আজকাল ওয়েবডেস্ক: শেয়ার বাজারের বিনিয়োগ করে অনেক মানুষ কোটিপতি হয়েছেন। আবার অনেকে খুইয়েছেন সর্বস্ব। সোনা এবং রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করেও ধনী হয়েছেন অনেকেই। কিন্তু, বিটকয়েন যা করেছে তা অন্য কোনও সম্পদ করতে পারেনি। গত ১৫ বছরে, এটি দু’টাকার বিনিয়োগকে এক কোটি টাকারও বেশি সম্পদে পরিণত করেছে। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। আপনি যদি ২০০৯ সালে বিটকয়েনে মাত্র ২ টাকা বিনিয়োগ করতেন, তাহলে আজ আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১,০০,৩৬,৪০০ টাকা থাকত। শুক্রবার, বিটকয়েন ক্রিপ্টো জগতে একটি নতুন রেকর্ড তৈরি করেছে। বিশ্বের প্রাচীনতম এবং সর্বাধিক জনপ্রিয় ডিজিটাল মুদ্রা বিটকয়েন তার সর্বোচ্চ দর ১১৬,৯০৬.২২ ডলার ছুঁয়েছে অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রতি বিটকয়েনের মূল্য ১,০০,৩৬,৪০০ টাকা।
বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েন। বিশ্বের অনেক দেশই ডিজিটাল লেনদেন বিটকয়েনকে মান্যতা দিয়েছে। ২০০৯ সালে এর আত্মপ্রকাশ। সেই সময় কেউ যদি এক হাজার টাকার বিটকয়েন কিনে রাখতেন আজ তার মূল্য দাঁড়াতো আড়াই হাজার কোটি টাকা। কোন হিসাবে এত লাভ আসুন দেখে নেওয়া যাক।
২০০৯ সালে যখন বিটকয়েন প্রথম চালু হয়, তখন এর দাম ছিল মাত্র ০.০৪৮৬৫ ডলার। সেই সময়ে এক ডলারের মূল্য ছিল প্রায় ৪৬ টাকা, অর্থাৎ মাত্র ২.২৫ টাকায় একটি বিটকয়েন পাওয়া যেত। আজ, সেই একটি বিটকয়েনের মূল্য ৪৪.৮০ লক্ষ গুণ বেড়ে এক কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। যদি আমরা শতাংশের কথা বলি, তাহলে প্রায় ৪৪,৬০,০০,০০০% রিটার্ন… অন্য কোনও সম্পদ এত রিটার্ন দিতে পারেনি।
![]()
২০১০ সালে একটি বিটকয়েনের দাম ছিল ০.০৮ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় ৩.৩৮ টাকা। সেই সময় এক ডলারের দাম ছিল ৪২ টাকা। ওই সময় এক হাজার টাকার বিটকয়েন কেউ কিনতে চাইলে তিনি পেতেন ২৯৫.৮৫টি বিটকয়েন। ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে একটি বিটকয়েনের মূল্য ৯৮০০০ ডলার। অর্থাৎ প্রায় ৮৩ লক্ষ টাকা। ভারতীয় মুদ্রায় এক ডলারের দাম ৮৪.৪৫ টাকা। সেই হিসাবে ২০১০ সালে কিনে রাখা এক হাজার টাকার বিটকয়েনের দাম ২০২৪ সালে দাঁড়িয়েছে ২৪৪৭ কোটি টাকায়। প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ১৪ বছরে আড়াই হাজার গুণ রিটার্ন। ভালো আয়ের আশায় অনেকেই শেয়ার মার্কেট, সোনা এবং আবাসন শিল্পে নিজের টাকা লগ্নি করে থাকেন। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রই ১৪ বছরে এত টাকা রিটার্ন দেবে বলে মনে হয় না।
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্ক এফডি এবং কর্পোরেট এফডির মধ্যে পার্থক্য কী? কোনটি থেকে মিলবে বেশি রিটার্ন?
ভোটে জিতে আমেরিকার মসনদে ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিরে আসার পর থেকেই দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে বিটকয়েনের মূল্য। আগামী দিনে একটি বিটকয়েনের মূল্য আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ২০১০ সালে দু’টি পিৎজা কিনতে প্রথম বিটকয়েন ব্যবহার করা হয়েছিল। ব্যবহার করা হয়েছিল প্রায় ১০ হাজার বিটকয়েন। ২০১৭ সালে একটি বিটকয়েনের দাম ছাড়িয়য়ে যায় ২০ হাজার ডলার। ২০২০-এর পর থেকে বিভিন্ন সংস্থা তাদের আর্থিক লেনদেনে বিটকয়েন ব্যবহার করা শুরু করে। টেসলার মতো সংস্থায় বিটকয়েনে লগ্নি করতে শুরু করে।
আরও পড়ুন: ফেসবুক ফলোয়ার থাকলেই ঘরে বসে আয়! ফেসবুক থেকে উপার্জনের মারপ্যাঁচ জেনে নিন
বিটকয়েনে যাঁরা টাকা ঢেলে রেখেছেন তাঁরা সবসময় নিশ্চিন্ত থাকতে পারেননি। অস্থির বাজারের কারণে মাঝেমধ্যেই এর দামে বিপুল পতন লক্ষ করা গিয়েছে। কিন্তু যাঁরা ধৈর্য্য ধরে রেখেছিলেন তাঁদের বিপুল লক্ষ্মীলাভ হয়েছে। ভারতে এর ব্যবহারের নিয়ম নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ক্রিপ্টোকারেন্সির উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। অপর দিকে, অর্থমন্ত্রক ক্রিপ্টোকারেন্সি থেকে লাভের উপর ৩০ শতাংশ কর চাপিয়েছে। নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সি বিক্রি করলেও এক শতাংশ টিডিএস কাটা যাবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রক।
