আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাশিয়া ভারত থেকে তেল কেনে, সেটাই মূল ক্ষোভের কারণ। এই কারণ দেখিয়ে ভারতের উপর বিপুল অঙ্কের শুল্ক আরোপ করেছে মার্কিন মুলুক। এবার আরও বড় দাবি মার্কিন প্রেসিডেন্টের। দাবি করেছেন, রাশিয়া থেকে তেল কেনা কমিয়ে দেবে ভারত। দিন কয়েক আগেও এই মন্তব্য করেছিলেন তিনি। দীপাবলির আগে তিনি জানিয়েছিলেন, ভারত রাশিয়া থেকে আর বেশি পরিমাণে তেল কিনবে না বলেই দাবি করেছে। ট্রাম্পের বক্তব্য ছিল, ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন, রাশিয়া থেকে তেল না কেনার বিষয়ে।
ঠিক একই দাবি করলেন ফের। এশিয়ান সামিট-এ এসে ফের দাবি করলেন, ভারত আর রাশিয়া থেকে আগের মতো তেল কিনবে না। যদিও ভারত ট্রাম্পের এই বক্তব্য সমর্থন করেনি। ট্রাম্পের আগের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কেন্দ্র জানিয়েছিল, এক্ষত্রে অগ্রাধিকার পাবে দেশের জাতীয় স্বার্থ এবং ভারতীয় ভোক্তাদের চাহিদা। একই সঙ্গে রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছিলেন, বিদেশমন্ত্রণালয় দুই নেতার মধ্যে কোনও 'টেলিফোন কথোপকথন'-এর বিষয়ে অবগতই নয়।
 
 রবিবার এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এই মন্তব্য করেন।  উচ্চ শুল্ক এবং নয়াদিল্লির রাশিয়ান তেল ক্রয়ের কারণে ভারত ও আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কে টানাপোড়েন, একথা ট্রাম্প নিজেও স্বীকার করেছেন আগেও।  এর মাঝেই জল্পনা ছিল, ট্রাম্প শি জিনপিংয়ের সঙ্গে রাশিয়ার পোল কেনা নিয়ে আলোচনা করবেন কি না। সাংবাদিকরা এই প্রশ্ন করলে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাফ জানান, 'আমি হয়তো আলোচনা করছি।' ভারতের রাশিয়া  থেকে তেল কেনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'আপনারা জানেন, ভারত আমাকে জানিয়েছে তারা বন্ধ করতে চলেছে, যদিও এটি একটি প্রক্রিয়া, একদিনে দুম করে বন্ধ করা যায় না।' বছরের শেষ নাগাদ ভারত ৪০ শতাংশ তেল ক্রয় কমিয়ে দেবে বলেও দাবি করেছেন তিনি। 
এর আগে তিনি দাবি করেন, আট মাসে তিনি আটটি যুদ্ধ থামিয়েছেন, অর্থাৎ গড়ে প্রতি মাসে একটি করে যুদ্ধ থামিয়েছেন তিনি। তাঁর মুখে এবার পাক-আফগান যুদ্ধ থামানোর বার্তা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, বেশ কিছুদিন আগে শুরু হওয়া পাক-আফগান যুদ্ধের সমাধান হতে চলেছে শ্রীঘ্রই এবং তাঁর মধ্যস্থতাতেই। তিনি চাইলেন নাকি তুড়ি মেরে অবসান ঘটাতে পারেন যাবতীয় দ্বন্দ্বের, দাবি তেমনটাই। পাক প্রধানমন্ত্রী এবং সেনা প্রধানের প্রশস্তিও শোনা যায় তাঁর মুখে। ট্রাম্প এদিন দু' জনের নাম উল্লেখ করে বলেন, তাঁরা চমৎকার মানুষ। তিনি নিশ্চিত, যুদ্ধ থামবে শ্রীঘ্রই।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, কুয়ালালামপুরে ৪৭তম দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলির সংগঠন (আসিয়ান) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার নেতারা রবিবার দুই দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক সামরিক সংঘাতের অবসান ঘটাতে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। এবং সেই চুক্তি সাক্ষরেও হাজির ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সাক্ষরকে, 'দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সকল মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন' বলে উল্লেখ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে ৮০০ কিলোমিটার সীমান্ত বরাবর অঞ্চল কেন্দ্র করে বিবাদ দীর্ঘদিনের। কয়েক দশকে বারবার উত্তপ্ত হয়েছে এলাকা। সাক্ষরিত চুক্তিতে থাইল্যান্ডের ১৮ জন বন্দি কম্বোডিয়ান সৈন্যকে মুক্তি দেওয়া এবং উভয় পক্ষকে সীমান্ত এলাকা থেকে ভারী অস্ত্র অপসারণ শুরু করার বিষয়টি রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
