বৃহস্পতিবার প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের পরিবার জানিয়েছে যে, তাঁরা সিবিআইয়ের মৃত্যুর তদন্তে দাখিল করা ক্লোজার রিপোর্টের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানাবে। পরিবার এই রিপোর্টকে ‘শুধু প্রহসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সুশান্তের পরিবার রিয়ার প্রতি সিবিআইয়ের দেওয়া ‘ক্লিন চিট’-কে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং আদালতে এর বিরুদ্ধে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সিবিআই রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে, সুশান্তের মৃত্যুর তদন্তে কোনও প্রমাণ নেই যা দেখায় যে তাঁকে অবৈধভাবে আটকে রাখা হয়েছিল বা আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া হয়েছিল। তবে সুশান্তের পরিবার রিপোর্টটিকে অসম্পূর্ণ এবং প্রহসনের কাগজপত্র বলে অভিহিত করেছে এবং জানিয়েছে, তারা আদালতে এই ক্লোজার রিপোর্টের বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

পরিবারের আইনজীবী বরুণ সিং সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “এটি শুধু প্রহসন। সিবিআই যদি সত্যিই তদন্তের ফল প্রকাশ করতে চাইত, তবে তারা সব প্রমাণপত্র — চ্যাট, প্রযুক্তিগত রেকর্ড, সাক্ষীর বিবৃতি, মেডিক্যাল রিপোর্ট ক্লোজার রিপোর্টের সঙ্গে আদালতে দাখিল করত। আমরা এই রিপোর্টের বিরুদ্ধে প্রতিবাদমূলক পিটিশন দাখিল করব।”

সুশান্ত সিং রাজপুতকে ২০২০ সালের ১৪ জুন বান্দ্রার অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল ৩৪। প্রাথমিক তদন্তে তাঁর মৃত্যু আত্মহত্যা হিসাবে চিহ্নিত হয়। অভিনেতার প্রাক্তন বান্ধবী রিয়া, যিনি মৃত্যুর ছ’দিন আগে পর্যন্ত তার সঙ্গে ছিলেন, পরে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে গ্রেফতার হন। রিয়া নিজেও অভিনেত্রী। মাদক ব্যবহার, প্ররোচনা এবং অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করে। এবং কিছু সময় রিয়া জেলেও ছিলেন। তবে পরে সব অভিযোগ তুলে নেওয়া হয় এবং তার ভাই শোভিক চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে করা অভিযোগও বাতিল করা হয়।

২০২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রিয়া চক্রবর্তীকে গ্রেপ্তার করেছিল এনসিবি। সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুর সঙ্গে যুক্ত মাদক মামলাতেই তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। অক্টোবর মাসে রিয়ার জামিন মঞ্জুর করা হয়েছিল।

সম্প্রকি আদালত নির্দেশ দিয়েছে, ২০২০ সালের মাদক মামলায় বাজেয়াপ্ত করা অভিনেত্রীর পাসপোর্ট নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) ফিরিয়ে দিতে হবে। 
সুশান্ত সিংহ রাজপুতের মৃত্যু মামলায় শর্তসাপেক্ষ জামিনের অংশ হিসাবে রিয়ার পাসপোর্ট আগে জমা নেওয়া হয়েছিল। তবে আদালত জানিয়েছে, এত দিনে রিয়া সব নিয়ম মেনে চলেছেন, তাই বিচার প্রক্রিয়ার সময় তাঁর উপস্থিতি নিয়ে সন্দেহের কোনও কারণ নেই। তবে রিয়ার জন্য নির্ধারিত কিছু শর্তাবলী রয়েছে। সেগুলি হল:

রিয়াকে প্রতিটি শুনানিতে উপস্থিত থাকতে হবে, যদি ট্রায়াল কোর্ট তাঁকে অব্যাহতি না দেয়।
তাঁর সব ভ্রমণসূচি, যেমন ফ্লাইট এবং হোটেলের তথ্য, প্রোসিকিউশনকে যাত্রার চার দিন আগে জানাতে হবে।
তাঁর মোবাইল নম্বর শেয়ার করতে হবে, ফোন চালু রাখতে হবে এবং দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে জানাতে হবে।