আজকাল ওয়েবডেস্ক: একটি নয়, রয়েছে দু'টি চাঁদ। না, কোনও কল্পকাহিনী নয়। বাস্তবেই দু'টি চাঁদের সন্ধান পেয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। যা ২০৮৩ সাল পর্যন্ত দু'টি চাঁদ দেখা যাবে বলে আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানী মহল। সামাজিক মাধ্যমের পাশাপাশি মূলধারার কিছু  সংবাদ মাধ্যমেও এমনটাই দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ সত্য নয় বলে জানা গিয়েছে। তাহলে আসলে ঘটনা কী?

প্রতিবেদন অনুসারে, গত ১ অক্টোবর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি অচলাবস্থা শুরু হওয়ার পর সব জন-যোগাযোগ স্থগিত করেছে নাসা। ফলে, নাসা সম্প্রতি ‘কোয়াসি-মুন’ বা ‘আধা-চাঁদ’ অথবা দ্বিতীয় চাঁদের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে বলে যে দাবি করা হচ্ছে, তার কোনও প্রমাণ নেই।

আসলে কী ঘটছে?
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি একটি নতুন মহাকাশীয় বস্তু আবিষ্কার করেছেন, যার নাম দেয়া হয়েছে '২০২৫ পিএন৭'। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, কয়েক দশক ধরে এটি পৃথিবীর পাশাপাশি সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে।

জানা গিয়েছে, প্রায় ৬০-১২০ ফুট ব্যাসের এই ক্ষুদ্র বস্তুটি একটি ‘আধা-চাঁদ’। ধ্রুপদী অর্থে এটি চাঁদ নয়, কারণ এটি মহাকর্ষীয়ভাবে পৃথিবীর সঙ্গে আবদ্ধ নয়।

কোয়াসি-মুন কী?
এটি হল গ্রহাণু, যা সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর মতো একই কক্ষপথে পড়ে। তারা একই স্রোতে ভাসমান দু'টি পৃথক নৌকার মতো। এই বস্তুগুলো একই কক্ষপথে বছরের পর বছর এমনকি কয়েক দশক ধরে অবস্থান করতে পারে এবং তারপর দূরে সরে যেতে পারে।

সাম্প্রতিক ঘটনার ক্ষেত্রে, '২০২৫ পিএন৭' প্রায় ৬০ বছর ধরে পৃথিবীর পাশাপাশি সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে এবং ২০৮৩ সাল পর্যন্ত তা জারি থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য পৃথিবীর কক্ষপথে থাকে না।

২০২৫ পিএন৭-এর ওপর সাম্প্রতিক এক গবেষণার সহ-লেখক ও গবেষক কার্লোস দে লা ফুয়েন্তে মার্কোসের মতে, মহাকাশ শিলাটি তার সবচেয়ে কাছের সময়ে পৃথিবীর ১ লাখ ৮৬ ০০০ মাইলের মধ্য দিয়ে যাবে।

এবিসি৭ নিউইয়র্কের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাসার তথ্যানুসারে, ২০২৫ পিএন৭ এবং পৃথিবীর মধ্যে গড় দূরত্ব ২ লাখ ৩৮ হাজার ৮৫৫ মাইল। মার্কোস এক ই-মেলে লিখেছেন, 'বর্তমানে উপলব্ধ টেলিস্কোপগুলি কেবল তখনই এটি সনাক্ত করতে পারে, যখন তা আমাদের গ্রহের কাছাকাছি আসে, যেমনটি এই গ্রীষ্মে হয়েছে। সৌরজগৎ বিস্ময়ে ভরা, তাই আমরা অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছি।'

পৃথিবী দ্বিতীয় চাঁদ না পেলেও, '২০২৫ পিএন৭'-এর আবিষ্কার মহাকাশ গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যা আমাদের সৌরজগতের গতিশীল প্রকৃতির ওপর আলোকপাত করে। সবশেষ এই সংযোজনের ফলে, এখন পৃথিবীর পাশাপাশি মহাকাশে ভ্রমণকারী আটটি কোয়াসি-মুন বা আধা-চাঁদের পরিচয় পাওয়া গেল।

আরও পড়ুন- বিশ্বের এই দেশে রয়েছে তিনটি রাজধানী, রয়েছে ক্রিকেটের সঙ্গে অন্তরের যোগ, জানেন?