মালয়ালম র‍্যাপার হিরণ দাস মুরালির (মঞ্চের নাম বেদান) বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন এক মহিলা। সোমবার কেরালা হাইকোর্ট সেই অভিযোগকারিণীকে র‍্যাপারের আগাম জামিনের আবেদনের ক্ষেত্রে একটি পক্ষ হিসাবে যুক্ত করার অনুমতি দিয়েছে।

কোচি সিটি পুলিশ এক তরুণী চিকিৎসকের অভিযোগের ভিত্তিতে বেদানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করার পর তিনি দু’সপ্তাহের বেশি সময় ধরে পলাতক রয়েছেন বলে অভিযোগ।

হাইকোর্ট যখন তাঁর আগাম জামিনের আবেদন শুনছিল, তখন অভিযোগকারী মহিলার পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে, বেদান একজন অভ্যাসগত অপরাধী (habitual offender) হিসাবে ঘোষিত হোক।

অভিযোগকারী মহিলার আইনজীবী জানান, ধর্ষণের এই মামলার পাশাপাশি বেদানের বিরুদ্ধে আরও দু'টি ধর্ষণের অভিযোগ এবং এনডিপিএস আইনে দু’টি মাদক মামলা রয়েছে। ২০২১ সালেও তাঁর বিরুদ্ধে যৌন  হেনস্থারও অভিযোগ উঠেছিল, যার জন্য তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছিলেন। এছাড়াও, চিতাবাঘের দাঁতের তৈরি সন্দেহভাজন একটি লকেট পরার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনে একটি মামলাও চলছে।

গত সপ্তাহে কোচি সিটি পুলিশ ৩১ বছর বয়সি বেদানের বিরুদ্ধে লুকআউট নোটিশ জারি করেছে। বেদান ত্রিশূরের বাসিন্দা এবং কেরালার র‍্যাপ জগতে এক জন জনপ্রিয় কণ্ঠস্বর হিসেবে পরিচিত। চলতি বছরের এপ্রিলে মাদক মামলায় গ্রেফতারের পর তিনি শিরোনামে আসেন। পরে চিতাবাঘের দাঁতের সন্দেহভাজন লকেট রাখার অভিযোগে আবার গ্রেফতার হওয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে—অনেকেই আবার বন দফতরের ‘অতিরিক্ত উৎসাহ’-এর জন্য তাদের দোষারোপ করেন।

তবে পরে পরিস্থিতি বেদানের পক্ষে ঘুরে যায়, যখন তিনি মাদক ব্যবহার নিয়ে খারাপ প্রভাব ফেলার জন্য তাঁর তরুণ ভক্তদের কাছে ক্ষমা চান এবং রাজ্য সরকার তাঁকে প্রোমোট করতে শুরু করে। চিতাবাঘের দাঁতের মামলার পর বেদানের প্রতি সহানুভূতির ঢেউ উঠে, এবং তাঁর শো-তে ভিড় বাড়তে থাকে। শাসক দল সিপিআই(এম) বেদানের পাশে দাঁড়ায়। তাদের অভিযোগ যে, শিল্পীর বিরুদ্ধে যাবতীয় সমালোচনার পিছনে আছে বিজেপি-বিরোধী মতকে দমন করার চেষ্টা। কেরালা সরকার ক্ষমতায় দশ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে তাঁকে পারফর্ম করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। ধর্ষণের মামলার মধ্যেই বেদানের একাধিক শো-র পরিকল্পনা ছিল, যা পরে বাতিল হয়ে যায়।

জুন মাসে কালিকূট বিশ্ববিদ্যালয় মালায়ালম ভাষা ও সাহিত্যের স্নাতক পর্যায়ের পাঠ্যক্রমে বেদানের গান অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়। বেদানের একটি গানের সঙ্গে মাইকেল জ্যাকসনের ‘দে  ডোন্ট কেয়ার আবাউট আস’-এর তুলনামূলক পাঠের পরিকল্পনা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিজেপি রাজ্যপালের কাছে দরখাস্ত করে, যাতে বেদানের গানটি পাঠ্যসূচি থেকে প্রত্যাহার করা হয়।