আজকাল ওয়েবডেস্ক: লস্কর-ই-তইবা (LeT)-র প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সাঈদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইবতিসাম এলাহী জাহিরকে বাংলাদেশের মাটিতে দেখা গিয়েছে। জানা গিয়েছে, ভারত বাংলাদেশের সীমান্তের একেবারে কাছাকাছি এলাকায় যেতে পারেন তিনি।

হাফিজ সঈদের মতো আতঙ্কবাদীর সহকারীর এই বাংলাদেশ ভ্রমণকে ঘিরে ইতিমধ্যেই বিতর্ক ছড়িয়েছে। সূত্র অনুযায়ী, পাকিস্তানের মারকাজি জামিয়াত আহলে হাদিসের সাধারণ সম্পাদক এবং জাতিসংঘ ঘোষিত সন্ত্রাসবাদী হাফিজ সাঈদের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী জাহির ২৫ অক্টোবর ঢাকায় পৌঁছন।

তারপর থেকেই তিনি সীমান্তবর্তী কয়েকটি সংবেদনশীল জেলায় সফর করছেন, উগ্র ধর্মীয় ভাষণ দিচ্ছেন এবং স্থানীয় মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করছেন। জানা গিয়েছে, গত দু’দিনে তিনি রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ সফর করেছেন। এই সপ্তাহে তাঁর রংপুর যাওয়ার কথা রয়েছে।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর এটি তাঁর দ্বিতীয় বাংলাদেশ সফর।। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেও তিনি এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে ছিলেন। জাহিরের বর্তমান সফরসূচিতে সীমান্তবর্তী একাধিক এলাকা পরিদর্শন এবং একটি বিশাল সালাফি সম্মেলনে অংশগ্রহণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এই সফরকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান-বাংলাদেশ মৌলবাদী নেক্সাসের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, যা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে। হাফিজ সঈদ ২০০৮ সালের মুম্বই সন্ত্রাস হামলার মূলচক্রী। দাবি করা হচ্ছে, হাফিজ এবার তাঁর প্রভাব ধীরে ধীরে বাংলাদেশে ছড়িয়ে ফেলতে চাইছে।

যে কারণে বারবার তাঁর সহকারীকে পাঠানো হচ্ছে বাংলাদেশে। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী জাহির আপাতদৃষ্টিতে ধর্মীয় বক্তৃতার কাজে যুক্ত থাকলেও, সীমান্তবর্তী এলাকায় তাঁর গতিবিধি ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলির মধ্যে সতর্কতা বাড়িয়েছে।

জাহির গত ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দরে নামেন। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান আল জামিয়া আস-সালাফিয়া নামে একটি ইসলামিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সদস্য আবদুর রহিম বিন আবদুর রাজ্জাক। সোমবার তিনি নওদপাড়া থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে যান, সঙ্গে ছিলেন শেখ আবদুর রাজ্জাক বিন ইউসুফ।

সফরের সময় তাঁরা নাচোলসহ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বেশ কিছু এলাকা পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় কয়েকটি মসজিদে বৈঠক করেন। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ২৯ থেকে ৩১ অক্টোবরের মধ্যে জাহির রংপুর, লালমনিরহাট ও নীলফামারী সফর করবেন।

এরপর ১ নভেম্বর জয়পুরহাট এবং ২ নভেম্বর নওগাঁয় যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর। ৬ ও ৭ নভেম্বর তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার ডাঙ্গিপাড়ায় অনুষ্ঠিত একটি বড় সালাফি সম্মেলনে ভাষণ দেবেন।

আগামী ৮ নভেম্বর বাংলাদেশ ত্যাগ করে পাকিস্তানে ফেরার কথা রয়েছে জাহিরের। বাংলাদেশে এই সন্ত্রাসবাদীর সক্রিয় উপস্থিতি নিয়ে ভারতের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা মহলে উদ্বেগ বাড়ছে। পাশাপাশি, নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতেও।