আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাঙালির রান্নাঘরে মাইক্রোওয়েভ ওভেন এখন আর ‘বড়লোকের খেয়াল’ নয়। বরং দৈনন্দিন জীবনে নিত্য প্রয়োজনীয় উপকরণ হয়ে উঠেছে মাইক্রোওয়েভ ওভেন। বিশেষ করে ঝটপট খাবার গরম করার জন্য এই যন্ত্র খুবই উপযোগী। ফ্রিজ থেকে খাবার বার করে মাইক্রোওয়েভে দিলেই কয়েক মিনিটের মধ্যে গরম হয়ে যায়। বিশেষ করে যাঁদের তাড়াহুড়ো করে অফিসে যেতে হয় কিংবা বাড়ি ফিরে চটজলদি রান্না করতে হয় তাঁদের কাছে এই যন্ত্র আশীর্বাদের মতো। কিন্তু জানেন কি অনেক সময় এই তাড়াহুড়োর চক্করে এমন এমন জিনিস অনেকে ওভেনে ঢুকিয়ে দেন যেগুলি আদতে মাইক্রোওয়েভ ওভেনে গরম করা উচিত নয়। কোন কোন খাবার মাইক্রোওয়েভ ওভেনে ঢোকালে সমস্যা হতে পারে?
১. ডিম: ডিম মাইক্রোওয়েভে গরম করলে বিস্ফোরণ ঘটার ঝুঁকি থাকে। এর মূল কারণ, ডিমের কুসুম এবং সাদা অংশে জলীয় পদার্থ থাকে। মাইক্রোওয়েভে ডিম গরম করলে ভেতরের জলীয় পদার্থ দ্রুত বাষ্পে পরিণত হয়। এই বাষ্প ডিমের খোলের ভেতরে চাপ সৃষ্টি করে, যা ডিমকে বিস্ফোরকের ন্যায় ফাটিয়ে দিতে পারে। এমনকী খোসা ছাড়ানো ডিমও ফেটে যেতে পারে, কারণ ডিমের ভেতরে থাকা প্রোটিন দ্রুত জমাট বাঁধে এবং বাষ্প বার হওয়ার পথ বন্ধ করে দেয়। ডিম ফেটে গেলে মাইক্রোওয়েভের ভিতরের অংশ নোংরা হয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: শুক্রাণু দান করে কত টাকা আয় হয়? ভারতে বীর্য দাতা হতে গেলে কোন কোন নিয়ম জানতে হবে?
২. ফল (আঙুর, চেরি, ব্লুবেরি): আঙুর, চেরি এবং ব্লুবেরি মাইক্রোওয়েভে গরম করলে ডিমের মতোই কাণ্ড হতে পারে। এই ফলগুলিতে উচ্চমাত্রায় জলীয় পদার্থ থাকে। মাইক্রোওয়েভে গরম করার সময় ভেতরের জলীয় পদার্থ দ্রুত বাষ্পে পরিণত হয় এবং ফলের খোসার উপর চাপ সৃষ্টি করে। এই চাপের কারণে ফলগুলি সহজেই ফেটে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ৮৫ বছর বয়সে মাধ্যমিকে বসেও ফের অকৃতকার্য! ইনিই পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক স্কুলছাত্র
৩. পালং শাক: পালং শাক মাইক্রোওয়েভে গরম করলে পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। শাক-সবজিতে নাইট্রেট নামক যৌগ থাকে। মাইক্রোওয়েভে শাক গরম করলে এই নাইট্রেট নাইট্রোসামিনে রূপান্তরিত হতে পারে। এই উপাদানটি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। নাইট্রোসামিন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়াও, শাকের মধ্যে থাকা ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও মাইক্রোওয়েভে গরম করলে নষ্ট হয়ে যায়।
৪. বড় আকারের মাংস: বড় আকারের মাংসের টুকরা মাইক্রোওয়েভে গরম করলে মাংসের টুকরোর সব অংশ সমানভাবে রান্না হয় না। মাইক্রোওয়েভের উত্তাপ মাংসের বাইরের অংশে দ্রুত প্রবেশ করে, কিন্তু ভিতরের অংশ শীতল থেকে যায়। এর ফলে মাংসের বাইরের অংশ অতিরিক্ত রান্না হয়ে যায়, কিন্তু ভিতরের অংশ কাঁচা থাকে। মাংস ভাল ভাবে রান্না না হলে তাতে জীবাণু থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এই জীবাণু খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটতে পারে।
৫. সি-ফুড (চিংড়ি, কাঁকড়া, মাছ): চিংড়ি, কাঁকড়া এবং সামুদ্রিক মাছের মতো সী-ফুড মাইক্রোওয়েভে গরম করলে এর স্বাদ এবং গন্ধ নষ্ট হয়ে যায়। মাইক্রোওয়েভের উচ্চ তাপে সি-ফুডের প্রোটিন ভেঙে যায়, ফলে তার স্বাদ তেতো হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও, সি-ফুড বেশি সময় ধরে মাইক্রোওয়েভে গরম করলে তা রাবারের মতো শক্ত হয়ে যেতে পারে।
