বয়স যতই বাড়ুক, ঘন-লম্বা চুলের চাহিদা থাকে সকলেরই। কিন্তু সেই স্বপ্ন ক'জনেরই বা পূরণ হয়। বিশেষ করে বর্তমানে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, দূষণ, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা সহ নানা কারণে চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন আট থেকে আশি। সমস্যার সমাধানে অনেকেই নামীদামি প্রসাধনী ব্যবহার করেন। কিন্তু তাতেও যে সবসময় সুফল মেলে না। বদলে ভরসা রাখতে পারেন একটি চেনা মশলার ওপর। চুল ভাল রাখতে উপকারী লবঙ্গ। যে কোনও খাবারের স্বাদ মেলাতে এই মশলার জুড়ি মেলা ভার। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর লবঙ্গ স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়। শুধু লবঙ্গ নয়, লবঙ্গ ভেজানো জল খাওয়ারও উপকারিতা প্রচুর। আর এই জলের গুণেই ফিরতে পারে চুলের জৌলুস। 

লবঙ্গের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য মাথার ত্বককে পরিষ্কার রাখে, চুলের বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এমন সংক্রমণ থেকে মুক্তি দিতে সহায়তা করে। এতে চুলের গোড়া মজবুত হয়। দ্রুত বেড়ে ওঠে ঘন চুল। লবঙ্গের অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ফ্রি-র্যাডিক্যালের সঙ্গে লড়াই করে এবং ত্বককে বয়সের প্রভাব থেকে রক্ষা করে। প্রতিদিন লবঙ্গের জল লাগালে মুখে বলিরেখা দেরিতে আসে এবং ত্বক দেখায় তরুণ ও উজ্জ্বল।

কীভাবে ব্যবহার করবেন

একটি প্যানে দু’গ্লাস জল নিয়ে তাতে দিন এক চামচ লবঙ্গ। ১০-১৫ মিনিট ফোটাতে থাকুন। খানিকক্ষণ বাদে দেখবেন জলের রং সোনালি হয়ে গিয়েছে। এবার সেই জল ছেঁকে নিয়ে দিন ২ চামচ গোলাপ জল, ১ চামচ অ্যালোভেরা জেল, ৬ থেকে ৮ ড্রপ টি ট্রি এসেনসিয়াল অয়েল। সমস্ত মিশ্রণ একটি স্প্রে বোতলে ভরে ভাল করে নাড়িয়ে নিন। দিনে ২-৩ বার পরিষ্কার ত্বক ও স্ক্যাল্পে এই লবঙ্গের জল স্প্রে করুন। কয়েকদিনের মধ্যেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন। মাথার ত্বক পরিষ্কার করে চুলের গোড়ায় ভাল করে স্প্রে করুন এই লবঙ্গের জল। মিনিট দশেক রেখে শ্যাম্পু করে নিন। চাইলে সারা রাতও রেখে দিতে পারেন। লবঙ্গের নিজস্ব তেল রয়েছে। তাই চুল কিন্তু তেলতেলে হয়ে যেতে পারে।


ত্বকের যত্নে লবঙ্গের জল ব্যবহার করার আগে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করাও জরুরি। লবঙ্গের জল কিছুটা ঝাঁঝালো প্রকৃতির হয়, তাই আগে অবশ্যই প্যাচ টেস্ট করে নিন। অর্থাৎ স্পর্শকাতর অংশে লাগানোর আগে কনুইতে লাগিয়ে দেখে নিতে পারেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়সজনিত চুলের সমস্যা ঠেকাতে বাইরে থেকে যত্ন নেওয়া যতটা জরুরি, ভেতর থেকে পুষ্টি জোগানোও ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। তাই অবশ্যই খাওয়াদাওয়ার ওপর নজর দিন। সঠিক জীবনযাপন ত্বক-চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।