আজকাল ওয়েবডেস্ক: আবারও স্বপন দেবনাথ। মন্ত্রী স্বপনবাবুর সাংগঠনিক প্রতিভা আর সামাজিক বোধের আর একটি দৃষ্টান্ত। সম্প্রীতির ভাইফোঁটা পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীতে। হিন্দু ও মুসলিম ভাইবোনেরা একসঙ্গে মিলে ভাইফোঁটা পালন করেছেন। মন্ত্রী ভাইফোঁটা নিলেন যার কাছে ধর্মের পরিচয়ে তিনিও মুসলিম।
“ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা
যম দুয়ারে পড়লো কাঁটা,
যমুনা দেয় যমকে ফোঁটা,
আমি দিই আমার ভাইকে ফোঁটা!”
ভাই-বোনের ভালোবাসা আর মঙ্গল কামনায় ভরা এই ছন্দ যেন বৃহস্পতিবার আরও জীবন্ত হয়ে উঠল পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের শ্রীরামপুরে। এইদিনে কার্তিক মাসের শুক্লা পক্ষের দ্বিতীয় তিথি — ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা। এই দিনটিতে বোনেরা ভাইদের কপালে ফোঁটা দিয়ে তাদের দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করেন। শাস্ত্রমতে যমুনা তাঁর ভাই যমরাজের কপালে ফোঁটা দিয়েছিলেন, সেই ঐতিহ্যই আজও জীবন্ত বাংলার ঘরে ঘরে। তবে আজকের ভাইফোঁটার বিশেষত্ব অন্য জায়গায়। ধর্মের সীমানা পেরিয়ে, হিন্দু ও মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের ভাই-বোনেরা একসঙ্গে মেতে উঠেছেন এই ভালোবাসার উৎসবে। স্থান — পূর্বস্থলীর সর্বজয়া মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের ভবন। সকাল থেকেই সাজসজ্জায় মুখরিত ছিল গোটা এলাকা। হিন্দু ও মুসলিম ভাইবোনেরা মিলেমিশে প্রস্তুত করেছেন এই সম্প্রীতির অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্ব। এরপর আসে সেই প্রতীক্ষিত মুহূর্ত — যখন ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের কপালে ফোঁটা দিয়ে মঙ্গল কামনা করেন ভাই-বোনেরা। ভাইদের জন্য উপহার ও মিষ্টিমুখেরও ছিল বিশেষ ব্যবস্থা।

এই অনন্য উদ্যোগের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন এলাকার বিধায়ক ও রাজ্যের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। কয়েক বছর ধরেই তাঁর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই সম্প্রীতির ভাইফোঁটার অনুষ্ঠান। আজকের অনুষ্ঠানে এক প্রতীকী দৃশ্যে দেখা যায় — আজিজুন্নেসা খাতুন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের কপালে ফোঁটা দিচ্ছেন।
মন্ত্রী বলেন, “ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। সমাজে সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দিতেই এই উদ্যোগ।” উভয় সম্প্রদায়ের মানুষই জানিয়েছেন, এই ধরনের উৎসবই মানুষে মানুষে ভালোবাসা, ঐক্য ও বন্ধনের বার্তা ছড়ায়। প্রতিবারের মত এবারেও একটি অনাথ আশ্রমে মানবপুজার আয়োজন করেছিলেন মন্ত্রী। ভাইফোঁটাতেও ধরা পড়ল অন্যরকম সুর।
