আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজস্থানে ফের ভয়ঙ্কর পথ দুর্ঘটনা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পরপর গাড়িতে ধাক্কা ডাম্পার ট্রাকে। পিষে মৃত্যুমিছিল। এখনও পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকেই। গত দু'মাসে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে তৃতীয় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল রাজস্থানে। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের জয়পুরে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জয়পুরের হারমাদা এলাকায়। লোহা মান্ডি থেকে ডাম্পার ট্রাকটি জয়পুর-সিকার রোডের দিকে যাচ্ছিল বেপরোয়া গতিতে। সেই সময়েই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পরপর গাড়ির পিছনে ধাক্কা দেয়। এরপর ওই এলাকায় ছোট ছোট কিছু গাড়ির উপর উল্টে পড়ে ট্রাকটি। ট্রাকের তলায় একটি মোটরবাইক ও দু'টি গাড়ি চাপা পড়ে যায়। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কমপক্ষে ছ'টি গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। যার মধ্যে চাপা পড়েন বহু মানুষ। গাড়ি চাপা পড়েই ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান অনেকে। তড়িঘড়ি করে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, ডাম্পার ট্রাকের ব্রেক ফেল করেছিল‌। তার জেরেই পরপর গাড়িতে ধাক্কা দিয়ে আরও একাধিক গাড়ির উপর উল্টে যায় সেটি। 

মুখ্যমন্ত্রী ভজন লাল শর্মা ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন। দুর্ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি গ্রিন করিডোর করে আহতদের দ্রুত অ্যাম্বু্যল্যান্সে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এখনও পর্যন্ত চলছে উদ্ধারকাজ। ঘটনাস্থলে দীর্ঘক্ষণ যানজটের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। 

প্রসঙ্গত, রবিবার রাতেই রাজস্থানে আরও একটি ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটেছিল। রাজস্থানের যোধপুরে আরও এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে গতকাল। যোধপুরে ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল অন্তত ১৫ জনের, আহত হয়েছেন আরও দু’জন। রবিবার ভর সন্ধ্যায় ভারতমালা এক্সপ্রেসওয়েতে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। জানা গিয়েছে, দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে একটি টেম্পো ট্র্যাভেলার। তাতেই ঘটে যায় এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহতরা সকলেই যোধপুর জেলার ফলোদি এলাকার বাসিন্দা। তাঁরা কলায়ত মন্দিরে দর্শন সেরে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। ফলোদির পুলিশ সুপার কুন্দন কনওয়ারিয়া জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার সময় ট্র্যাভেলারের গতি এতটাই বেশি ছিল যে গাড়িটির সামনের অংশ সম্পূর্ণ ভেঙেচুরে যায়।

বেশ কয়েকজন যাত্রী গাড়ির ভিতরে আটকে পড়েন। পরে স্থানীয় বাসিন্দা, পুলিশ ও পথচলতি মানুষ একযোগে উদ্ধারকাজে নামেন। দুর্ঘটনার তীব্রতায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে স্থানীয় এলাকাতেও। ফলোদি থানার অফিসার অমনারাম বলেন, ‘ধাক্কার তীব্রতায় মৃতদের দেহ গাড়ির সিটের সঙ্গে আটকে গিয়েছিল। তাঁদের বের করতে আমাদের যথেষ্ট কষ্ট হয়েছে।’

জানা গিয়েছে, আহত ব্যক্তিদের প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য গ্রিন করিডর তৈরি করে যোধপুরে স্থানান্তর করা হয়।দুর্ঘটনার খবর পেয়ে যোধপুরের পুলিশ কমিশনার ওম প্রকাশ মথুরদাস মথুর ও সুপারিনটেনডেন্ট বিকাশ রাজপুরোহিত হাসপাতালে গিয়ে আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে উদ্ধার ও শনাক্তকরণের কাজ। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।