রিয়া পাত্র
জুলাই পেরিয়ে আগস্ট। আন্দোলন-সংঘর্ষ-রাজনৈতিক পালাবদলে উত্তাল পদ্মাপাড়। তীব্র আন্দোলনের মুখে দাঁড়িয়ে পতন হয়েছে হাসিনা সরকারের। সোমবার দুপুরে, তীব্র জল্পনা শুরু হয়, পরিস্থিতি বিচারে দেশ ছেড়েছেন মুজিবকন্যা। কিছুক্ষণেই স্পষ্ট হয়ে যায়, সোনার বাংলায় সেনা-শাসন জারির কথা। সেনা প্রধানের কথায় স্পষ্ট হয়, হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের কথা। তারপরেই বাংলাদেশের একটা অংশ ফেটে পড়ে খুশিতে-উচ্ছ্বাসে। সমাজমাধ্যমে লেখা হতে থাকে, ‘স্বাধীনতার দিন। ৩৬ জুলাই।‘ 

ক্যালেন্ডারের হিসেবে দিন তখন আগস্ট ৫। তাহলে ৩৬ জুলাই কেন? আন্দোলনকারীরা বলছেন, আন্দোলন চলেছে সমগ্র জুলাই জুড়ে। জুলাইয়ের শুরুতে শুরু হয় কোটা বিরোধী আন্দোলন। এই কোটা বিরোধী আন্দোলন নানা সময়ে নানা দফায় চলেছে। গতকাল পর্যন্ত চলা আন্দোলনের শেষ পর্যায়ে দাবি ছিল এক দফা। জুলাই জুড়ে আন্দোলন চলেছে, আন্দোলনের মাঝে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে প্রাণ গিয়েছে বহু পড়ুয়ার। সেই কারণেই আগস্ট শুরু হলেও, নিজেদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আগস্ট মাসের দিনগুলিকেও জুলাই হিসেবে গণনা করছিলেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের বক্তব্য ছিল, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শেষ হবে না জুলাই। সেদিক থেকে ৫ আগস্ট, হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের পর ওই দিনটিকে ৩৬ জুলাই, স্বাধীনতা দিবস হিসেবে উল্লেখ করছেন আন্দোলনকারীরা। এই ৩৬ জুলাই হয়ে রইল বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ দিন।

এক নজরে দেখা যাক বাংলাদেশের আন্দোলনের কথা। ১ জুলাই শুরু হয় কোটা বিরোধী আন্দোলন। আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে ১৬ জুলাই। ৬ জনের মৃত্যু হয়। বিক্ষোভকারীরা ঘোষণা করেন ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এর কথা। ২১ জুলাই বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট কোটায় আমূল সংস্কারের কথা ঘোষণা করে। আন্দোলন আরও তীব্র হয় আগস্টের শুরু থেকে। ৫ আগস্ট উত্তাল পরিস্থিতিতে হাসিনা-রেহানা দেশত্যাগ করেন। হাসিনা পদত্যাগ-দেশত্যাগ করলেও, এখনও উত্তাল পদ্মাপাড়। ভাঙল ঘরবাড়ি-জ্বলল আগুন। পাল্লা দিয়ে বাড়ল মৃতের সংখ্যা। দেশের নানা জায়গায় ভাঙা হল মুজিবের মূর্তি, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে ধানমন্ডি-৩২-এও।