আজকাল ওয়েবডেস্ক: আলোর রোশনাই, বাজি-পটকার কলরব আর দেদার আড্ডা। দীপাবলি মানেই তো এই। তবে এই সবকিছুর সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে আরও একটি বিষয়- ভূরিভোজ। লুচি, ছোলার ডাল, পাঁঠার মাংস, পোলাও, বিরিয়ানি থেকে শুরু করে লাড্ডু, বরফি, রকমারি মিষ্টি- তালিকাটা বেশ লম্বা। উৎসবের দিনে কবজি ডুবিয়ে খেতে ভালবাসেন না, এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া ভার। কিন্তু এই রসনাতৃপ্তির পরেই অনেক সময়ে হানা দেয় অস্বস্তি। অম্বল, পেট ফাঁপা, বদহজমের মতো সমস্যায় উৎসবের আনন্দটাই মাটি হয়ে যায়।
তা হলে উপায়? পুষ্টিবিদ এবং চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কয়েকটি সহজ নিয়ম মেনে চললেই ভূরিভোজের পরেও থাকা যায় একেবারে চনমনে। এর জন্য উৎসবের খাওয়া-দাওয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন শুধু একটু সচেতনতার।
ভোজের আগে প্রস্তুতি
অনেকেই ভাবেন, উৎসবের দিন যেহেতু ভারী খাওয়া হবে, তাই সকাল থেকে উপোস করে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকার পর একবারে অনেকটা মশলাদার বা তৈলাক্ত খাবার খেলে হজমের সমস্যা অবধারিত। তাই দিনের শুরুটা করুন হালকা কোনও খাবার দিয়ে। সারা দিন ধরে অল্প অল্প করে জল পান করতে থাকুন। এতে শরীর সতেজ থাকবে এবং হজমশক্তিও ঠিকমতো কাজ করবে।
খাওয়ার পদ্ধতিতেই আসল ম্যাজিক-
মূল পর্ব অর্থাৎ ভোজের সময়ে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।
ধীরে সুস্থে খান: তাড়াহুড়ো করে না খেয়ে, সময় নিয়ে ধীরে ধীরে চিবিয়ে খান। এতে খাবার দ্রুত হজম হয় এবং মস্তিষ্কের কাছে পেট ভরে যাওয়ার সঙ্কেতও ঠিক সময়ে পৌঁছয়। ফলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেয়ে ফেলার আশঙ্কা কমে।
পরিমিতি বোধ: প্লেটে সব খাবার একসঙ্গে না নিয়ে অল্প পরিমাণে শুরু করুন। একবারে অনেকটা আমিষ বা ভাজাভুজি না নিয়ে সঙ্গে স্যালাড, রায়তা বা সব্জি রাখুন। এতে আহারে ভারসাম্য বজায় থাকে।
সঠিক পানীয় নির্বাচন: ভোজের সঙ্গে নরম পানীয় বা অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন। বদলে জল, ঘোল বা লেবুর শরবত পান করা যেতে পারে।

ভোজের পরে কী করণীয়?
খাওয়া শেষ করেই বিছানায় গা এলিয়ে দেওয়া অত্যন্ত খারাপ অভ্যাস। খাওয়ার পর অন্তত আধঘণ্টা সোজা হয়ে বসে থাকুন। এরপর ১০-১৫ মিনিটের জন্য হালকা পায়চারি করতে পারেন। এতে খাবার হজম হতে সুবিধা হয়। অস্বস্তি বোধ করলে এক গ্লাস উষ্ণ জলে অল্প লেবুর রস বা জোয়ান মিশিয়ে পান করতে পারেন। পরের দিন সকালের খাবার একেবারে হালকা রাখুন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, উৎসব মানেই উদযাপনের আতিশয্য নয়। বরং একটু পরিকল্পনা করে চললে রসনাতৃপ্তিও হবে, আবার শরীরও থাকবে ঝরঝরে। তাই এই দীপাবলিতে ভূরিভোজ হোক নিয়ম মেনে, যাতে আলোর উৎসবের আনন্দ এতটুকুও ফিকে না হয়।
