আজকাল ওয়েবডেস্ক: কলকাতার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে গাড়ি ঋণের নামে বিপুল টাকা প্রতারণার ঘটনায় বড় সাফল্য পেল কলকাতা পুলিশের গোয়ান্দা বিভাগ। এই ঘটনায় জুলাই মাসে চার জনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড থেকে আরও দু’জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন। ব্যাঙ্ক জালিয়াতির মামলায় এই নিয়ে মোট ছয় জনকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, ঠাকুরপুকুর এলাকায় ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ২০২২ সালে গাড়ি কেনার নাম করে ঋণের আবেদন করেছিলেন কয়েকজন। পূর্বপরিকল্পিতভাবে তৈরি ভুয়ো কাগজপত্র ব্যাঙ্কে জমা দিয়েছিলেন অভিযুক্তরা। এইসব নথি ব্যবহার করে অভিযুক্তরা চারটি গাড়ি ঋণের জন্য আবেদন করেন এবং ব্যাঙ্কের সঙ্গে লোন-কাম-হাইপোথিকেশন চুক্তি করেন। মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ৫৫.৩৪ লক্ষ টাকা। ঋণ নেওয়ার পরেই ভুয়ো নথির ব্যাপারটি নজরে আসে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের। ম্যানেজারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ।

আরও পড়ুন: বাংলা ভাষা আন্দোলনকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার ডাক দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, চরম কটাক্ষের শিকার বাম-বিজেপি

পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে ব্যাঙ্ক থেকে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ করা হয় এবং অভিযোগকারীর বক্তব্য রেকর্ড করা হয়। পরবর্তীতে জানা যায় যে চারজন ঋণগ্রহীতার নামে জাল নথি ব্যবহার করে ঋণ গ্রহণ করা হয়েছে। এরপরেই চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর মধ্যে অন্যতম কৌশিক ঘোষ। ৪৮ বছর বয়সী এই বেহালার বাসিন্দা চার জন ঋণগ্রহীতার নামে জাল কাগজপত্র প্রস্তুত করেন। এই ব্যক্তি অন্যদের সঙ্গে মিলে ঋণ নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন। দ্বিতীয় জন, সুজিত কুমার মিশ্র (৪১ বছর) কমিশনের বিনিময়ে ঋণগ্রহীতা যোগাড় করেন। তৃতীয় জন সুব্রত পুরকাইত (৩৮ বছর) নিজেই এক জন ঋণগ্রহীতা। যিনি নিজের নামে ভুয়ো কাগজপত্র ব্যবহার করে গাড়ি ঋণ গ্রহণ করেন। চতুর্থ ব্যক্তির নাম  রণব্রত চট্টোপাধ্যায় (৫১ বছর)।

আরও পড়ুন: একবালপুরে বেসরকারি হাসপাতালে রোগীকে অস্ত্রোপচারের পর ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার হাসপাতালকর্মী

পূর্বে গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তদের জেরা এবং তদন্তের ভিত্তিতে অমিত বৈদ্য এবং মানস ভৌমিক নামক দুই ব্যক্তির হদিশ পায় পুলিশ। তাঁরা দীর্ঘ দিন ধরেই আত্মগোপন করে ছিলেন। অবশেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোড এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুই অভিযুক্ত ব্যাঙ্ক থেকে প্রতারণার মাধ্যমে গাড়ির ঋণ পেতে সক্রিয়ভাবে সাহায্য করেছিল এবং পরে সেই গাড়িগুলি বেআইনিভাবে বিক্রি করতেও সহায়তা করে। 

আরও পড়ুন: ভারতের প্রথম হাইড্রোজেন ট্রেনে চড়তে চান, কত খরচ হতে পারে আপনার, জেনে নিন

পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, তদন্ত এখনও চলছে। চক্রের আরও সদস্যদের খোঁজে তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে।