আজকাল ওয়েবডেস্ক: জলপাইগুড়ির গাদং সাতভেন্ডি গ্রামে এক অভিনব প্রেমকাণ্ড ঘিরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ এক সকালেই হঠাৎ গ্রামজুড়ে শুরু হয় ফিসফাস—“প্রেমিকাকে বিয়ে করতে এসেছে প্রেমিক!” মুহূর্তের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো এলাকায়। জানা গেছে, জঙ্গলবাড়ি এলাকার এক যুবক হঠাৎ করেই হাজির হন এক গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির সামনে। তিনি সবার সামনে দাবি করেন, ওই গৃহবধূই তাঁর দীর্ঘদিনের প্রেমিকা, এবং আজ তিনি এসেছেন তাঁকে বিয়ে করতে। যুবকের এই আকস্মিক আগমন ও প্রকাশ্য প্রেমের দাবি ঘিরে মুহূর্তে ভিড় জমে যায় চারপাশে। গ্রামের লোকজন কেউ জানালা দিয়ে উঁকি দেন, কেউ আবার মোবাইল বের করে ঘটনাটি ভিডিও করতে থাকেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই যুবক ও গৃহবধূর মধ্যে সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গৃহবধূর বিবাহের পরেও তাঁদের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত ছিল বলে অভিযোগ। গৃহবধূর স্বামীর অনুপস্থিতিতে ওই যুবক প্রায়ই তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসতেন, এমনকি মাঝে মধ্যে বাড়িতেও প্রবেশ করতেন। এই সম্পর্কের কথা এলাকায় অনেকেরই জানা থাকলেও কেউ প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। তবে সম্প্রতি যুবক পালিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ায় গৃহবধূ সম্পর্ক থেকে সরে আসেন। সেই প্রত্যাখ্যানেই নাকি ক্ষুব্ধ হয়ে এদিন তিনি প্রেমিকার বাড়িতে এসে “ভালবাসার অধিকার” দাবি জানান।

আরো পড়ুন: হাসপাতালে নবজাতককে দেখতে এসে জামাইয়ের চোখ কপালে! বিছানায় ৩০ বছর ধরে নিখোঁজ থাকা শ্বশুর

ঘটনার পর গৃহবধূ সাংবাদিকদের বলেন, “আমি একে চাই না, আমি আমার স্বামীকেই চাই। ওর সঙ্গে আমার আর কোনও সম্পর্ক রাখতে চাই না।” অপরদিকে গৃহবধূর স্বামী জানান, বহুদিন ধরেই তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে ওই যুবকের সম্পর্ক নিয়ে অশান্তি চলছিল। তিনি একাধিকবার যুবককে সতর্ক করেছিলেন, কিন্তু তাতে কোনও  ফল হয়নি। তবু তিনি বলেন, দুই সন্তান ও সংসারের কথা ভেবে তিনি স্ত্রীকে ছাড়বেন না।

এদিকে এই ঘটনার খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। গ্রামবাসীদের কেউ কেউ বলছেন, “এত দিনের সম্পর্ক এমন পরিণতি পাবে, তা ভাবিনি।” অন্যদিকে অনেকে বলছেন, “এ প্রেম নয়, একতরফা আসক্তি।” শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে খবর যায় ধূপগুড়ি থানায়। পুলিশ এসে গৃহবধূ ও প্রেমিক যুবক উভয়কেই থানায় নিয়ে যায় এবং তাঁদের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।

বর্তমানে গাদং সাতভেন্ডি গ্রামে এই ঘটনাই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। কেউ বলছেন, ভালবাসা কখনও কখনও মানুষকে যুক্তিবোধ থেকে বিচ্যুত করে, আবার কেউ বলছেন, এটি সামাজিক শালীনতার সীমা লঙ্ঘনের একটি উদাহরণ। যা-ই হোক, এই প্রেমকাহিনি আপাতত পুরো জলপাইগুড়ি জেলাজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছে।