আজকাল ওয়েবডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি আবারও খবরের শিরোনামে। ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসে আয়োজিত লাঞ্চ মিটিংয়ে জেলেনস্কি পরেছিলেন কালো রঙের সামরিক পোশাক, যা দেখে ট্রাম্প প্রকাশ্যেই প্রশংসা করেন। ক্যাবিনেট রুমে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে ট্রাম্প বলেন, “আমি মনে করি ওর জ্যাকেটটি সত্যিই সুন্দর—খুব স্টাইলিশ! আমি আশা করি সবাই সেটা লক্ষ্য করেছে। আমার সত্যিই পছন্দ হয়েছে।”
২০২২ সালে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রায় ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকে জেলেনস্কিকে প্রায় সবসময়ই সামরিক পোশাকে দেখা গেছে। তার এই পোশাক এখন তার প্রতীক হয়ে উঠেছে—যুদ্ধরত জাতির নেতা হিসেবে দৃঢ়তা ও সংহতির প্রতিচ্ছবি। তবে, ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি সামান্য পরিবর্তন এনেছেন। গত আগস্টে এক বৈঠকে তিনি পরেছিলেন কালো ফরমাল জ্যাকেট, শার্ট ও ট্রাউজার—যা তখনও ট্রাম্পের প্রশংসা কুড়িয়েছিল।
Trump gives Zelensky’s jacket a thumbs up
— RT (@RT_com)
‘Very stylish… I like it’
Zelensky, unsure of himself: ‘YEAH?’ https://t.co/F27PgzjISz pic.twitter.com/irWBkaQyViTweet by @RT_com
সাম্প্রতিক প্রেস কনফারেন্সে কনজারভেটিভ রিপোর্টার ব্রায়ান গ্লেন, যিনি ফেব্রুয়ারির এক বৈঠকে জেলেনস্কির পোশাক নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন, এবার তার সুর পাল্টে বলেন, “আজ আপনি দুর্দান্ত লাগছেন সেই স্যুটে।” সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্প হেসে বলেন, “আমি-ও ঠিক সেটাই বলেছি।”
তবে ফেব্রুয়ারির বৈঠকে পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। তখন জেলেনস্কি পরেছিলেন কালো পলো টি-শার্ট ও সামরিক স্টাইলের ট্রাউজার, যা দেখে ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টারা অসন্তুষ্ট হন। ট্রাম্প তখন কটাক্ষ করে বলেছিলেন, “আজ তো বেশ সাজগোজ করা হয়েছে!”—যা অনেকের কাছে ঠাট্টার সুরে শোনা গিয়েছিল।
জেলেনস্কির সামরিক পোশাকের পেছনে রয়েছে গভীর প্রতীকী বার্তা। তিনি একাধিকবার বলেছেন যে, যতদিন না ইউক্রেনে শান্তি ফিরে আসে, ততদিন তিনি সামরিক পোশাকই পরবেন। তার এই কালো জ্যাকেটটি ডিজাইন করেছেন কিয়েভ-ভিত্তিক ডিজাইনার ভিক্টর আনিসিমভ, যা তিনি প্রথম পরেছিলেন পোপ ফ্রান্সিসের শেষকৃত্যে এপ্রিল মাসে। এরপর তিনি একই পোশাক পরে দেখা দেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এবং নেদারল্যান্ডসের হেগে অনুষ্ঠিত ন্যাটো সম্মেলনে।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে সাংসদদের সরকারি আবাসনে ভয়াবহ আগুন, রইল ভিডিও
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, জেলেনস্কির পোশাক শুধুমাত্র ফ্যাশনের অংশ নয়, এটি এক ধরনের প্রতিরোধের প্রতীক। তার সামরিক পোশাক ইউক্রেনের যুদ্ধকালীন মানসিকতার প্রতিফলন—এক নেতা, যিনি শান্তি ও সার্বভৌমত্বের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে, ট্রাম্পের প্রশংসা ইঙ্গিত দেয় যে, দুই নেতার সম্পর্ক ক্রমেই কিছুটা মসৃণ হচ্ছে, যদিও রাজনৈতিক অবস্থান ভিন্ন।
হোয়াইট হাউসের সেই বৈঠক শুধু কূটনৈতিক আলোচনার ক্ষেত্রেই নয়, বরং পোশাকের মাধ্যমে এক অনন্য রাজনৈতিক বার্তা দিতেও সফল হয়েছে।
