বলিউডের ‘হিরো নম্বর ওয়ান’ গোবিন্দা নয়ের দশকে বক্স অফিস কাঁপালেও, তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে গুঞ্জন সবসময় শিরোনামে থেকেছে। বিশেষ করে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক তাঁকে বহুবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসে। এবার বিস্ফোরক স্ত্রী সুনীতা আহুজা। নায়ক-স্বামীর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে ডিভোর্স ফাইল করেছেন তিনি।

কেরিয়ারের শীর্ষে থাকাকালীন গোবিন্দা যখন একের পর এক সুপারহিট ছবি দিচ্ছেন, তখনই শোনা যেতে থাকে তাঁর প্রেমঘন সম্পর্কের গুঞ্জন।

গোবিন্দার নাম জড়িয়েছিল একাধিক অভিনেত্রীর সঙ্গে। বিশেষ করে নীলম কোঠারির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে বলিউডের গসিপের পাতা গরম ছিল দীর্ঘদিন। শোনা যায়, তাঁদের সম্পর্ক একসময় এতটাই গভীর হয়েছিল যে, বিয়ের জল্পনাও উঠেছিল। তবে সেই অধ্যায় শেষ হয়ে যায় নানা কারণে।

গোবিন্দা ও নীলমের পরিচয় হয়েছিল আটেপ দশকের মাঝামাঝি। ১৯৮৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘ইলজাম’–এ দুজন প্রথমবার একসঙ্গে কাজ করেন। ছবিটি সফল হওয়ার পর দর্শক তাঁদের জুটিকে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করে। এরপর একসঙ্গে তাঁরা একাধিক সিনেমায় কাজ করেন—যেমন ‘লাভ ৮৬’, ‘খুদগর্জ, ‘হাতিয়ার’  সেই তালিকায় ছিল।

সেটেই ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। একাধিক প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, গোবিন্দা নীলমকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন এবং সম্পর্ককে বিয়ে পর্যন্ত নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু গোবিন্দার পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নেয়নি। গোবিন্দার মা চেয়েছিলেন, ছেলে যেন পরিবারে নির্বাচিত মেয়ে সুনীতাকে বিয়ে করে। অবশেষে ১৯৮৭ সালে পারিবারিক চাপে গোবিন্দা সুনীতাকে বিয়ে করেন। তবে শোনা যায়, নীলমকে তিনি ভুলতে পারেননি সহজে।

বিয়ের পরও নীলমের সঙ্গে গোবিন্দার নাম জড়িয়েছিল। ইন্ডাস্ট্রিতে কানাঘুষা চলত যে, তাঁরা এখনও যোগাযোগ রাখছেন। এই পরিস্থিতি নাকি গোবিন্দার দাম্পত্য জীবনে অশান্তি তৈরি করেছিল। কিছু সংবাদমাধ্যমে এমনও দাবি করা হয়, সুনীতা নাকি এই কারণে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন এবং সংসার ভাঙনের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছিল।


এখানেই শেষ নয়। রানি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তাঁর নাম জড়ায়। ২০০০ সালের শুরুর দিকে সবচেয়ে আলোচিত সম্পর্কগুলির মধ্যে একটি ছিল নায়ক-নায়িকার অঘোষিত ঘনিষ্ঠতা।

‘হাদ কর দি আপনি’  ছবির শুটিংয়ের সময় থেকেই তাঁদের ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে। শুটিং সেটে নাকি তাঁদের সময় কাটানো, হাসি–ঠাট্টা ও বাড়তে থাকা সখ্য চোখে পড়েছিল অনেকের। ধীরে ধীরে শোনা যেতে থাকে, গোবিন্দা প্রায়ই রানির বাড়িতে যেতেন এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানে কাটাতেন। সুইজারল্যান্ড এবং আমেরিকার মতো আন্তর্জাতিক ও চমকপ্রদ লোকেশনে শুটিং করতে গিয়ে দু’জনের মধ্যে বন্ধুত্ব আরও গভীর হয়। শুটিং সেটে সময় কাটানোর পাশাপাশি অফস্ক্রিনেও তাঁদের বোঝাপড়া দর্শকের চোখ এড়ায়নি। ছবির কাজ শেষ হওয়ার পরও তাঁদের যোগাযোগ বজায় থাকে। পেশাদার সম্পর্ক ধীরে ধীরে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতায় রূপ নেয়, আর এই সময় থেকেই তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে বলিউডের অন্দরমহলে গুঞ্জন শুরু হয়।

একজন খ্যাতনামা সাংবাদিক নাকি তাঁদের দু’জনকে এক হোটেল রুমে একসঙ্গে দেখে ফেলেছিলেন—এমনই খবর ছড়িয়ে পড়ে। এরপরই গোটা বলিউডে তোলপাড় শুরু হয়। পত্রপত্রিকা ও টিভি চ্যানেলে এই খবর প্রধান শিরোনাম হয়। ঘটনাটি গোবিন্দার ব্যক্তিগত জীবনে তীব্র ঝড় তোলে। স্ত্রী সুনীতা আহুজা ভীষণভাবে আহত হন এবং সংসারে চরম অশান্তি তৈরি হয়।

এক মরাঠি অভিনেত্রীর সঙ্গেও গোবিন্দার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের গুঞ্জন শোনা যায়। সেই অভিনেত্রীর নাম যদিও প্রকাশ্যে আসেনি এখনও। তবে জানা গিয়েছে, সেই ললনার বয়স গোবিন্দার অর্ধেক।

শুধু তা-ই নয়। এক সময় দিব্যা ভারতী, রবীনা ট্যান্ডন এবং মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গেও নাম জড়ায় তাঁর।