আজকাল ওয়েবডেস্ক: ‘বিরা ৯১’ বিয়ার ব্র্যান্ডের মূল কোম্পানির একটি ছোট আইনি নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের ফলে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে এর সাম্রাজ্য। এই সিদ্ধান্তের ফলে এই সংস্থার জন্য নিয়ন্ত্রক এবং পরিচালনাগত বাধার সৃষ্টি হয়েছে। সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা দ্য ইকোনমিক টাইমসের মতে, বিরা ৯১-এর প্রস্তুতকারী সংস্থা বি৯ বেভারেজেসের ২৫০ জনেরও বেশি কর্মী, প্রশাসনিক সমস্যা, বিলম্বিত বেতন এবং বকেয়া বিক্রেতাদের বিলের উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠাতা অঙ্কুর জৈনকে অপসারণের জন্য আবেদন করেছেন।

২০২৩-২৪ সালে কোম্পানিটি ‘প্রাইভেট’ শব্দটি সরিয়ে তার আইনি নাম B9 Beverages Private Limited থেকে B9 Beverages Limited-এ পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর ফলেই সমস্যার শুরু। এই পরিবর্তনের পরিণতি ছিল সুদূরপ্রসারী।

বিনিয়োগকারী ডি মুথুকৃষ্ণন এক্স-এ একটি পোস্টে লিখেছেন, “বিরা ৯১ গত দশকের সফল স্টার্ট আপগুলির মধ্যে একটি ছিল। এটি একটি জনপ্রিয় ক্রাফট বিয়ার ব্র্যান্ড। সংস্থার বৃদ্ধি হচ্ছিল যথেষ্ট ভালভাবে। কিন্তু বাস্তব অনেক কঠিন, কল্পনার চেয়েও অদ্ভুত। একটি পদ্ধতিগত ভুলের ফলে পুরো সংস্থার পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে এবং এখন সংস্থার কর্মীদের চাপে প্রতিষ্ঠাতা পদত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছেন।”

তিনি আরও বলেন, “এরপরই সব কিছু ভেঙে পড়ে। সমস্ত রাজ্য তৎক্ষণাৎ বিরা ৯১ বিক্রি নিষিদ্ধ করে, নতুন নামটিকে একটি ভিন্ন সত্তা হিসেবে বিবেচনা করে। তারা প্রতিটি ভ্যারিয়েন্টের জন্য নতুন আইনি অনুমোদন, লেবেল অনুমোদন, পণ্য রেজস্ট্রেশন এবং নতুন লাইসেন্স দাবি করে। এর ফলে একের পর এক সমস্যা দেখা দেয়।”

মুথুকৃষ্ণন ডিয়াজিও ইন্ডিয়ার সঙ্গে তুলনা করে উল্লেখ করেন যে, একই ধরণের বিঘ্ন এড়াতে কোম্পানিটি ডিয়াজিও ইন্ডিয়া লিমিটেডে স্থানান্তরিত না হয়ে ইউনাইটেড স্পিরিটস নামটি ধরে রেখেছে। 

আরও পড়ুন: এ কেমন এসআইআর? ভোটার তালিকায় চোখ বোলাতেই চক্ষু ছানাবড়া, বিহারে জলজ্যান্ত মানুষগুলোর নামের পাশে লেখা 'মৃত!

আমলাতান্ত্রিক বাধাগুলি ব্যয়বহুল ছিল। নাম পরিবর্তন সামান্য মনে হলেও, এটি কয়েক মাস ধরে বিক্রয় বন্ধ করে দেয়। যার ফলে নতুন পণ্য লেবেল রেজিস্ট্রশনের সময় B9 Beverages প্রায় ৮০ কোটি টাকার ইনভেন্টরি বাতিল করতে বাধ্য হয়। সরকারি সম্মতি বিলম্বের ফলে ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে বিক্রয় ২২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। লোকসান ৬৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে সংস্থাটি ৭৪৮ কোটি টাকার নিট লোকসানের কথা ঘোষণা করেছে। যা তার মোট রাজস্ব ৬৩৮ কোটি টাকারও বেশি।

?ref_src=twsrc%5Etfw">October 10, 2025

ইটি জানিয়েছে, বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত কর্তারা জানিয়েছেন যে জুলাই মাসে সংস্থার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সম্ভাব্য বিনিয়োগকারী ব্ল্যাকরক, যারা প্রমোটার গ্রুপে ৫০০ কোটি টাকা ঋণ বিনিয়োগের জন্য আলোচনা করছিল, পরে তারা তাদের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেয় বলে জানা গিয়েছে।

কর্মীদের আবেদনের জবাবে জৈন বলেন, আবেদনকারী বা শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে কোম্পানিটি কোনও আনুষ্ঠানিক আবেদন পায়নি। তিনি কর্মীদের বেতন বকেয়া থাকার কথাও স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “এটা ঠিক যে আমাদের কর্মীদের বেতন বকেয়া রয়েছে। কর্মীদের স্তরের উপর নির্ভর করে এই বকেয়ার পরিমাণ তিন থেকে পাঁচ মাসের। এর মধ্যে কর বকেয়া পরিশোধে বিলম্বও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।”

নাম পরিবর্তন, মদের নীতিতে পরিবর্তন এবং তহবিল সংগ্রহে বিলম্বের কারণে ‘উল্লেখযোগ্য ব্যবসায়িক ব্যাঘাত’র কারণে গত ১৮ মাসকে বিশেষভাবে চ্যালেঞ্জিং বলে বর্ণনা করেছেন জৈন। তিনি বলেন, “সংস্থাটি কার্যক্রম পুনর্গঠন, নির্বাচিত রাজ্যগুলিতে মনোনিবেশ এবং মার্জিন উন্নত করে এই সমস্যাগুলি হ্রাস করার চেষ্টা করেছে।“