আজকাল ওয়েবডেস্ক:  কুকুরকে আমরা সাধারণত বিশ্বস্ত সঙ্গী বলেই জানি। তবে মানুষের মতো তারাও যে মাঝে মাঝে অদ্ভুত মুডে চলে যায়, তার নিদর্শন মিলল একটি সাম্প্রতিক ভিডিওতে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, এক গোল্ডেন রিট্রিভার—নাম রিও—ব্যালকনিতে বসে আছে, আর কোনোভাবেই নড়ছে না। তার মালিক যতই ডেকে বা খাওয়ার লোভ দেখিয়ে রাজি করানোর চেষ্টা করুন না কেন, রিও একেবারে নীরব প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছে।

ভিডিওতে মালিককে বারবার রিওর নাম ধরে ডাকতে শোনা যায়। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, রিও কি রেগে গেছে? নাকি কিছু খেতে চায়? এমনকি প্রিয় খাবার মুরগির মাংসের কথাও বারবার বলেন। তবুও, রিও কোনো প্রতিক্রিয়া দেয়নি। মালিক মজা করে বলেন, "বাইরে যেতে চাইলে যাও, ভেতরে এলে বলো কী চাইছো। চিকেন খাবে? কিছু না বললে আমি কীভাবে বুঝব?"

এই হাস্যকর মুহূর্তটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, “কখনও ভাবিনি কাউকে এতটা প্যাম্পার করতে হবে। ভাই, গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেন্ডকে তো একটা ‘সরি’ বললেই মেনে নেয়, কিন্তু এই ডগেশ ভাইকে কীভাবে মানাবো!” ভিডিওটি দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ে। অসংখ্য নেটিজেন নানা রকম মন্তব্য করেন। একজন লেখেন, “ও চায় তুমি ব্যালকনিতে গিয়ে ওর সঙ্গ দাও।” আরেকজন বলেন, “কুকুরটা ভাবছে, আরও একটু চেষ্টা করো।” কেউ কেউ মজা করে লিখেছেন, “ও নিজেকে বউ ভাবছে।”

আরও পড়ুন: ফিটনেস বাড়াতে ক্রিয়েটিন ব্যবহার করছেন? কিডনি বাঁচাতে মানুন এইসব নিয়ম, না হলেই অকেজো হওয়ার ভয়

অন্য এক মন্তব্যে বলা হয়, “চিকেনের নাম শোনার সময় ও চোখের পলক ফেলেছিল, মানে ভেতরে ভেতরে রাজি, শুধু অভিমান করছে।” একজন লিখেছেন, “মনে হচ্ছে বাইরে কিছু একটা ও তোমাকে দেখাতে চাইছে।” ভিডিওটি দেখে অনেকেই বলছেন, পোষা প্রাণীরা আসলেই আমাদের জীবনের অদৃশ্য সম্রাট। একজনের  মন্তব্যে যেমন লেখা হয়েছে, “এই বাচ্চারা আমাদের পায়ে নাচায়, আর আমরা আনন্দে সেই নাচ করি।”

রিওর মালিক যতই আদর করে ডাকেন বা প্রশ্ন করেন, গোল্ডেন রিট্রিভারটি ব্যালকনির কোণ ছেড়ে ওঠেনি। তার এই অভিমানী নীরবতা মালিককে যেমন বোকা বানিয়েছে, তেমনই নেটিজেনদেরও প্রবলভাবে আকর্ষণ করেছে। অনেকেই বলছেন, এই ভিডিও প্রতিটি কুকুরপ্রেমীরই পরিচিত অভিজ্ঞতার প্রতিফলন। নিঃসন্দেহে, এই ভিডিও প্রমাণ করল—প্রিয় পোষ্যের মুড বুঝে ওঠা অনেক সময় জীবনের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার মতো।

পোষ্য প্রাণী ও প্রভুর সম্পর্ক শুধু স্নেহ বা দায়িত্বের সীমায় থেমে থাকে না, এর গভীর সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক তাৎপর্য রয়েছে। গবেষণা বলছে, কুকুর-বিড়ালের মতো পোষ্যরা মানুষের মধ্যে একাকীত্ব কমায়, মানসিক চাপ হ্রাস করে এবং আবেগী সমর্থনের উৎস হয়। প্রভুর কাছে পোষ্য যেন পরিবারেরই একজন সদস্য, যে অনিশ্চয়তা বা দুঃখের সময় সান্ত্বনা দেয়। অন্যদিকে, পোষ্যের উপর যত্নশীলতা প্রভুর মধ্যে সহানুভূতি, ধৈর্য ও দায়িত্ববোধ বাড়ায়। সমাজতাত্ত্বিক দিক থেকে, পোষ্যরা মানুষের সামাজিক বন্ধনকে দৃঢ় করে এবং প্রতিবেশী বা বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও একটি সেতুবন্ধনের কাজ করে।