আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্বপ্নের বাড়ি। কার না শখ থাকে?
সেই ইচ্ছেপূরণ হলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠার কথাই। স্বপ্নের বাড়ি ঘিরে কত পরিকল্পনা থাকে। তিল তিল করে টাকা সঞ্চয় করে স্বপ্নের বাড়ি কেনেন অনেকে। কিন্তু সেই স্বপ্নের বাড়ি যখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়, আর ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়, তখন মন ভেঙে ছারখার। 

এমন এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলেন সারাহ স্মিথ। ঘটনাটি ঘিরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহিওতে‌। ২৮ বছর বয়সি তরুণী ও তাঁর স্বামী কোলিন ২০২৪ সালের মে মাসে তাঁদের স্বপ্নের বাড়ি কিনেছিলেন। বাড়িটির জন্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা খরচ হয়েছিল তাঁর। বাড়িতে পা রাখার পর প্রথম প্রথম সবকিছুই ঠিক ছিল। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ পরেই দুর্বিষহ হয়ে ওঠে তাঁদের জীবন। 

ওই স্বপ্নের বাড়িতে বসবাস শুরু করার কয়েক মাস পরেই জটিল অসুখে ভুগতে শুরু করেন সারাহ। যা দিন কয়েকের মধ্যেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। জ্বর, সর্দি, কাশির মতো উপসর্গ ছিল সারাহর। তাঁর ধারণা ছিল, হাওয়া বদল হওয়ার পর সম্ভবত নতুন জায়গার আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে খানিকটা অসুবিধা হচ্ছে তাঁর। ঠান্ডা লেগেই শরীর বিগড়ে গেছে। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে কয়েকদিন ওষুধ খান। 

আরও পড়ুন: পণের জন্য এত অত্যাচার! নিথর দেহ ভর্তি ক্ষতচিহ্ন, মেয়েকে দেখেই আঁতকে উঠে বাবা বললেন, 'পুরো কঙ্কালের মতো'

কিন্তু ছয় মাস পরেই শারীরিক জটিলতা বাড়তে দেখা যায়। ঠান্ডা লাগার উপসর্গের পাশাপাশি শরীর জুড়ে লাল রঙের ব়্যাশ বের হয়। চোখের চারপাশে চুলকানি শুরু হয়। সারা গায়ে চামড়া শুকিয়ে যায়। এমনকী রক্তপাত হয়। এমন অভিজ্ঞতার সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন সারাহ। অনেকেই তাঁকে পরামর্শ দেন, বাড়িটি আরও একবার ভালভাবে পরীক্ষা করে দেখে নিতে‌। 

বাড়িটি আবারও খতিয়ে দেখার সময় তাঁর দেখতে পান, দূষিত জল ও তার জেরে বাড়ির আনাচে কানাচে নোংরা জমে আছে। বাড়ির ছাদের ভগ্নপ্রায় দশা। সেটি ঢাকার জন্য সাদা রং করা হয়েছে। কার্পেটের তলায় ও দেওয়ালের ভাঁজে রয়েছে ছত্রাক। এসব দেখেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সারাহ। অবসাদেও ভুগতে শুরু করেন। 

তিনি জানিয়েছেন, বাড়িটি নতুন করে ঠিক করতে প্রায় নয় লক্ষ টাকা খরচ করেন তাঁরা। এমনকী বাড়ির ৯০ শতাংশ জিনিসপত্র ফেলে দিতে বাধ্য হন। এর প্রভাব পড়েছে তাঁদের সম্পর্কেও। সারাহ ওয়ার্ক ফ্রম হোম করেন। একটানা বাড়ির এমন পরিবেশে থাকতে থাকতে তিনি অসুস্থ পড়েন। এই পরিবেশের কারণে স্বামীর সঙ্গে আর থাকতে পারেন না। নিজের বাবার বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি মিলিয়ে তিনি থাকেন। 

সারাহ জানিয়েছেন, স্বপ্নের বাড়ি থেকে যখন তিনি দূরে থাকেন, তখন তাঁর স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। আবার ওই বাড়িতে ফিরে এলে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। ছত্রাকের কারণেই তিনি বারবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্বপ্নের বাড়ি কেনার পর এমন বীভৎস অভিজ্ঞতার সম্মুখীন যে হতে হবে, তা ভাবতেও পারেননি সারাহ। শুধুমাত্র আর্থিক ক্ষতিই নয়, স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতিও হল এই বাড়ির জেরে।