অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা আজকের জীবনে এক বড় স্বাস্থ্য সমস্যা। অনেকেই ভাবেন স্থূলতা শুধু হৃদযন্ত্র, হরমোন বা বিপাকের ওপর ওপর প্রভাব ফেলে। কিন্তু বাস্তবে ত্বকের স্বাস্থ্যের সঙ্গে ওজনের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। স্থূলতা থাকলে ত্বকের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। ফলে সংক্রমণ, কালচে দাগ ও নানা ধরনের চর্মরোগ দেখা দেয়।

আসলে স্থূলতা মানে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমে যাওয়া। যা শুধু চেহারার বদল ঘটায় না, ত্বকের কোষ, রক্ত চলাচল ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপরও প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরে ফ্যাট জমে গেলে রক্তনালীগুলোর কার্যক্ষমতা কমে যায়, ফলে ত্বকে অক্সিজেন ও পুষ্টির সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। এতে ক্ষত সারতে সময় লাগে বেশি এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে। 

আরও পড়ুনঃ একঘেয়ে ডেস্ক থেকে রঙিন 'হ্যাপি স্পেস'! অফিসের এই ৫ পরিবর্তনই বদলে দেবে কর্মস্থলের পরিবেশ

স্থূলতায় ত্বকের কী কী সমস্যা হয়

১️. ফাঙ্গাল বা ছত্রাক সংক্রমণ: শরীরে মেদ বেশি থাকলে ত্বকের ভাঁজ বেশি হয়, যেখানে আর্দ্রতা জমে থাকে। এই আর্দ্র পরিবেশ ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর আদর্শ জায়গা। ফলস্বরূপ ত্বকে চুলকানি, লালচে ফুসকুড়ি ও দুর্গন্ধ হতে পারে।

২️. স্ট্রেচ মার্কস বা দাগ: ওজন বাড়লে ত্বক দ্রুত প্রসারিত হয়, ফলে মাঝের স্তর যেন সূক্ষ্মভাবে ছিঁড়ে যায়। এতে লালচে বা সাদা দাগ তৈরি হয় যা অনেক সময় স্থায়ী হয়ে যায়।

৩️. ক্ষত সারতে দেরি হয়: স্থূল ব্যক্তিদের শরীরে ধীর গতিতে রক্তসঞ্চালন হয়, বিশেষ করে পা ও তলপেটে। এর ফলে ক্ষত শুকাতে বা সারতে সময় বেশি লাগে।

৪️. কালচে দাগ: ওজন বেশি থাকলে ঘাড়, বাহুমূল, স্তনের নিচ বা কুঁচকিতে ঘন, কালচে ভেলভেটের মতো দাগ দেখা যায়। এটি সাধারণত ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের লক্ষণ।

৫️. স্কিন ট্যাগঃ গলায় বা বগলে ছোট ছোট ত্বকের অতিরিক্ত গাঁট তৈরি হয়। এগুলো দেখতে ছোট ঝুলন্ত মাংসপিণ্ডের মতো, যা সাধারণত হরমোনাল ভারসাম্যহীনতা বা ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সের কারণে হয়।

৬️. লিম্ফেডেমা বা পায়ে ফোলা: অতিরিক্ত ওজনের কারণে শরীরের লিম্ফ তরল সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি হয়। বিশেষত পায়ে এটি হতে দেখা যায়। এতে ত্বক ফুলে যায়, শক্ত হয়ে যায় এবং সংক্রমণ হতে পারে।

ত্বকের যত্নে কী করবেন

*প্রতিদিন স্নানের পর ত্বক ভালভাবে শুকিয়ে নিন, বিশেষ করে ভাঁজযুক্ত জায়গাগুলি।
*চিকিৎসকের পরামর্শে হালকা অ্যান্টিফাঙ্গাল পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। 
*শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারে এমন হালকা পোশাক পরুন।
*নিয়মিত ব্যায়াম ও সুষম খাদ্যাভ্যাসে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
*যদি ঘাড় বা বগলে কালচে দাগ, চুলকানি বা ক্ষত দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।