আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভাসুরের সঙ্গে গড়ে ওঠা অবৈধ প্রেমের সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় স্বামীকে খুন করার চেষ্টা অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে। সোমবার কালীপুজোর সকালে ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ থানার অন্তর্গত রতনপুর-তারাপুরপাড়া এলাকায়।
স্বামীকে খুন করার চেষ্টার অভিযোগে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত মহিলা আশরিন খাতুনকে গ্রেপ্তার করে জঙ্গিপুর আদালতে পেশ করেছে। জানা গিয়েছে, ওই মহিলার স্বামী এজাজ আহমেদ( ২৫) বর্তমানে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তির ঘাড়, গলা, মাথা এবং দেহের আরও কিছু অংশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপের চিহ্ন রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এক বছর আগে লালপুর গ্রামের বাসিন্দা আশরিন খাতুনের সঙ্গে রতনপুর-তারাপুরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা এজাজ আহমেদের ঘটা করে বিয়ে হয়।
বিয়ের আগেও পেশায় মাছ বিক্রেতা এজাজের সঙ্গে আশরিনের দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুই পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নেওয়ায় সকলের উপস্থিতিতে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান করে তাদের বিয়ে হয়েছিল।
এজাজের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে এজাজ এবং আশরিন একই ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোর পাঁচটা নাগাদ হঠাৎ করেই এজাজের মা মেহরা বিবি ঘর থেকে ছেলের চিৎকার শুনতে পান। প্রথমে পরিবারের লোকের মনে করেছিলেন বাড়িতে ডাকাত পড়েছে।
আরও পড়ুন: বাসন্তী হাইওয়েতে বাইক দুর্ঘটনা, প্রাণ গেল দু’জনের
সেই কারণে তারাও আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার করতে শুরু করেন। সেই সময় রক্তাক্ত অবস্থায় এজাজ ঘর থেকে বেরিয়ে এলে আশরিন তাকে ধাক্কা মেরে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। পরে এজাজের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ আশরিনকে গ্রেপ্তার করে।
থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আহত এজাজের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। বর্তমানে তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এজাজের এক দাদার সঙ্গে অভিযুক্ত ওই মহিলার অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।
এজাজ এই সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় এজাজের স্ত্রী তাঁকে খুন করার চেষ্টা করেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় এজাজকে প্রথমে অনুপনগর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
কিন্তু সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় জঙ্গিপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং পরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয়।
এজাজের মা মেহেরা বিবি বলেন, ‘আমার ছেলে এবং বৌমার মধ্যে কোনও গন্ডগোল ছিল বলে আমরা কেউই জানতাম না। ভোরবেলা ছেলের ঘর থেকে চিৎকার শুনতে পেয়ে প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম বাড়িতে চোর অথবা ডাকাত হানা দিয়েছে। সেই কারণে আমরাও সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে থাকি।’
তিনি বলেন, ‘সেই সময় রক্তাক্ত অবস্থায় আমার ছেলে ঘর থেকে বেরিয়ে এলে আমার বউমা তাকে ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। কিন্তু কী কারণে আমার বউমা ছেলের ওপর হামলা চালানো হয়েছে তা আমরা জানিনা।’
এজাজের বাবা রাজিবুল্লা শেখের অভিযোগ, ‘আমার বৌমা ছেলের ওপর একটি ধারালো হাসুয়া দিয়ে হামলা চালিয়েছে। ঘটনার সময় আমার ছেলে নিজের ঘরেই ঘুমিয়ে ছিল। কী কারণে এই হামলা তা আমরা বুঝতে পারছি না। আমরা বৌমার কঠোর শাস্তির দাবি করছি।’
