ঘুম মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অন্যতম ভিত্তি। কিন্তু আধুনিক জীবনের চাপ, অত্যাধিক স্ক্রিনের ব্যবহার, অনিয়মিত সময়সূচি-সব মিলিয়ে ইদানীং কমবয়সিরাও অনিদ্রার সমস্যায় ভোগেন। যার জন্য ঘুমের ওষুধের ওপর ভরসা করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে রাতে কয়েকটি সহজ অভ্যাস মেনে চললে ঘুমের মান অনেকটাই উন্নত হতে পারে।

সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, যাঁরা রাতে শোওয়ার আগে ডায়েরি লেখেন বা কৃতজ্ঞতার তালিকা তৈরি করেন, তাঁরা অন্যদের তুলনায় অনেক ভাল ঘুমান। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, দিনের শেষ ভাগে নিজের অনুভূতি কাগজে লেখা মস্তিষ্ককে হালকা করে, দুশ্চিন্তা কমায় এবং মানসিক শান্তি আনে। এতে কর্টিসল নামক স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমে যায়, ফলে শরীর ঘুমের জন্য প্রস্তুত হয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ‘গ্র্যাটিটিউড জার্নালিং’ বা কৃতজ্ঞতার ডায়েরি লেখার ফলে ঘুমের সময় বৃদ্ধি পায়, ঘুম কম ভাঙে এবং সকালে ঘুম ভাঙার পর মন থাকে সতেজ। বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে ঘটে যাওয়া তিনটি ভাল ঘটনার কথা লিখে রাখার অভ্যাসটি সবচেয়ে কার্যকর।

তাছাড়া, ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে মোবাইল বা টিভির স্ক্রিন থেকে দূরে থাকা এবং নরম আলোতে নিজের চিন্তা সাজানোও ঘুমের মান উন্নত করে। স্ক্রিন থেকে বেরনো ‘ব্লু লাইট’ মেলাটোনিন হরমোনের নিঃসরণে বাধা দেয়, যা ঘুমের ছন্দ নষ্ট করে। তাই বিছানায় যাওয়ার আগে যদি কেউ বই পড়ে, ধ্যান করে বা ডায়েরি লেখে, তার ঘুমের গভীরতা ও সময়-দুটিই বেড়ে যায়।

ঘুম বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতে নিজের মনের কথা লিখে ফেলা মানে দিনের অগোছালো চিন্তাগুলোকে গুছিয়ে রাখা। এতে মন শান্ত হয়, উদ্বেগ কমে এবং ঘুমে সহায়তা করে। সুতরাং, ঘুমের ওষুধের উপর নির্ভর না করে রাতে শোওয়ার আগে কয়েক মিনিট সময় নিজের জন্য রাখুন। আলো কমিয়ে, ফোন সরিয়ে রেখে, একটি নোটবুকে লিখুন-আপনি সারাদিনের কোন তিনটি বিষয় নিয়ে কৃতজ্ঞ। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পার্থক্য টের পাবেন যে ঘুম হবে গভীর, মন থাকবে শান্ত।