গত ২৫ অক্টোবর প্রয়াত হয়েছেন বলিউড অভিনেতা সতীশ শাহ। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা বিনোদন জগতে। প্রথমে খবর এসেছিল, ‘সারাভাই ভার্সেস সারাভাই’ খ্যাত এই তারকা কিডনি ফেলিওরের কারণে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। কিন্তু তাঁর সহঅভিনেতা রাজেশ কুমার পরে বর্ষীয়ান অভিনেতার মৃত্যুর আসল কারণ জানিয়েছেন।

৭৪ বছর বয়সী সতীশ শাহর মৃত্যু রপর প্রযোজক অশোক পণ্ডিত সমাজ মাধ্যমে লেখেন, কিডনি বিকল হওয়ায় অভিনেতা হিন্দুজা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এরপরেই তাঁর মৃত্যু নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। রাজেশ কুমার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “হ্যাঁ, তাঁর কিডনির কিছু সমস্যা ছিল, তবে সেটি নিয়ন্ত্রণে ছিল। আসল কারণ ছিল হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট। আর তাতেই এক মুহূর্তেই সব শেষ।” রাজেশ জানিয়েছেন, ঘটনার সময় সতীশ শাহ বাড়িতেই ছিলেন। দুপুরে খাবার খাওয়ার সময় হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়েন। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে আর বাঁচানো যায়নি। এই আকস্মিক মৃত্যুতে সহকর্মীরা যেমন হতবাক, তেমনি দর্শকরাও স্তব্ধ।

আরও পড়ুনঃ মাত্র ২৫ বছরেই শেষ প্রাণ! কেন আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন বলিউডের এই জনপ্রিয় অভিনেতা?

চার দশকেরও বেশি সময় জুড়ে প্রসারিত সতীশ শাহের অভিনয় জীবন। ‘ইয়ে জো হ্যায় জিন্দেগি’, ‘মেইনে পেয়ার কিয়া’, ‘জব উই মেট’, ‘কাল হো না হো’ সহ অসংখ্য জনপ্রিয় ছবি ও ধারাবাহিকে তিনি দর্শকের মন জয় করেছেন। কিন্তু সবচেয়ে বেশি মনে গেঁথে গেছে ‘ইন্দ্রবর্ধন সারাভাই’ চরিত্রটি, যা আজও ভারতীয় টেলিভিশনের ক্লাসিক কমেডির প্রতীক। ১৯৮৪ সালে টেলিভিশন সিটকম ‘ইয়ে যা হ্যায় জিন্দেগি’-তেই বড় সুযোগ পান সতীশ। সেখানে তিনি অভিনয় করেছিলেন প্রায় ৫৫টি ভিন্ন চরিত্রে! প্রতিটি চরিত্রে আলাদা ভঙ্গি, উচ্চারণ আর হাস্যরসে ভরা। ধারাবাহিকটি চলেছিল দু' বছরেরও বেশি, আর হয়ে ওঠে দারুণ জনপ্রিয়। পরে ‘ফিল্মি চক্কর’ ও ‘ঘর জামাই’–এও দর্শকের মন জয় করেন তিনি। তবে ‘সারাভাই ভার্সেস সারাভাই’ তাঁকে পৌঁছে দেয় এক অনন্য উচ্চতায়, যেখানে তিনি হয়ে ওঠেন একেবারে পরিবারের মানুষ।

সতীশের মৃত্যুর পর তাঁর সহঅভিনেতা রত্না পাঠক শাহ, সুমিত রাঘবন, ও নির্মাতা আতীশ কাপাডিয়া সামাজিক মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। লিখেছেন, “ওঁর উপস্থিতিতেই সেটের পরিবেশ প্রাণবন্ত হয়ে উঠত। এমন মানুষ একবারই জন্ম নেন।” বলিউড থেকে সাধারণ দর্শক- সকলেই বলছেন, সতীশ শাহ ছিলেন হাস্যরসের এক জীবন্ত পাঠশালা। তাঁর সহজ অভিনয় ও বুদ্ধিদীপ্ত সংলাপের স্মৃতি চিরকাল রয়ে যাবে দর্শকের হৃদয়ে। কিংবদন্তি এই অভিনেতাকে মুম্বইয়ের বাসভবনে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। উপস্থিত ছিলেন তাঁর সহকর্মী, বন্ধুবান্ধব, ও অসংখ্য অনুরাগী।