আজকাল ওয়েবডেস্ক: দীপাবলির রাতেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। গভীর রাতে বহুতল আবাসনে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড। একাধিক তলায় ছড়িয়ে পড়ে আগুন। একাধিক ফ্ল্যাটে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। আলোর উৎসবেই শেষ হয়ে গেল একাধিক প্রাণ। উদযাপন শেষে ফ্ল্যাটেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে প্রাণ হারালেন চারজন। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের নভি মুম্বই শহরে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে এক বহুতল আবাসনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। অগ্নিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। 

 

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে ভাসি এলাকার সেক্টর ১৪-তে। ওই এলাকার এমজিএম কমপ্লেক্সের রাহেজা রেসিডেন্সিতে রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ আগুন লাগে। প্রথমে ১১ তলায় আগুন লাগে। ক্রমেই কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এলাকা। আগুনের লেলিহান শিখা পৌঁছে যায় আবাসনের উপরের তলাতেও।‌এরপর ১২ তলা ও ১৩ তলাতেও দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে শুরু করে। 

 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অগ্নিদগ্ধ হয়ে দুই মহিলা, এক যুবক এবং ছ'বছরের এক নাবালিকার মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ১০জন। আহতদের ভাসি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রাতেই অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে পুলিশ বাহিনী ও দমকলের আটটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ৪০ জন দমকল কর্মী একটানা কয়েক ঘণ্টা ধরে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। অবশেষে ভোর চারটে নাগাদ ওই আবাসনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। কীভাবে আগুন লেগেছে, তা এখনও জানা যায়নি। 

 

আরও পড়ুন: শরীর জুড়ে কালশিটে! পড়ুয়াকে দেখেই আঁতকে উঠলেন চিকিৎসকরা, প্রিন্সিপালের নির্যাতনের কাহিনি শুনে চোখ ছানাবড়া

 

প্রসঙ্গত, গণেশ চতুর্থীতেও মুম্বইয়ে মর্মান্তিক একটি দুর্ঘটনা মহারাষ্ট্রে। মহারাষ্ট্রের পালগড় জেলায় ১৩ বছরের পুরনো একটি বেআইনিভাবে নির্মীত পাঁচতলা আবাসন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনায় মোট ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। মৃতদের তালিকায় এক বছরের এক শিশুকন্যা ও তার মা-ও ছিল। 

 

পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, ওই রাতেই একটি পরিবারে জন্মদিনের পার্টি চলছিল। জোয়াল পরিবারের সদস্যরা কেক কেটে উদযাপন করছিলেন। বাবা ও মায়ের কোলে উঠে কেক কাটছিল এক বছরের ওই শিশুকন্যা। কেক কাটার পরেই আত্মীয়দের সঙ্গে সেই মুহূর্তটি ভাগ করে নেন বাকিরা। ঠিক তখনই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে ওই আবাসন। যা ১৩ বছর আগে বেআইনিভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল। 

 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২৭ আগস্ট রাত ১২টা বেজে ৫ মিনিটে পাঁচতলা ভবনটি ভেঙে পড়ে। যেখানে ৫০টি ফ্ল্যাট ছিল। ১২টি ফ্ল্যাট ধসে পড়েছে গতকাল রাতে। একাধিক ছবিতে দেখা গেছে, ফ্ল্যাটেথ মধ্যে বেলুন, আলো দিয়ে সাজানো হয়েছিল। লোভনীয়, সুস্বাদু খাবারে সাজানো ছিল টেবিল। পছন্দের পোশাকে সেজে উঠেছিলেন সকলে। কেক কাটার পর একে অপরকে খাইয়েও দেন। ঠিক এর পাঁচ মিনিট পরেই ধসে পড়ে আবাসনের একাংশ। 

 

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে এক বছরের শিশুকন্যা ও তার মায়ের মৃত্যু হয়েছে। ইতিমধ্যেই দেহ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে।‌ দুর্ঘটনা পর তার বাবার খোঁজ পাওয়া যায়নি। সম্ভবত এখনও ধ্বংসস্তূপের তলায় আটকে রয়েছে। গভীর রাত থেকেই চলছে উদ্ধারকাজ। এখনও পর্যন্ত অনেকেই আটকে আছেন বলে আশঙ্কা উদ্ধারকারীদের। 

 

একযোগে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। একটানা ৩০ ঘণ্টা ধরে চলছে উদ্ধারকাজ। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এখনও পর্যন্ত মোট ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন। এখনও ছয়জন হাসপাতালে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁদের সকলের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

 

ঘটনাটির পরেই মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ওই বিল্ডিংয়ের মালিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চারতলা রমাবাই অ্যাপার্টমেন্টটি ধসে পড়ে বলে আধিকারিকরা জানিয়েছেন। ভাসাই-ভিরার পুর কর্পোরেশনের (ভিভিএমসি) একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, আহত এবং উদ্ধার হওয়া আরও ছয়জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (এনডিআরএফ), স্থানীয় পুলিশ এবং দমকল বিভাগ-সহ জরুরি দলগুলি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তল্লাশি চালিয়ে আরও কেউ সেখানে আটকে পড়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে। ধসের ফলে বেশ কয়েকটি পরিবার ঘরছাড়া হয়ে পড়েছে। সকল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে চন্দনসার সমাজমন্দিরে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। তাদের খাবার, জল, চিকিৎসা সহায়তা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেওয়া হয়েছে।