টেলিভিশন অভিনেতা আশিষ কাপুরকে ধর্ষণের অভিযোগে পুনেতে গ্রেফতার করা হয়েছে। এক মহিলার অভিযোগ, গত আগস্ট মাসে দিল্লিতে একটি হাউস পার্টির সময় তিনি যৌন নির্যাতনের শিকার হন। বুধবার পুলিশ এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ডিসিপি রাজা বান্ঠিয়া জানান, মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে দিল্লিতে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এর পরেই পুলিশ দল আশিষের গতিবিধি একাধিক রাজ্যে ট্র্যাক করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগের পর আশিষ প্রথমে গোয়া এবং পরে পুনেতে যান, যেখানে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশের দাবি অনুযায়ী, অভিযোগকারিণী প্রথমে জানিয়েছিলেন যে, আশিষ তাঁর এক বন্ধু এবং আরও দু’জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি মিলে তাঁকে যৌন নির্যাতন করেন। আর এক মহিলা তাঁকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করেছিলেন। তবে পরে তিনি বলেন, আসলে কেবল আশিষই তাঁকে ধর্ষণ করেছিলেন। পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, মামলাটি প্রাথমিকভাবে গণধর্ষণ হিসাবে নথিভুক্ত করা হলেও শীঘ্রই সেটিকে ধর্ষণের মামলায় রূপান্তরিত করা হবে।
মহিলার আরও অভিযোগ, এই ঘটনার ভিডিও রেকর্ড করা হয়েছিল। তবে তদন্তকারীরা এখনো পর্যন্ত কোনও ফুটেজ উদ্ধার করতে পারেননি। পুলিশ জানিয়েছে, আশিষের সঙ্গে অভিযোগকারীর প্রথম পরিচয় হয়েছিল ইনস্টাগ্রামে। পরে তিনি তাঁকে সেই হাউস পার্টিতে আমন্ত্রণ জানান, যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে।
১১ আগস্ট আশিষ তাঁর এক বন্ধু, বন্ধুর স্ত্রী এবং দু’জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। ১৮ আগস্ট অভিযোগকারী তাঁর বয়ান সংশোধন করে জানান, আশিষ এবং তাঁর বন্ধু মিলে তাঁকে ধর্ষণ করেছিলেন, আর ওই মহিলা তাঁকে আক্রমণ করেছিলেন।
 
 
 ২১ আগস্ট আশিষের বন্ধু এনং তাঁর স্ত্রী অগ্রিম জামিনের জন্য আবেদন করেন এবং আদালত তা মঞ্জুর করে। পুলিশ জানিয়েছে, শুনানির সময় অভিযোগকারিণী উপস্থিত থাকলেও তিনি নিজের বয়ানে বন্ধুর নাম উল্লেখ করেননি।
 
 
 তদন্তকারীরা জানান, সিসিটিভি ফুটেজ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে দেখা গিয়েছে, পার্টির সময় আশিষ এবং ওই মহিলা একসাথে বাথরুমে প্রবেশ করেছিলেন এবং কিছুক্ষণ বার হননি। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে অন্যান্য অতিথি এবং আয়োজক দরজায় নক করতে শুরু করেন।
জানা যায়, দু’পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বিতর্ক হয়, যা সোসাইটির গেট পর্যন্ত পৌঁছে যায়। পুলিশ আরও জানিয়েছে, শেষ পর্যন্ত ওই বন্ধুর স্ত্রীই পিসিআর কলে ফোন করে ঘটনাটি জানান।
আশিষ ২০১০ সালে টেলিভিশন জগতে আত্মপ্রকাশ করেন ‘শশশ… কোই হ্যায়’ ধারাবাহিকের মাধ্যমে। এরপর তিনি বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় শোয়ে অভিনয় করেন, যার মধ্যে রয়েছে ‘দেখা এক খোয়াব’, ‘সরস্বতীচন্দ্র’, এবং ‘মোলক্কি – রিশতো কি অগ্নিপরীক্ষা’। বিশেষ করে ‘দেখা এক খোয়াব’এ যুবরাজ উদয়বীর সিংহের চরিত্রে আশিষের অভিনয় তাঁকে আলাদা পরিচিতি এনে দেয়।
 
 এছাড়াও আশিষ জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ইয়ে রিশতা ক্যা কেহলাতা হ্যায়’-তেও অভিনয় করেছেন। তখন হিনা খান এবং করণ মেহরা শোয়ের অংশ ছিলেন। সেখানে তিনি নৈতিকের বোন রশমির স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করতেন।
আশিষ গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁর অনুরাগীও হতবাক। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আইনি প্রক্রিয়া মেনে তদন্ত এগোচ্ছে এবং আশিষের বিরুদ্ধে ধর্ষণের ধারায় মামলা চলবে। তদন্ত এখনও চলছে।
