আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাবা ভাঙ্গা। তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে বছরভর চর্চা চলছে। বহু যুগ আগে, তিনি এমন অনেককিছুই বলে গিয়েছেন, সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনার সঙ্গে মিলিয়ে আঁতকে উঠছেন। 

২০২৬ সাল থেকেই এবার চিন্তা ২০৪৪ নিয়ে। বাবা ভাঙ্গা ২০৪৪ সাল নিয়ে করে গিয়েছেন ভয়ঙ্কর ভবিষ্যদ্বাণী। আর তা সামনে আসতেই তীব্র আতঙ্ক। এখন থেকেই ওই নির্দিষ্ট জায়গার বাসিন্দারা ভয়ে কাঁপছেন। যদি মিলে যায় ভবিষ্যদ্বাণী, তাহলে কী হবে তাঁদের? কে কোথায় যাবেন? পরিস্থিতি যাবে কোনদিকে?

কী এমন বলেছেন বাবা ভাঙ্গা? 
বাবা ভাঙ্গার ভবিষ্যদ্বাণী, ২০৪৪ সালে সাফ হয়ে যাবে গোটা ইউরোপ। সব বদলে যাবে রোমেরও। তথ্য, বাবা ভাঙ্গা ভবিষ্যদ্বাণীতে জানিয়েছেন, এখন রোমে যেখানে ভ্যাটিকানসিটি রয়েছে, পোপের হেডকোয়ার্টার রয়েছে, ১৮ বছর বাদে সেখানে চলবে খলিফা-রাজ। ১৯ বছর পরে, সাফ হয়ে যাবে ইউরোপ। 

নিউ ইয়র্ক পোস্ট-এর তথ্য, বাবা ভাঙ্গা "গ্রেট মুসলিম ওয়ার" সম্পর্কে নানা মন্তব্য করেছেন। ২০১০ প্রসঙ্গে তিনি ভয়াবহ ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, যেখানে তিনি সিরিয়ায় একটি যুদ্ধ হবে বলে দাবি করেছিলেন। সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, ২০৪৩ সালের মধ্যে রোমের কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত হবে খিলাফৎ শাসন। 

এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বহু যুগ আগেই তিনি জানিয়েছেন, বিশ্বের ধ্বংস ২০২৫ সালে শুরু হবে, যদিও তিনি জোর দিয়ে বলেছেন যে, ৫০৭৯ সালের আগে মানবতা সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হবে না। ইউরোপে ভবিষ্যদ্বাণীকৃত সংঘাতের পাশাপাশি, তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে ২০৪৩ সালের মধ্যে, ইউরোপ মুসলিম শাসনের অধীনে চলে যাবে এবং ২০৭৬ সালের মধ্যে, বিশ্বব্যাপী কমিউনিস্ট শাসন ফিরে আসবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে একটি প্রাকৃতিক ঘটনার কারণে ৫০৭৯ সালে পৃথিবী শেষ হয়ে যাবে।

 

আরও পড়ুন: ভোটের আগে বড় ধাক্কা আরজেডির, দুর্নীতি মামলায় লালু-রাবড়ি-তেজস্বীদের বিরুদ্ধে

২০২৬-এর শুরু থেকেই ব্যাপক চর্চা তাঁর বার্তা-বক্তব্য নিয়ে। বাবা ভাঙ্গার নামে প্রচারিত তথ্যে বলা হয়েছে, ২০২৬ সাল হবে “যন্ত্র শাসনের সূচনা”। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) মানুষের জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে সরাসরি প্রভাব ফেলবে—চাকরি, প্রশাসন, এমনকি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগ্রহণেও। বিশ্লেষকরা বলছেন, এআই প্রযুক্তির বর্তমান দ্রুত উন্নতি এই আশঙ্কাকে কিছুটা বাস্তবসম্মত করে তুলছে। ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, ২০২৬ সাল প্রকৃতির “প্রতিশোধের বছর”। বিশাল ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, এবং চরম জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর প্রায় ৭–৮ শতাংশ ভূমিপৃষ্ঠ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের মতে, চলমান বৈশ্বিক উষ্ণতা ও অস্বাভাবিক আবহাওয়া ইতিমধ্যেই এই দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

সবচেয়ে বিতর্কিত দাবি—২০২৬ সালের নভেম্বরে একটি বিশাল মহাকাশযান নাকি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে, যা মানবজাতির সামনে ভিনগ্রহের জীবনের অস্তিত্ব প্রকাশ করবে। বিজ্ঞানীরা অবশ্য এমন কোনও ঘটনার সম্ভাবনাকে একেবারেই নাকচ করেছেন, কিন্তু সামাজিক মাধ্যমে এই ভবিষ্যদ্বাণী নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। বাবা ভাঙ্গার আরেকটি ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ২০২৬ সালে বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্রীয় শক্তি হিসেবে উঠে আসবেন। তাঁর নেতৃত্বে রাশিয়া নতুন যুগের ক্ষমতার কেন্দ্র হয়ে উঠবে বলে দাবি করা হচ্ছে। ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই বক্তব্যকে অনেকে রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন। যদিও ভাঙ্গার জীবিত অবস্থায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ধারণা ছিল অচেনা, তবুও তিনি বলেছিলেন, বিজ্ঞানীরা এক সময় বুঝতে পারবেন যে তারা প্রযুক্তিগত অগ্রগতিতে “অতিরিক্ত দূর” চলে গেছেন। তাঁর অনুসারীরা মনে করেন, ২০২৬ সালেই এ বিষয়ে বিশ্বব্যাপী নৈতিক বিতর্ক দেখা দিতে পারে।

বিগত বছরগুলিতে তাঁর অনেক ভবিষ্যদ্বাণী বাস্তবে মিলেছে বলেও বিশ্বাসীদের দাবি। উদাহরণস্বরূপ, তিনি আগে থেকেই বলেছিলেন যে এই দশকের শুরুতে বিশ্বের কয়েকটি বড় শহর তীব্র খরার কবলে পড়বে। সত্যিই ২০২২ সালে ব্রিটেনের জুলাই মাস হয়েছিল ১৯৩৫ সালের পর সবচেয়ে শুষ্ক। এমনকি ১৯৮৯ সালেই তিনি ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বলেও অনেকের বিশ্বাস। এই কারণেই ২০২৬ সাল নিয়ে তাঁর ভবিষ্যদ্বাণীগুলি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্বজুড়ে আগ্রহ ও আতঙ্ক ছড়িয়েছে। জানা গেছে, আসন্ন বছরটি মোটেও সহজ হতে যাচ্ছে না।