সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান, মানসিক চাপ ও শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা হার্টের ধমনীকে শক্ত ও সংকুচিত করে দেয়। ফলে অ্যাথেরোসক্লেরোসিস নামের অবস্থা তৈরি হয়, যেখানে ধমনীতে চর্বি জমে রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। চিকিৎসকদের মতে, এই অবস্থা হৃদরোগ ও স্ট্রোকের মতো প্রাণঘাতী রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে কয়েকটি প্রাকৃতিক খাবার রয়েছে যেগুলো ধমনীকে পরিষ্কার রাখতে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে কার্যকরী ভূমিকা পালন পারে।হৃদযন্ত্রের সুরক্ষায় নিয়মিত কোন কোন খাবার খাবেন, জেনে নিন-
2
7
ওটসঃ ওটস হল বেটা-গ্লুকান সমৃদ্ধ শস্য, যা শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন নিয়মিত ওটস খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা ৫ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে। তবে বাজারের চটজলদি রান্নার ‘ইনস্ট্যান্ট ওটস’-এর পরিবর্তে স্টিল-কাট বা রোলড ওটস খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
3
7
মোরিঙ্গা বা সজনে পাতাঃ ভারতীয় উপমহাদেশে বহুল প্রচলিত মোরিঙ্গা বা সজনে পাতা রক্তনালী সুস্থ রাখতে বিশেষভাবে কার্যকর। এতে থাকা কোয়ার্সেটিন নামক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ধমনীর নমনীয়তা বাড়ায়, প্রদাহ কমায় এবং ভাল কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বাড়ায়। বর্তমানে মোরিঙ্গা পাউডার ও চায়ের চাহিদাও বাড়ছে। রান্নায় পাতা হিসেবে ব্যবহার করাও উপকারী।
4
7
আখরোটঃ শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি উদ্ভিজ্জ উৎস হল অখরোট। নিয়মিত অল্প পরিমাণ অখরোট খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, খারাপ কোলেস্টেরল কমে যায় এবং ধমনীর প্রদাহও কমে। তবে বেশি খেলে ওজন বাড়তে পারে, তাই পরিমিত মাত্রায় খাওয়াই শ্রেয়।
5
7
মেথিঃ মেথি বীজ ও পাতা দীর্ঘদিন ধরে ভারতীয় রান্নায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। গবেষণা বলছে, মেথি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্তে চর্বি জমার প্রবণতা কমায়। মেথি বীজ ভিজিয়ে বা পাতার তরকারি খাওয়া হৃদযন্ত্রের জন্য উপকারী।
6
7
কারি পাতাঃ রান্নায় সুগন্ধ ও স্বাদের জন্য ব্যবহৃত কারি পাতার মধ্যেও রয়েছে বিশেষ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা কেম্পফেরল নামের উপাদান প্রদাহ কমাতে ও কোলেস্টেরল অক্সিডেশন রোধে কার্যকর। তাই তরকারি, ডাল, স্যুপে ব্যবহৃত কারিপাতা শুধু স্বাদ নয়, স্বাস্থ্যের পক্ষেও উপকারী।
7
7
যদিও শুধুমাত্র এই খাবার খেয়েই হৃদরোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ ও ধূমপান–মদ্যপান বর্জন করার পাশাপাশি এই খাবারগুলো নিয়মিত খেলে ধমনীর ক্ষয় অনেকটাই রোধ করা সম্ভব।