আজকাল ওয়েবডেস্ক:  শেয়ারবাজারে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আদানি গ্রুপ। কারণ, মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের আনা অভিযোগকে খারিজ করেছে ভারতের বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া। দীর্ঘদিন ধরে চলা ফান্ড রাউটিং ও লেনদেন সংক্রান্ত অভিযোগগুলোকে ভিত্তিহীন বলায় বিনিয়োগকারীদের বড় ধরনের স্বস্তি মিলেছে। এর ফলেই হঠাৎ করেই আদানি গ্রুপের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারে ব্যাপক উত্থান দেখা যায়।


বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, “কিছুটা প্রফিট-বুকিং হয়েছে, তবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নজরে রাখা জরুরি। প্রথমত, দীর্ঘ সময় পর ইতিবাচক বার্তা পাচ্ছি যে বিদ্যুৎ ট্যারিফ বা মূল্য সংক্রান্ত চাপ সামনের দিনে কিছুটা হলেও কমতে পারে।” তিনি আরও বলেন, “দ্বিতীয়ত, আমরা এখন আয়ের সিজনে প্রবেশ করছি। পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুদের হার কমানো হয়েছে। এই দুটি বিষয় মিলিয়ে কর্পোরেট ফলাফলের ক্ষেত্রে আরও ভালো সংখ্যা সামনে আসতে পারে।”


অক্টোবর মাস বাজারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। উৎসবের আমেজ ও সামগ্রিক পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের মনোবল বাড়াবে। কোম্পানির কাজ আরও ইতিবাচক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, জিএসটি-সম্পর্কিত দামে ছাড় সরাসরি গ্রাহকের কাছে পৌঁছবে, বর্ষা ভালো হয়েছে এবং এফএমসিজি ও ভোগ্যপণ্যভিত্তিক কোম্পানিগুলির বিক্রয় ভলিউমও বাড়ছে।

আরও পড়ুন: জঙ্গিদের হাতেই এবার বেআব্রু পাকিস্তান, ভাইরাল ভিডিও ঘিরে সর্বত্র শোরগোল


এই ইতিবাচক পরিবেশ কোম্পানিগুলিকে আরও বিনিয়োগ  করতে উৎসাহিত করবে। ফলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও দৃঢ় হবে এবং বাজারে টেকসই উত্থান বজায় থাকতে পারে। আসলে, গত কয়েক মাস ধরে ভারতের শেয়ারবাজার নানা ধরণের চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের অনিশ্চয়তা, বিশ্বের সুদের হার বৃদ্ধির ভয় এবং হিন্ডেনবার্গের অভিযোগের কারণে আদানি গ্রুপের মতো বড় কর্পোরেট হাউজগুলির শেয়ার ব্যাপক চাপের মধ্যে ছিল। কিন্তু সেবির রায় যেন নতুন দিশা দেখাল। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা আবারও আদানি গ্রুপটির শেয়ারে ভরসা রাখতে শুরু করেছেন।


বিশ্লেষকদের মতে, আদানি গ্রুপের শেয়ারের এই উত্থান গোটা বাজারকেই চাঙ্গা করে তুলতে পারে। কারণ, এটি শুধু একটি কোম্পানির ব্যাপার নয়, বরং একটি সংকেত—যে এই সংস্থা স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সচেষ্ট এবং বাজারে গুজবের প্রভাব থেকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের রক্ষা করছে।
আগামী দিনে ভারতীয় বাজারের সামনে আরও কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুদ কমানোর সিদ্ধান্তের কারণে বৈদেশিক মূলধন বাড়ার আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, দেশে ভোগ্যপণ্যের খরচ উৎসবমুখর সিজনে বাড়বে বলেই ধারণা। কৃষিক্ষেত্রে ভালো বর্ষার প্রভাবও গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে।


সব মিলিয়ে সেপ্টেম্বরের শেষ ভাগ থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত সময়কাল ভারতীয় শেয়ারবাজারের জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, উৎসবের সিজনে শুধু আদানি গ্রুপ নয়, বরং গোটা বাজারেই একটি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি হবে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন খাত, ব্যাঙ্কিং এবং রিয়েল এস্টেটেও নতুন করে উজ্জীবন আসতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতি দেখে বিনিয়োগকারীরা আশাবাদী যে বাজারের এই উত্থান সাময়িক নয়, বরং একটি দীর্ঘমেয়াদী ইতিবাচক ধারা শুরু করার পথ খুলে দিতে পারে।