আজকাল ওয়েবডেস্ক: তেলেঙ্গানায় সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি জোগুলাম্বা গাদোয়াল জেলার একটি সরকারি আবাসিক হস্টেলে ঘটে৷ জানা গিয়েছে, হোস্টেলে রাতের খাবার খেয়ে অন্তত ৫২ জন পড়ুয়া ভয়াবহ অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুক্রবার রাতে এই ঘটনা ঘটে। অসুস্থ ছাত্রদের বমি ও পেটে ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, হস্টেলের প্রায় ১১০ জন ছাত্র শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ রাতের খাবার সারেন। তাঁদের মেনুতে ছিল ডাল, ভাত এবং বাঁধাকপির তরকারি। কিন্তু খাবার খাওয়ার পরই কয়েক জন ছাত্র আচমকা অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন।
খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে, অসুস্থ ছাত্রদের প্রথমে নিকটেই ধর্মাবরম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ পরে সেখান থেকে গাদোয়াল সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়। শনিবার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ভর্তি হওয়া সবাই এখন বিপদের বাইরে। তাদের শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল বলে খবর।
জোগুলাম্বা গাদোয়ালের এক পুলিশ আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, "প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ছাত্ররা 'ফুড পয়জেনিং' এর শিকার হয়েছে। মোট ৫২ জন অসুস্থ হয়েছিল। এদের মধ্যে রবিবার ভোরের মধ্যেই ৩২ জনকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিরাও ভালো আছে। আমরা পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।"
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, যে ৩২ জন ছাত্রকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁরা বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। বাকিরা চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। হস্টেল চত্বরেও একটি স্বাস্থ্য শিবির চলছে।
এহেন 'ফুড পয়জেনিং' এর কারণ জানতে ইতিমধ্যেই জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং খাদ্য সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ তদন্ত শুরু করেছে। রান্নাঘর থেকে খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও, স্থানীয় শিক্ষা দপ্তরের কর্তারা হস্টেলে গিয়ে রান্না ও পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেছেন। পাশাপাশি কর্তৃপক্ষকে ভবিষ্যতে খাদ্য সুরক্ষার কড়া নিয়ম মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, এই ঘটনার কয়েক দিন আগেই ওড়িশার কটকের রাভেন'শ বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ জন ছাত্র একই ভাবে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে পানীয় জল থেকে সংক্রমণের সন্দেহ করা হলেও কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করে। পরে জলের নমুনা পরীক্ষা করার কথা জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, রাস্তার ধারে ফুচকার টক জল দেখলে জিভে জল আসে না এমন মানুষ কমই আছে ৷ এবার সেই ফুচকা খেয়ে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন প্রায় ৩৫ জন। ঘটনাটি ঘটে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনায়। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয় ফুচকায় বিষক্রিয়ার জেরে এই ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অসুস্থদের প্রত্যেকের বাড়ি চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের মাধবপুরের বেলগেড়িয়ায়। এক ব্যক্তি ওই এলাকায় ফুচকা বিক্রি করতে আসেন। সেই দোকানেই সবাই ফুচকা খেয়েছিলেন। তার কয়েক ঘণ্টা পর প্রত্যেকের পেটে ব্যথা, পায়খানা–বমি শুরু হয়ে যায়। বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখনই ফুচকা খাওয়ার প্রসঙ্গ উঠে আসে।
তড়িঘড়ি আহতদের ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ৩৫ জনের মধ্যে ১৩ জনের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। বাকিরা গ্রামে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। স্থানীয়দের ধারণা ফুচকার জলে বিষক্রিয়া হওয়ার থেকেই এই ঘটনা ঘটতে পারে। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় বেড়েছে উদ্বেগ। স্থানীয়দের দাবি, শুধু ওই গ্রাম নয়, পাশের একটি গ্রামের অবস্থাও কার্যত একই। অসুস্থ অনেক বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ভর্তি হাসপাতালে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী বলেন, ‘প্রাথমিক অনুমান খাদ্যে বিষক্রিয়া থেকেই এই ঘটনা ঘটেছে। আপাতত ১৩ জন ক্ষীরপাই গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তবে সকলেই স্থিতিশীল। নমুনা সংগ্রহ করে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
