২০১৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল আনন্দ এল রাইয়ের ‘রাঞ্ঝনা’। ওই ছবির মাধ্যমেই বলিউডের দর্শকের কাছে পরিচিতি পেয়েছিলেন দক্ষিণী তারকা ধনুষ।ছবিতে ধনুষের বিপরীতে দেখা গিয়েছিল বলিউড অভিনেত্রী সোনম কাপুরকে। বারাণসী ও দিল্লিতে শুট করা এই ছবি বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল দর্শকের মধ্যেও। তবে সেই ছবিতে দর্শকদের হৃদয় বিদীর্ণ করে দিয়ে মারা যায় ধনুশের চরিত্র ‘কুন্দন’। শেষ দৃশ্যের সেই ‘অব শালা কৌন…’ সংলাপ আজও গাঁথা আছে সিনেপ্রেমীদের মনে। তবে সেই ঐতিহাসিক ক্লাইম্যাক্সই এবার বদলে গেল! কৃত্তিম মেধা অর্থাৎ এআই (AI)-এর সাহায্যে তৈরি করা নতুন ভার্সনে দেখা যাচ্ছে, কুন্দন মারা যাচ্ছে না—চোখ খুলে জেগে উঠছে। আর এই পরিবর্তনে যারপরনাই তীব্র ক্ষুব্ধ ধনুষ!
একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে অভিনেতার তরফে। যেখানে স্পষ্ট ভাষায় লেখা হয়েছে: “ এ ছবির আত্মাকে খুন করা হয়েছে!”
 
 ‘রাঞ্ঝনা’র এআই-অল্টার্ড ভার্সন দেখে নিজের অসন্তোষ গোপন রাখার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেননি ধনুষ। এক অফিশিয়াল বিবৃতিতে তিনি বলেন—
‘রাঞ্ঝনা’-এর এআই-পরিবর্তিত ক্লাইম্যাক্স আমাকে সম্পূর্ণভাবে বিচলিত করেছে। এই বিকল্প সমাপ্তি ছবির আত্মাকেই কেড়ে নিয়েছে। আমি স্পষ্ট আপত্তি জানিয়েওছিলাম, তবু ওরা এগিয়ে গিয়েছে।” তিনি আরও যোগ করেন— “এটা সেই ছবি নয়, যেটাতে আমি ১২ বছর আগে কাজ করেছিলাম। চলচ্চিত্র বা কনটেন্টে এআই ব্যবহারের এই প্রবণতা শিল্প ও শিল্পীদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। এটা সিনেমার ঐতিহ্য এবং গল্প বলার নির্ভরযোগ্যতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দেয়। আমি চাই, ভবিষ্যতে এমন কাজ আটকাতে কঠোর নিয়ম তৈরি হোক।”
পরিচালক আনন্দ এল. রাই-ও সমান হতাশ। ‘রাঞ্ঝনা’ পরিচালক আনন্দ এল. রাই-ও এর আগে একইভাবে এআই দিয়ে ছবির ক্লাইম্যাক্স বদলানো নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তাঁর মতে, “একটা সিনেমার আত্মা থাকে গল্পে, এআই দিয়ে সেই মেজাজটাই নষ্ট হয়ে গেল।”
সোশ্যাল মিডিয়ার বাসিন্দারাও প্রতিক্রিয়া জানাতে শুরু করেছেন। ধনুষের পোস্টে কেউ কেউ সমর্থন করেছেন, আবার কেউ করেছেন কটাক্ষ।
 
 একজন লিখেছেন—
“এআই দারুণ হতে পারে, কিন্তু একটা ক্লাসিক সিনেমার আত্মা বদলে দেওয়া মানে সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া। ধনুষের এই প্রতিবাদ সময়োপযোগী।”
তবে অন্য এক নেটিজেন তীর্যক মন্তব্য করেন— “তোমার সিনেমাপ্রীতি তাহলে কোথায় গেল যখন তুমি নিজের ছবির নায়িকাকে ভিডিও ব্যবহারের জন্য আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলে? এটা আসলে টাকা বা অনুমতি না দেওয়ার ব্যাপার, সিনেমার ভালবাসা নয়।”
একজন বলেন— “আমি জানি মূল সিনেমায় কী হয়েছিল। নতুন ভার্সন একটা ‘হিলিং’ ছিল। কুন্দনের জেগে ওঠা দেখে মনের শান্তি পেলাম। তবে হ্যাঁ, এআই ভাল নয়।”
