সাতেপাঁচে থাকেন না তিনি। কিন্তু এবারে আচমকা বিতর্কের ঝড় তুললেন গায়ক লাকি আলি! প্রবীণ গীতিকার জাভেদ আখতারের পুরনো একটি ভিডিও ঘিরে ফের বিতর্ক ছড়াতেই মুখ খুললেন গায়ক। অভিযোগ, সেই ভিডিওতে জাভেদ আখতার হিন্দু–মুসলিম সম্পর্ক নিয়ে একটি মন্তব্য করেছিলেন। সেই বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে লাকি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেন, “জাভেদ আখতারের মতো হবেন না। তিনি কখনও মৌলিক ছিলেন না, আর তিনি একেবারে কুৎসিত।”

 

 

তবে এর খানিকক্ষণ পরেই নিজের বক্তব্যে ব্যাখ্যা দেন লাকি আলি। তিনি জানান, তাঁর মন্তব্য জাভেদের চেহারা নিয়ে নয়, বরং তাঁর ‘অহংকার’ নিয়ে। তাঁর ভাষায়, “আমি বলতে চেয়েছিলাম অহংকার কুৎসিত জিনিস। আমার বক্তব্য ভুলভাবে গিয়েছিল। দানবদেরও হয়তো অনুভূতি থাকে—তাই কারও দানবত্বে আঘাত লেগে থাকলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।”

 

 

 

ঘটনার সূত্রপাত এক টুইটকে ঘিরে। সেই পোস্টে লেখা ছিল, “জাভেদ আখতার হিন্দুদের বলেছেন, ‘মুসলমানদের মতো হয়ে যেও না, বরং তাদের তোমাদের মতো করে তোল।’ পশ্চিমবঙ্গ উর্দু অ্যাকাডেমি ঠিক কাজই করেছে এই ভণ্ড ‘বুদ্ধিজীবী’র আমন্ত্রণ বাতিল করে।” পোস্টের সঙ্গে দেওয়া লিঙ্কটি পরে অবশ্য বেপাত্তা হয়ে যায়। 

 

বিতর্কিত পুরনো ভিডিওটিতে জাভেদ আখতারকে ‘শোলে’ ছবির একটি দৃশ্যের উদাহরণ দিতে দেখা যায়। তিনি বলেন, “শোলে ছবিতে ধর্মেন্দ্র শিবজির মূর্তির আড়ালে লুকিয়ে হেমা মালিনীর সঙ্গে কথা বলেন—আজ এমন দৃশ্য লেখা সম্ভব? ১৯৭৫ সালে কি হিন্দু ছিলেন না, ধর্মপ্রাণ মানুষ ছিলেন না? নিশ্চয়ই ছিলেন। তবু তখন এমন দৃশ্য লেখা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি।” এরপরই তিনি যোগ করেন, “আমি বলেছিলাম, ‘মুসলমানদের মতো হয়ে যেও না, তাদের তোমাদের মতো করে তোল। তোমরা এখন মুসলমানদের মতো হয়ে যাচ্ছ।’ এটা এক দুঃখজনক ব্যাপার।”

 

 

উল্লেখ্য, কিংবদন্তি অভিনেতা-মেকার মহম্মদ (মেহমুদ)–এর পুত্র লাকি আলি তাঁর সঙ্গীতজীবন শুরু করেন অনেক দেরিতে। ১৯৯৬ সালে, ৩৭ বছর বয়সে, প্রথম অ্যালবাম সুনোহ দিয়ে। তারপর বলিউডে কহো না… পেয়ার হ্যায়–এর “এক পল কা জিনা” আর “না তুমি জানো না হাম”–এর মতো গান তাঁকে তুমুল জনপ্রিয় করে তোলে। ‘কাঁটে’ ও ‘সুর’ ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন তিনি। তবে ২০১৫ সালের তামাশা–র পর ধীরে ধীরে বলিউড থেকে দূরত্ব নেন লাকি। ২০২২ সালে কম্পোজার মিকি ম্যাকক্লিয়ারির সঙ্গে ‘ইন্তেজার’ গানটি দিয়ে ফের সঙ্গীতে কামব্যাক করেন। সম্প্রতি তাঁকে দেখা গেছে মার্ডার অ্যাট তিসরি মঞ্জিল ৩০২ ছবিতেও। বর্তমানে বিভিন্ন শহরে লাইভ শো নিয়েই ব্যস্ত তিনি।

অন্যদিকে, জাভেদ আখতার হিন্দি সিনেমার ইতিহাসে এক অনন্য নাম। জঞ্জির, দেওয়ার, শোলে–র মতো ছবির সংলাপ ও গীত রচনায় তিনি কিংবদন্তি। সাজ, বর্ডার, গডমাদার, রিফিউজি ও লগান–এর জন্য পাঁচবার জাতীয় পুরস্কার জিতেছেন তিনি। সম্প্রতি যুদ্ধরা ছবির সাথিয়া ও হট যা বাজু গান দু’টিও লিখেছেন জাভেদ।