আজকাল ওয়েবডেস্ক: পারিবারিক বিবাদের জেরে একের পর এক আত্মহত্যা, খুন৷ এমনই এক লোমহর্ষক কাণ্ড ঘটেছে তেলেঙ্গানায়। খবর অনুযায়ী, তেলেঙ্গানার বিকরাবাদ জেলায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী, এক মেয়ে ও শ্যালিকাকে নৃশংসভাবে খুন করে। এর পর নিজেও আত্মঘাতী হন তিনি। এখানেই ক্ষান্ত হননি অভিযুক্ত। তাঁর আরেক মেয়ের উপরেও তিনি হামলা চালান। ঘটনার জেরে গুরুতর আঘাত নিয়ে কোনওমতে প্রাণে বাঁচতে সক্ষম হয় মেয়ে। পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার ভোররাতে এই হাড়হিম ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, একটি ফোনের মাধ্যমে মধ্যরাতে অভিযোগ আসে। জানা গিয়েছে 'ডায়াল ১০০' মারফত খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থল কুলকাচেরলা মণ্ডলে পৌঁছয় পুলিশের দল। আনুমানিক রাত আড়াইটে থেকে তিনটের মধ্যে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘুমন্ত অবস্থায় খুন করেন অভিযুক্ত। এ প্রসঙ্গে এক পুলিশ কর্তা জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তি ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁর স্ত্রী (বয়স তিরিশের কোঠায়), ছোট মেয়ে (আনুমানিক ১০ বছর) এবং শ্যালিকাকে (বয়স চল্লিশের কোঠায়) ধারালো কাস্তে দিয়ে কুপিয়ে খুন করেন বলে অভিযোগ। এহেন ঘটনার কারণ এখনও তদন্তাধীন। পারিবারিক বিবাদের জেরে এমনটা ঘটেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷
পুলিশ কর্তা আরও জানিয়েছেন, অভিযুক্ত তাঁর বড় মেয়েকেও আঘাত করার চেষ্টা করেন। তবে মেয়েটি গুরুতর আহত অবস্থায় সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হয়। কোনওরকমে প্রাণে বাঁচে সে। বর্তমানে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরপর ওই ব্যক্তি ঘরের ভেতরেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর পারিবারিক বিবাদ ছিল। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, পারিবারিক বিবাদের জেরে আরেক ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। ঘটনাটি ঘটে হামিরপুরে। এক যুবক তাঁর ২৪ বছর বয়সি স্ত্রীকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে খুন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নৃশংসতার এখানেই শেষ নয়। খুনের পর অভিযুক্ত তার তিন বছরের শিশুসন্তানকে মায়ের লাশের সঙ্গেই ঘরে তালা দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পুলিশ রবিবার এই খবর জানিয়েছে। এই ঘটনা জানাজানি হতেই তোলপাড় চারিদিক।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম মইনউদ্দিন৷ সে সরকারি রেশন ডিলার। বিবাদের জেরে সে তার স্ত্রী রোশ্নিকে পিটিয়ে খুন করে। খবর অনুযায়ী, মউদাহা থানা এলাকার একটি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, বছর চারেক আগে মইনউদ্দিন ভালোবাসে রোশ্নিকে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু পরে তাদের মধ্যে নানা খুটিনাটি বিষয় নিয়ে বিবাদ লেগে থাকত।
পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তীব্র ঝগড়া শুরু হয়। অভিযোগ, সেই সময় রাগের মাথায় মইনউদ্দিন তার স্ত্রীর ওপর লোহার রড নিয়ে চড়াও হয়। আঘাত গুরুতর হওয়ায় ঘটনাস্থলেই রোশ্নির মৃত্যু হয়।
রবিবার সকালে তালা দেওয়া ঘর থেকে শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতে পান পরিবারের সদস্যরা। এর পরই তাঁরা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। ভিতরে গিয়ে তাঁরা যা দেখেন, তাতে আঁতকে ওঠেন সকলে৷ ছোট্ট শিশু তার মায়ের রক্তমাখা দেহের পাশে বসে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই খবর দেওয়া হয় পুলিশকে।
ঘটনার জেরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মনোজ কুমার গুপ্ত জানিয়েছেন, "তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্তকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
