আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্কুলের হস্টেল থেকে দিন কয়েক আগেই ফিরেছিল বাড়ি। বাবা, মায়ের সঙ্গে খুশিতেই কাটছিল দিন। হঠাৎ চরম পরিণতি হল দশ বছরের এক নাবালিকার। ফাঁকা বাড়িতে যৌন হেনস্থার শিকার হল সে। তাও আবার নিজের বাবাই যৌন হেনস্থা করল তাকে। ঘটনাটি জেনেও মুখে কুলুপ এঁটেছিল নির্যাতিতা নাবালিকার মা। 

জানা গেছে, বাবার দ্বারা যৌন নির্যাতনের পর গুরুতর চোট পায় নাবালিকা। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। তবুও থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে মেয়েকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করেনি মা।  এদিকে হাসপাতালের তরফেও স্পষ্ট জানানো হয়, পুলিশে ঘটনাটি না জানালে, নাবালিকার চিকিৎসাও শুরু করা সম্ভব নয়। চিকিৎসকদের চাপে পড়ে শেষমেশ থানায় বিষয়টি জানায় নির্যাতিতার মা। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে তেলেঙ্গানার নারায়ণপেট জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি আসলে ঘটেছিল ২৫ জুলাই।‌ কিন্তু পুলিশের কাছে তার দিন কয়েক পরেই অভিযোগ জানায় দশ বছরের নির্যাতিতা নাবালিকার মা। নারায়ণপেট জেলার মরিকাল মণ্ডলের একটি গ্রামের বাসিন্দা নির্যাতিতা নাবালিকা। 

এর আগে পড়াশোনার জন্য সরকারি স্কুলের এক হস্টেলে থাকত সে। দিন কয়েক আগেই হস্টেলের মধ্যে কুকুরের কামড়ে জখম হয় সে। তখনই মকথালের স্কুলের হস্টেল থেকে নাবালিকাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনে তার পরিবার। প্রথম কয়েকদিন হেসেখেলে কাটছিল সময়। ফাঁকা বাড়িতেই ঘটল‌ বিপত্তি। 

আরও পড়ুন: 'হানিমুন ইন শিলং', যৌনতায় 'না' সোনমের, মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে কীভাবে খুন করা হয়েছিল রাজাকে? নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে এবার

সেদিন বাড়িতে নাবালিকার মা ছিল না। কাজের জন্য সে বাইরে গিয়েছিল। নাবালিকা একটি ঘরে একা একাই পড়াশোনা করছিল। দুপুর নাগাদ ছাগল চড়িয়ে বাড়িতে ফেরে তার বাবা। সেই সময় যুবক মত্ত অবস্থায় ছিল বলে জানা গেছে। বাড়িতে ঢুকেই দেখে, মেয়ে একা পড়াশোনা করছে। তখনই ঘরের দরজা বন্ধ করে মেয়ের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। 

নির্জনতার সুযোগে মেয়েকে চরম যৌন নির্যাতন করে বাবা। তখনই নাবালিকা চিৎকার করে বলে, 'প্লিজ, বাবা, আমি অনুরোধ করছি। আমাকে ছেড়ে দাও। আমার লাগছে। আমার সঙ্গে এমনটা করো না।' নাবালিকার চিৎকারের শব্দ শুনতে পান প্রতিবেশীরা। তাঁরাই প্রথমে ছুটে আসেন। ঘরের দরজা ভেঙে নাবালিকাকে উদ্ধার করেন। খবর দেওয়া হয় তার মাকে। 

রক্তাক্ত অবস্থায় নাবালিকাকে প্রথমে স্থানীয় একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হতেই মরিকাল সরকারি হাসপাতালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মেহবুবনগর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। সেই হাসপাতালে যাওয়ার পরেই বিষয়টি জানতে পারে পুলিশ। 

মেহবুবনগর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, পুলিশে অভিযোগ না জানালে নাবালিকার চিকিৎসা তাঁরা শুরু করবেন না। এরপরই থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করে নির্যাতিতার মা। অভিযোগের ভিত্তিতে মেয়েকে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত বাবার বিরুদ্ধে পকসো ও ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, 'অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় ও পকসো ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক। তার খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলছে। শীঘ্রই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে‌।'