আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ঘিরে আরও এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড।‌ আবারও নির্মমভাবে খুন করা হল এক যুবককে। একাধিক বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িত ছিল স্ত্রী। আর সম্পর্কে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ওই যুবক। পথের কাঁটাকে চিরতরে গায়েব করতেই খুনের পরিকল্পনা করে স্ত্রী। 

জানা গেছে, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল যুবতী। একদিকে দেওর, অন্যদিকে জামাই। দু'জনের সঙ্গেই শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হত সে। একাধিকবার হাতেনাতে ধরাও পড়েছিল। যা ঘিরে তুমুল অশান্তি শুরু করেন যুবক। এই অশান্তি থামাতেই খুনের পরিকল্পনা করে যুবতী। তাও আবার দেওর ও জামাইয়ের সঙ্গে মিলে। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের মাধেপুরা জেলায়। মুরলিগঞ্জ থানার পুলিশ জানিয়েছে, উর্মিলা দেবী নামের এক মহিলা থানায় ছেলের খুনের ঘটনাটি জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে এসেছিলেন। তিনি জানান, ছেলে যশবন্ত যাদব ও তাঁর স্ত্রী পুনীতা দেবীর মধ্যে তিনবছর ধরে আইনি ঝামেলা চলছিল। এই সময়ের মধ্যে পুনীতা জামাই অমিত কুমার ও দেওর রাজেশ যাদবের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরেছিলেন যশবন্ত। স্ত্রীর সঙ্গে এই নিয়ে ঝামেলাও করেন। তারপরেই যশবন্তকে খুনের পরিকল্পনা করে পুনীতা। 

আরও পড়ুন: মাত্র দেড় মাস আগে আলাপ, মাখো মাখো প্রেমের জন্য স্বামীকে খুন! দেহে নুন ছড়িয়ে দিয়েছিল স্ত্রী, রাজস্থানের নীল ড্রাম কাণ্ডে আরও রহস্য

পুত্রবধূর বিরুদ্ধে আরও বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন শাশুড়ি। তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন, জামাই অমিতের সঙ্গে নিত্যদিন যোগাযোগ রাখার জন্য, নাবালিকা মেয়েকে তার সঙ্গে বিয়ে দেয় পুনীতা। মেয়ের সঙ্গে অমিতের বিয়ের পরেও, নিয়মিত যোগাযোগ রাখে সে। এমনকী অমিতের নামে এক বিঘা জমি লিখে দেওয়ার জন্যেও জোরাজুরি করতে শুরু করে সে। যাতে আপত্তি জানান যশবন্ত। 

গত ১৭ আগস্ট রাতে পুনীতা, অমিত, রাজেশ এবং তাদের কয়েকজন পরিচিত যুবক মিলে যশবন্তকে সার কিনে দেওয়ার টোপ দিয়ে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। ফাঁকা জমিতে নিয়ে গিয়ে যশবন্তের গলা কেটে খুন করে তারা। যশবন্তের রক্তাক্ত দেহটি মাঠে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা। 

পরদিন সকালে যুবকের রক্তাক্ত দেহ দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যশবন্তের ছবি তুলে ছড়িয়ে দেয় পুলিশ। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মাধেপুরা জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। পাশাপাশি খোঁজ শুরু হয় তাঁর পরিবারের। তখনই যশবন্তের পরিবার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে। 

যশবন্তের তুতো ভাই রমানন্দ যাদব উর্মিলার সমস্ত অভিযোগ সত্যি বলেই পুলিশকে জানিয়েছেন। তিনি এও জানিয়েছেন, অমিতের সঙ্গে পুনীতার দীর্ঘদিন ধরেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল। নাবালিকা মেয়ের বিয়ের পর অমিতের সঙ্গে তার বাড়িতে গিয়ে থাকত। 

মুরলিগঞ্জ থানার পুলিশ আধিকারিক অজিত কুমার জানিয়েছেন, এই ঘটনায় এফ আই আর দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত পুনীতা, রাজেশ এবং আরও এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অমিত সহ বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। শীঘ্রই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। সকলের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।