযোগ হল এর মূল উদ্দেশ্য। অর্থাৎ নৌসেনার কাজের সুবিধার্থে এই ভারী কৃত্রিম উপগ্রহটিকে মহাকাশে পাঠাচ্ছে ইসরো। প্রায় সাড়ে চার হাজার কেজি ওজনের সিএমএস-০৩ নৌসেনার অন্যতম হাতিয়ার হতে চলেছে। সমুদ্র উপকূল থেকে দুই হাজার কিলোমিটার দূর পর্যন্ত বার্তা পাঠানোর ক্ষমতা তুলে দেবে এই নতুন কৃত্রিম উপগ্রহ। যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও উন্নততর করার লক্ষ্যেই ভারী কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাচ্ছে ইসরো। 

প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় রাডার অ্যান্টেনা যৌথভাবে কক্ষপথে স্থাপন করেছে দেশের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের 
মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা। হিমবাহ, জঙ্গল, ভূকম্পন জলবায়ু পরিবর্তনের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের খবর দেবে এই রাডার অ্যান্টেনা। 

ইসরো এবং নাসা যৌথ ভাবে সিন্থেটিক অ্যাপারচার মিশন (নিসার) শুরু করে। সেই অভিযানের অধীনে এই অ্যান্টেনা স্থাপন করা হয়। যেটি ৩৩ ফুট দীর্ঘ। পৃথিবী থেকে ৪৬০ মাইল দূরে মহাকাশে স্থাপন করা হয়েছে এই বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন এই রাডার অ্যান্টেনা। 

এর আগে সবচেয়ে ভারী উপগ্রহ ছিল জিস্যাট-১১। ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর জিস্যাট-১১ উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। ফ্রেঞ্চ গুয়ানার কুরো থেকে ওই কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। যার ওজন ছিল পাঁচ হাজার ৮৫৪ কেজি। আরিয়ানে-৫ ভিএ-২৪৬ রকেটে চেপে জিস্যাট-১১ কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিল।