বলিউড অভিনেতা ফারহান আখতারের মা হানি ইরানির গাড়িচালককে প্রতারণার অভিযোগে বান্দ্রা পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত নরেশ সিং (৩৫) ইরানির গাড়িতে জ্বালানি ভরার জন্য ফারহানের কার্ড ব্যবহার করতেন। কিন্তু সে বান্দ্রা পশ্চিমের একটি পেট্রোল পাম্পের কর্মচারী অরুণ সিংয়ের সঙ্গে গোপনে চুক্তি করে জালিয়াতি করছিল। জানা গিয়েছে, অরুণ তাকে কমিশনের বিনিময়ে নগদ টাকা দিতেন। অর্থাৎ ফারহানের কার্ড থেকে তোলা টাকা নিয়ে আদৌ কোনও তেল ভরানো হত না। পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে অরুণ পলাতক।
বান্দ্রা পুলিশ ১ অক্টোবর এই দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। জানা গিয়েছে, ইরানির ম্যানেজার দিয়া ভাটিয়া এই প্রতারণার ঘটনাটি ধরতে পারেন। তখনই তিনি প্রায় ১২ লাখ টাকার অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি পুলিশের কাছে রিপোর্ট করেন। নরেশ বেশ কয়েক বছর ধরে ফারহানের পরিবারের গাড়িচালক হিসেবে কাজ করছিল। এপ্রিল ২০২২ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে, সে বান্দ্রার একটি পেট্রোল পাম্পে গাড়িতে পেট্রোল না ভরেই নগদ টাকা নিয়ে নিতেন।
ঘটনাটি সামনে আসে যখন সে একবারে ৬২ লিটার পেট্রোলের বিল জমা দেয়, অথচ গাড়িটির ট্যাঙ্কের ধারণক্ষমতা মাত্র ৩৫ লিটার। এই অমিল দেখেই সন্দেহের সূত্রপাত হয়। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, নরেশ এমন একটি গাড়ির জন্য ইঞ্জিন অয়েল কেনার এন্ট্রিও করেছেন, যা সাত বছর আগেই বিক্রি হয়ে গিয়েছিল।
পুলিশের মতে, নরেশ বান্দ্রা পশ্চিমের একটি পেট্রোল পাম্পের কর্মী অরুণের সঙ্গে মিলে এই প্রতারণার কাজ চালাতেন। আসলে পেট্রোল না ভরেই নরেশ কার্ড সোয়াইপ করতেন এবং অরুণের কাছ থেকে নগদ টাকা নিতেন। অরুণ প্রতিবার লেনদেনে প্রায় এক হাজার থেকে দেড় হাজার টাকার কমিশন রাখতেন।
হানির ম্যানেজার দিয়া এই সন্দেহজনক কার্যকলাপ ধরার পর নরেশকে ইরানির উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সেই সময় নরেশ প্রতারণার কথা স্বীকার করে নেয়। এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে, নরেশ ২০২২ সালে সন্তোষ কুমার নামে ফারহানের প্রাক্তন ড্রাইভারের কাছ থেকে ওই কার্ডগুলি সংগ্রহ করে এবং তখন থেকেই সেগুলি অপব্যবহার করছিল।
দিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে বান্দ্রা পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ৩১৮ (অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ) এবং ৪১৮ (প্রতারণা)-এর অধীনে মামলা দায়ের করেছে। অভিযুক্ত পেট্রোল পাম্প কর্মী অরুণ বর্তমানে পলাতক। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে। পুলিশ এখন পর্যন্ত কত টাকা আত্মসাৎ হয়েছে এবং এই চক্রে অন্য কেউ জড়িত কি না, তা যাচাই করছে।
