বলিউড অভিনেতা সইফ আলি খানের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত শরিফুল ইসলাম শাহজাদ কোনও অপরাধ করেননি বলে আদালতে দাবি করেছেন। জামিনের আবেদন দাখিল করে অভিযুক্ত বলেছেন যে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা এবং তাঁকে ফাঁসানোর জন্য কেবল ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। যদিও অভিযুক্তর জামিন সেই সময় বাতিল করে বোম্বে হাইকোর্ট।

 

 

 

সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ এবং তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, ঘটনার আগের দিন, অর্থাৎ ১৫ জানুয়ারি অভিযুক্ত সইফের বাসভবনে অনুপ্রবেশ করেছিলেন। সিসিটিভ ফুটেজ বলছে, ভিতরে প্রবেশ না করলেও শরিফুলকে সদ্‌গুরু বাসভবনের আশপাশে দেখা গিয়েছিল। বিকেল ৩টে থেকে সন্ধে ৬.৪৫ মিনিট পর্যন্ত রেকি চালান। সন্ধে ৬.৫৯ মিনিটে তাঁকে ভারতী ভিলা ভবনে উঠতে দেখা যায়। পরে ভারতী অ্যাভিনিউ হয়ে সইফের বাড়িতে পা রাখেন।

 

 

 

 

সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তি হঠাৎ পাতৌদি পরিবারে‌ ঢুকে পড়েন। করিনা তখন বাইরে ছিলেন। ফিরে এসে প্রথমে তাঁর বড়ছেলে তৈমুরের ঘরে যান। তাকে দেখে তিনি যান ছোট ছেলে জেহর ঘরে। দেখেন সে ঘুমোচ্ছে। তার আয়া বিছানার কাছে শুয়ে। করিনা এরপর নিজের ঘরে আসেন। তিনি এবং সইফ যখন ঘুমোতে যাবেন তখনই জেহর আয়া ছুটে এসে জানান, এক অপরিচিত ব্যক্তি ঘরে ঢুকে পড়েছেন। ভয় দেখিয়ে টাকা চাইছেন।

 

 

আরও পড়ুন: বেঁচে থাকার জন্য আট ঘণ্টা অন্তর ওষুধ খেতে হতো সুস্মিতা সেনকে! কোন‌ কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রাক্তন বিশ্ব সুন্দরী?

 

 

করিনা এবং সইফ দ্রুত ছোটছেলের ঘরে গিয়ে দেখেন, কালো টি-শার্ট পরা এক ব্যক্তি জেহর বিছানার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন, হাতে ধারালো অস্ত্র। ছেলেকে বাঁচাতে সইফ লোকটিকে বাধা দিতে গেলে তাঁকে ছুড়ি দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করতে থাকেন ওই ব্যক্তি। সদ্য পেশ করা চার্জশিট বলছে, ঘটনার অনুপাতে সইফ ও করিনার বয়ান প্রায় এক। 

 

 

 

 

আগেই জানা গিয়েছিল আদালতের কাছে আর্জি জানিয়েছেন শরিফুল যে তাঁকে বেআইনিভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। এমনকী মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানোর জন্য জেল থেকে মুক্তির আবেদনও করা হয়েছে তাঁর তরফে।

 

শরিফুলের জামিনের আবেদন নাকচ করার পাল্টা আবেদন জানায় মুম্বই পুলিশ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অভিনেতার বাড়ি থেকে সংগৃহীত আঙুলের ছাপের সঙ্গে শরিফুলের আঙুলের ছাপ মিলে গিয়েছে। তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের আরও দাবি, সইফের বাড়ির আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে যে ব্যক্তিকে ‘অপরাধী’ হিসাবে শনাক্ত করা হয়েছে তার সঙ্গে শরিফুলের মুখ মিলে গিয়েছে। সেই রিপোর্টও তাঁরা পেয়েছেন। একই ভাবে, অভিনেতার দেহ থেকে উদ্ধার হওয়া ছুরির টুকরোগুলির সঙ্গে অভিযুক্তের কাছ থেকে উদ্ধার করা ছুরির সাদৃশ্য রয়েছে। যা তাঁরা আদালতে পেশ করতে চান। সমস্ত রিপোর্ট খতিয়ে দেখার পর সম্ভবত আগামী সপ্তাহে আদালতে সইফ-কাণ্ডে ধৃত শরিফুলের মামলার শুনানি হবে।

 

 

 

প্রসঙ্গত, শুধু সইফের উপর হামলা নয়, করিনাকেও মারার চেষ্টা করা হয়েছিল! অভিনেতা রণিত রায় এই বিষয়েই চাঞ্চল্যকর এক মন্তব্য করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, সইফের উপর হামলার পর, করিনা কাপুরের গাড়িতেও হামলা করা হয়েছিল। 

 

 

 

রণিত একজন অভিনেতা হওয়ার পাশাপাশি একটি নিরাপত্তা সংস্থাও চালান। যখন সইফের উপর আক্রমণ করা হয় এবং তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, তখন তাঁর কোম্পানি সইফকে নিরাপত্তা দিয়েছিল। 

 

 

 

এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেন, "হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সইফ যখন বাড়ি ফিরছিল, তখন চারদিকে থিকথিক করছিল ভিড়। বাড়ি ফেরার সময়ে, করিনার গাড়িতেও আক্রমণ করা হয়েছিল। তখন ও খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল। আমি ওকে নিতে গিয়েছিলাম, এবং বাড়িতে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও তৈরি ছিল, এবং পুলিশ বাহিনীর কাছ থেকেও সাহায্য পাওয়া গিয়েছিল। যদিও কে বা কারা করিনার গাড়ির উপর চড়াও হয়েছিল, তা জানা যায়নি।"