আজকাল ওয়েবডেস্ক: উৎসবের আবহে শাশুড়ির জন্য প্রায় দুই হাজার মদের বোতল অর্ডার করেছিল জামাই। যে কীর্তি আর চাপা থাকেনি। জামাইয়ের আচরণে সন্দেহ হতেই তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। এবার ধরা পড়ল বিরাট চোরাচালান চক্র। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা, জুহাপুরার সফল রেসিডেন্সিতে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। মদের চোরাচালানের বড় চক্রের পর্দা ফাঁস হয়েছে ফের। বৈআইনিভাবে মদের ব্যবসার কারণে নাসিম আপ্পা বরাবরই কুখ্যাত। আবারও পুলিশের জালে সে। সেই ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে ১৬৫৬টি মদের বোতল ও বিয়ারের বোতল উদ্ধার করেছে পুলিশ। যার বাজার মূল্য পাঁচ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। 

 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, গোটা ঘটনাটি ঘটিয়েছে নাসিম আপ্পার জামাই সলমন ওরফে পিন্টু পাঠান। শাশুড়ির জন্য ১৬৫৬টি মদের বোতল অর্ডার করছিল পিন্টু। তবে সবটাই ছিল পারিবারিক মদের ব্যবসার কারণে। মদের চোরাচালানে পরিবারের সকল সদস্যরাই জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

 

পুলিশ আধিকারিক পিএস পার্মারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী তল্লাশি অভিযান চালায়। এই অভিযানে মেহবুব কুরেশি, সাহিল জামানিয়া সহ আরও অনেককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ মদের বোতল উদ্ধার করেছে তারা। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের পর জানা গেছে, গোটা ঘটনায় মূল অভিযোগ নাসিম আপ্পার বিরুদ্ধে। 

 

পুলিশ জানিয়েছে, তিন অভিযুক্তকেই ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত নাসিম আপ্পা ও তার জামাই পিন্টুর খোঁজে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। মূল অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারির পর ফের জেরা করা হবে। এই ঘটনায় আর কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

 

আরও পড়ুন: মাংসের দামে ছাড়! কসাইয়ের সঙ্গে স্ত্রীর প্রেম? সন্দেহের বশে স্বামী যা করল, জানলে চোখ কপালে উঠবে

 

১৯৬০ সালে রাজ্য গঠনের সময় থেকেই গুজরাট 'শুষ্ক রাজ্য' বা 'ড্রাই স্টেট' হিসাবে পরিচিত। অর্থাৎ এখানে মদ তৈরি, বিক্রি এবং সেবন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। কিন্তু সেই আইনি নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাজ্যজুড়ে যে বেআইনি মদের কারবার রমরমিয়ে চলছে, তা ফের একবার প্রকাশ্যে এল। সম্প্রতি আহমেদাবাদের বারেজা তালুকে একটি বাড়িতে পুলিশের তল্লাশিতে যে দৃশ্য দেখা গেল, তাতে তাবড় তাবড় গোয়েন্দাদেরও চোখ কপালে ওঠার জোগাড়! দেওয়ালের ভিতর এবং শৌচাগারের কমোডের নীচ থেকে উদ্ধার হল প্রায় ৮০০ বোতল মদ।

 

এই ঘটনার একটি ভিডিও ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, এক পুলিশকর্মী শৌচাগারের কমোডটি সরাতেই নিচে একটি গুপ্ত পথের সন্ধান মিলছে, যা সোজা গিয়ে পৌঁছেছে মদের ভান্ডারে। অভিনব উপায়ে মদ লুকিয়ে রাখার এই দৃশ্য দেখে তাজ্জব নেটদুনিয়া।

 

ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই ইতিমধ্যেই মন্তব্যের বন্যা বয়ে গিয়েছে। একদিকে যেমন বেআইনি কারবারের বাড়বাড়ন্ত রুখতে রাজ্যে মদ বিক্রির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি তুলেছেন অনেকে, তেমনই বহু নেটিজেন মজাদার সব মন্তব্য করেছেন। 

 

উল্লেখ্য, মহাত্মা গান্ধীর আদর্শকে সম্মান জানিয়েই গুজরাটে মদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। যদিও একবিংশ শতকের ব্যবসায়িক পরিবেশের সঙ্গে তাল মেলাতে ২০২৩ সালে গুজরাট ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্স টেক-সিটি (গিফট সিটি) এলাকায় বিদেশি নাগরিক ও কর্মীদের জন্য মদ্যপানের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু রাজ্যের বাকি অংশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় চোরাকারবারিদের পোয়াবারো। 

 

গুজরাট সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বিগত দুই বছরে রাজ্য পুলিশ প্রায় ২১২ কোটি টাকার দেশি ও বিদেশি মদ বাজেয়াপ্ত করেছে। বারেজার ঘটনাটি ফের একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ‘শুষ্ক’ গুজরাটে মদের স্রোত বন্ধ করা যায়নি।