আজকাল ওয়েবডেস্ক: মঙ্গলবার সন্ধেয় ল্যান্ডফলের সম্ভাবনা। তার আগে, মঙ্গলবার সকালে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, ল্যান্ডফলের জায়গার দিকে আরও এগোল ঘূর্ণিঝড় মান্থা। সঙ্গে শক্তি বাড়িতে শক্তিশালী মান্থা অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে ইতিমধ্যেই।
 
 সোমবার বিকেলে হাওয়া অফিস জানিয়েছিল,১৫-এর বদলে ঘণ্টায় ১৭ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড়। কমছে দূরত্বও। তামিলনাড়ু থেকে প্রায় ৪৪০ কিমি পূর্ব - দক্ষিণ পূর্বে, অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া থেকে ৪৯০ কিমি দক্ষিণ - দক্ষিণ পূর্বে, বিশাখাপত্তনম থেকে ৫৩০ কিমি দক্ষিণ - দক্ষিণ পূর্বে, ওড়িশার গোপালপুর থেকে ৭১০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। মঙ্গলবার সকালে জানা গেল, সেই দূরত্ব কমেছে আরও। ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ের অবস্থান সম্পর্কে হাওয়া অফিস জানিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া থেকে ২৭০ কিমি দক্ষিণ - দক্ষিণ পূর্বে, বিশাখাপত্তনম থেকে ৩৪০ কিমি দক্ষিণ - দক্ষিণ পশ্চিমে, ওড়িশার গোপালপুর থেকে ৫৫০ কিমি দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়টি।
আরও পড়ুন: জোড়া ঘূর্ণিঝড়ের সাঁড়াশি আক্রমণ! পূর্ব-পশ্চিমের যৌথ দুর্যোগে আশঙ্কার মেঘ বাংলাতেও
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে টানা অগ্রসর হয়ে ২৮ তারিখ সন্ধের দিকে কাকিনাড়ার আশেপাশে মছলিপত্তনম এবং কলিঙ্গপত্তনমের মধ্য দিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাবনা রয়েছে। তার আগে, আজ সকালেই মান্থা অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে গিয়েছে। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা। ল্যান্ডফলের সময় এর গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে রাত সাড়ে ১১টার মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূল মছলিপত্তনাম - কলিঙ্গপত্তনাম (কাকিনাড়ার কাছে) দিয়ে বয়ে যাবে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মান্থা। সেই সময় ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিমি হতে পারে। সর্বোচ্চ গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় ১১০ কিমিও হতে পারে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাতের মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া এবং মছলিপত্তনম উপকূলের মধ্যে কোনও একটি জায়গায় ল্যান্ডফল হবে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মান্থার। এর জেরে ২৭ অক্টোবরের মধ্যে সমুদ্র থেকে মৎস্যজীবীদের ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আগামী মঙ্গলবার ২৮ অক্টোবর থেকে বৃহস্পতিবার ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় ৫৫ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারার সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তাল থাকবে সমুদ্র। এই তিনদিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আগামী সোমবারের মধ্যে সমুদ্র থেকে ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে মান্থার প্রভাবে শুক্রবার পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায় ভারী বৃষ্টি, ঝড়ের সম্ভাবনা। জারি হলুদ সতর্কতা। মঙ্গলবার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৭ থেকে ১১ সেমি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে হাওয়া অফিস। বুধবার পুরুলিয়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, বীরভূমে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। বাকি সব জেলাতেও ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা। হলুদ সতর্কতা জারি করেছে মৌসম ভবন।
মঙ্গলবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ৩৩.২ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকবে ২৬ ডিগ্রি। সকালের দিকে শহরের আকাশ পরিষ্কার থাকলেও, বিকেল গড়াতেই আকাশ হবে মেঘলা। তেমনটাই জানাচ্ছে হাওয়া অফিস।
মান্থার প্রভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কর্নাটক, রাজস্থান, গুজরাট, কেরল, মাহে, ওড়িশা, রয়েলসীমা, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি ও করাইকালে। এছাড়া ছত্তিশগড়, কর্নাটক, কঙ্কন-গোয়া ও মধ্যপ্রদেশ সংলগ্ন এলাকাতেও ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
