আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাঁচ বছরেরও বেশি সময় পর অবশেষে ভারত ও চীনের মধ্যে সরাসরি বিমান পরিষেবা আনুষ্ঠানিকভাবে পুনরায় শুরু হয়েছে। রবিবার চীনের ভারতে নিযুক্ত দূতাবাসের মুখপাত্র ইউ জিং এক্স-এ পোস্ট করে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি লেখেন, “চীন ও ভারতের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট এখন বাস্তবতা।”
এই ঐতিহাসিক পুনরারম্ভের সূচনা হয়েছে কলকাতা থেকে গুয়াংজু রুটে প্রথম ফ্লাইট চালুর মধ্য দিয়ে। এর পরবর্তী ধাপে শাংহাই–নয়াদিল্লি রুটে ফ্লাইট পরিষেবা শুরু হবে ৯ নভেম্বর ২০২৫ থেকে, যেখানে প্রতি সপ্তাহে তিনটি উড়ান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
Direct flights between China and India are now a reality.
— Yu Jing (@ChinaSpox_India)
✈️ Kolkata → Guangzhou launches today.
Shanghai ↔ New Delhi starts Nov 9, flying 3 times a week. pic.twitter.com/rxa0ag4jFdTweet by @ChinaSpox_India
ইন্ডিগো প্রথম সারিতে
ভারতীয় বিমান সংস্থা ইন্ডিগো প্রথম দিকের এয়ারলাইন্সগুলির মধ্যে রয়েছে যারা কোভিড-পরবর্তী এই গুরুত্বপূর্ণ রুটে পরিষেবা পুনরায় চালু করছে। সংস্থাটি গত ২ অক্টোবর তাদের প্রেস রিলিজে জানিয়েছিল যে, তারা ২৬ অক্টোবর ২০২৫ থেকে কলকাতা ও গুয়াংজু-এর মধ্যে প্রতিদিনের ননস্টপ ফ্লাইট চালু করবে, যেখানে ব্যবহৃত হবে আধুনিক Airbus A320neo বিমান।
এছাড়াও, ইন্ডিগো জানিয়েছে যে তারা শীঘ্রই দিল্লি–গুয়াংজু রুটেও সরাসরি ফ্লাইট চালু করবে, যা বর্তমানে নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের অপেক্ষায়। পরে সংস্থাটি ১১ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে যে ১০ নভেম্বর থেকে এই নতুন দিল্লি–গুয়াংজু রুটেও দৈনিক সরাসরি উড়ান শুরু হবে। এই পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা, পর্যটন এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করবে।
ভারত ও চীনের মধ্যে বিমান চলাচল বন্ধ ছিল কোভিড-১৯ মহামারির শুরু থেকে, এবং এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল ২০২০ সালের জুন মাসের গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষ, যা গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘর্ষগুলির একটি ছিল। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থায় ছিল।
আরও পড়ুন: ছট পূজা: সূর্য উপাসনার বিজ্ঞান, পুরাণ ও প্রকৃতি-সচেতনতার অসাধারণ সমন্বয়
তবে অক্টোবর ২০২৪-এ উভয় দেশ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় পেট্রোলিং সংক্রান্ত এক গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই সমঝোতাকে সীমান্ত উত্তেজনা প্রশমনের বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়।
নতুন দিগন্তে বাণিজ্য ও পর্যটন
সরাসরি বিমান সংযোগ পুনরায় শুরু হওয়ার ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, পর্যটন ও সাংস্কৃতিক বিনিময়-এর এক নতুন অধ্যায় সূচিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উড়ান পরিষেবা কেবল ভ্রমণকে সহজ করবে না, বরং দুই দেশের ব্যবসায়িক ও বিনিয়োগ সম্পর্ক পুনর্গঠনে সহায়তা করবে। একজন বাণিজ্য বিশ্লেষকের ভাষায়, “এই রুট পুনরায় চালু হওয়া শুধু আকাশপথের সংযোগ নয়, এটি দুই এশীয় পরাশক্তির মধ্যে আস্থা পুনর্গঠনের প্রতীক।”
পাঁচ বছর পর ভারত ও চীনের মধ্যে আকাশপথ আবার খুলে গেল— যা ভবিষ্যতের সহযোগিতা, যোগাযোগ এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার দিকে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
