অন্ধকারের পর অবশেষে আলোর মুখ দেখলেন পরিচালক অয়ন সেনগুপ্ত। প্রায় আড়াই বছর পেরিয়ে পরিচালকের চেয়ারে পাকাপাকিভাবে বসতে চলেছেন তিনি। আবার নিজের পুরনো ছন্দে ফিরতে পেরে দারুন খুশি এবং আবেগপ্রবণ অয়ন সেনগুপ্ত। যে জায়গার অপেক্ষায় ছিলেন তিনি, ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সহায়তায় সেই জায়গা আবার স্বমহিমায় ফিরে পেলেন তিনি।
একসময় পরিচালনার কাজ প্রায় হারিয়ে রাস্তার ধারে নিজের দোকান শুরু করেন তিনি। দ্বিতীয়বার না ভেবে সংসার চালাতে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পরিচালক। তবে এবার নিজের দোকান 'পেটুক'-এর পাশাপাশি একটি ধারাবাহিকের পরিচালনার দায়িত্বে থাকছেন অয়ন সেনগুপ্ত। কোন ধারাবাহিকে পরিচালনা দায়িত্বে ফিরতে চলেছেন এই পরিচালক?
আরও পড়ুন: এ যেন সাক্ষাৎ ভবতারিণী! দেবী রূপে কোন টলি নায়িকা? চিনতে পারছেন?
পরিচালক অয়ন সেনগুপ্তর সঙ্গে এই বিষয়ে আজকাল ডট ইন-এর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "দু'বছর সাত মাস পেরিয়ে মাসের মাথায় পরিচালক শব্দটা আমার নামের সাথে আবার বলতে পারছি। পরিচালক ছিলাম, কিন্তু কোনও ধারাবাহিকে আমার নাম যাচ্ছিল না, কোনও প্রজেক্ট এর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। কিন্তু অবশেষে ১ জুলাই থেকে আমি শুটিং শুরু করেছি বায়োসিনে প্রোডাকশন এর প্রযোজনায় সান বাংলায় 'ক্রাইম ডায়েরি' ধারাবাহিকের। এর মাধ্যমেই আবারও পরিচালনার কাজ শুরু করেছি।"

তিনি বলেন, "এই প্রজেক্টটা আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আমি অবজারভার হিসেবে কেরিয়ার শুরু করেছিলাম 'পুলিশ ফাইলস' এবং ইটিভির ক্রাইম ডায়েরি প্রজেক্ট এর মাধ্যমে। এই 'ক্রাইম ডায়েরি' চলতে চলতেই জীবনের মোড় বদলে অভিনেতা থেকে পরিচালক হয়েছিলাম। আজকে কেরিয়ারের ২৫ বছর পেরিয়ে আবার সেই 'ক্রাইম ডায়েরি' নামক প্রজেক্ট এই কাজ শুরু করেছি। আরেকটি বিষয়ে বলতেই হয়, ফেডারেশন সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের উদ্যোগেই কাজটি পাওয়া। কারণ প্রযোজক যখন খুঁজছিলেন তখন স্বরূপ বিশ্বাস নিজে আমার নাম রেফার করেন, ওনাকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই আমার কাছে।"
অয়নের কথায়, "এক সময় আমার মনে হয়েছিল ফেডারেশন হয়তো আমাদের সাহায্য করবে না। তাই সেই ফেডারেশন বা স্বরূপ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আমি মামলা করেছিলাম। তবে সেইসব এখন মিটে গিয়েছে। তবে সে মামলা থেকে আমি নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছি এবং নতুন পরিচালক গিল্ড থেকে আমি বেরিয়ে এসেছি। স্বরূপ বিশ্বাসকে আমি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই কারন আমার নিজের জায়গা অর্থাৎ লাইট ক্যামেরা অ্যাকশনে ফিরিয়ে আনার জন্য। এবং অবশ্যই কৃতজ্ঞ প্রযোজক সৌম্যজিৎ গাঙ্গুলির কাছে কারণ তিনি আমায় এই সুযোগটা দিয়েছেন বিশ্বাস করেছেন।"
পরিচালক আরও বলেন, "এর মাঝে অনেকেই জানতে চেয়েছিলেন যে এবার দোকান বন্ধ করে দিচ্ছি নাকি? একেবারেই তা করছি না, আমার শুটিংয়ের মাঝে আমি দোকানেও সময় দিচ্ছি। দোকানটা অবশ্যই থাকবে কারণ আমার খুব খারাপ সময়ে পাশে ছিল এই 'পেটুক'। তাই তাকে কি করে ভুলে থাকা যায়! পরিচালনাও করব এবং দোকানটাও চলবে একইভাবে। এরপর শুধুই ইতিবাচক ভাবনা এবং কাজ করা, কাউকে কিছু দেখানোর নেই এবং প্রমাণ করারও নেই যে আমি যোগ্য নাকি অযোগ্য। শুধু নিজের জন্য এবং নিজের ভাল থাকার জন্য কাজ করব। এই খারাপ সময়ে সকল সাংবাদিক বন্ধুরা যেভাবে দাঁড়িয়েছেন এবং প্রচুর চেনা ও অচেনা মানুষেরা ফোনে, মেসেঞ্জারে পাশে থেকেছেন, যারা ছিলেন তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ এবং যারা ছিলেন না তাঁদের কাছেও আমি কৃতজ্ঞ। সকলে ভাল থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং আমি যেন আমার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি প্রার্থনা করবেন। সকল মানুষকে আমার পক্ষ থেকে অনেক ধন্যবাদ।"
