মোহনবাগান -২ (ম্যাকলারেন)
চেন্নাইন এফসি - ০
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ম্যাকলারেন - ২, চেন্নাইন - ০। নব্বই মিনিটের শেষে মোহনবাগান বনাম চেন্নাইন ম্যাচের স্কোরলাইনের ব্যাখ্যা এইভাবে করলে বোধহয় ভুল হবে না। শিল্ড থেকে সুপার কাপ। টুর্নামেন্ট বদলালেও রেজাল্ট বদলায়নি। শনিবাসরীয় রাতে গোয়ার ফাতোর্দা স্টেডিয়ামে চেন্নাইন এফসিকে ২-০ গোলে হারাল মোহনবাগান। জোড়া গোল জেমি ম্যাকলারেনের। ইস্টবেঙ্গলের ড্রয়ের দিন মোহনবাগানের জয়। অর্থাৎ, গ্রুপের শেষ ম্যাচে ডার্বিতে মুখোমুখি হওয়ার আগেই একধাপ এগিয়ে গেল হোসে মোলিনার দল। একই গ্রুপে ইস্ট-মোহন। গ্রুপ থেকে একটা দলই পরবর্তী পর্বে যাবে। চেন্নাই বধে কিছুটা সুবিধাজনক জায়গায় শিল্ডজয়ীরা। বিদেশিহীন চেন্নাই। সবে মাত্র দায়িত্ব নিয়েছেন ক্লিফোর্ড মিরান্ডা। তারওপর মাত্র সাত দিনের প্র্যাকটিস। ফেভারিট হিসেবেই নেমেছিল মোহনবাগান। তার মর্যাদা রাখল কলকাতার প্রধান। তবে প্রথমার্ধে যথেষ্ঠ লড়াই করে চেন্নাই। বাগানের থেকে সুযোগ বেশি তাঁদের। কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি ইরফান, মন্দাররা। অন্যদিকে প্রথমার্ধে একটা সুযোগেই বাজিমাত মোহনবাগানের। সবুজ মেরুন ব্রিগেড জিতলেও, দলের খেলায় হয়তো একশো শতাংশ খুশি হবেন না মোলিনা।
শিল্ড জয়ের ঠিক এক সপ্তাহ পরে খেলতে নেমেছিল মোহনবাগান। কিন্তু মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে শুরুতে কিছুটা ছন্দহীন দেখায় মোলিনার দলকে। তুলনায় ক্ষিপ্রতা বেশি ছিল বিদেশিহীন চেন্নাইয়ের। শুরুর দশ মিনিটে একটা ঝাপটা দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে কোনও দলই পজিটিভ সুযোগ পায়নি। শুরুতে কিছুটা ব্যাকফুটে ছিল সবুজ মেরুন ব্রিগেড। প্রচণ্ড বৃষ্টির কারণে মাঠে বল জমে যায়। সঠিকভাবে বল গড়াচ্ছিল না। শট নিতে অসুবিধা হয় দুই দলের ফুটবলারদের। তাই প্রথম ২৫ মিনিট অত্যন্ত ম্যাড়ম্যাড়ে খেলা। মানও তেমনই। তবে বৃষ্টি একটু কমার পর থেকে আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করে দুই দলই। তবে অগ্রাধিকার ছিল চেন্নাইয়ের। ম্যাচের ২৫ মিনিটে প্রথম সুযোগ। ফারুকের শট বাঁচান বিশাল কাইথ। এর আগে সেইভাবে ওপেন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি কোনও দলই। ম্যাচের ৩২ মিনিটে প্রথম সুযোগ মোহনবাগানের। বক্সের মধ্যে বল পান সাহাল। সামনে একা চেন্নাইয়ের কিপার। কিন্তু শট নেওয়ার আগেই ক্লিয়ার করে দেয় বিপক্ষের ডিফেন্ডার। এই সুযোগ হাতছাড়া করার জন্য নিঃসন্দেহে হাত কামড়াবেন সাহাল।
প্রথমার্ধে দাপট বেশি ছিল চেন্নাইয়ের। গোল লক্ষ্য করে শটও বেশি। তবে নৈপুণ্যের অভাব। ম্যাচের ৩৫ মিনিট নাগাদ জিতেশ্বরের শট বাঁচায় বিশাল। ফিরতি বলে পা ছোঁয়াতে পারেনি ইরফান। চেন্নাইয়ের নিশ্চিত সুযোগ মিস। সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচের ৩৭ মিনিটে এগিয়ে যায় মোহনবাগান। প্রথম টাচেই গোল জেমি ম্যাকলারানের। অনিরুদ্ধ থাপার বল চেস্ট ট্র্যাপ করে নামান লিস্টন। তারপর ব্যাকহিল। চলন্ত বলে ডান পায়ের কোনাকুনি শটে নিখুঁত প্লেসিং অস্ট্রেলিয়ান বিশ্বকাপারের। গোটা প্রথমার্ধে এই একটাই সুযোগ মোহনবাগানের। সেটা থেকেই গোল। বাকি সময়টা বলই পায়নি ম্যাকলারেন। এটাই সবুজ মেরুনের কোয়ালিটি বুঝিয়ে দেয়।
দ্বিতীয়ার্ধে শুরুটা ভাল করে মোহনবাগান।চেন্নাইয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। যার ফলে ম্যাচ থেকে অনেকটাই হারিয়ে যায় ক্লিফোর্ডের দল। শেষ ৩০ মিনিট সবুজ মেরুনের। ম্যাচের ৬৭ মিনিটে মোহনবাগানের ২-০। আবার ম্যাকলারানের ব্যক্তিগত নৈপুণ্য। ডানদিক থেকে মনবীরের ক্রস। বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে গোলকিপারের মাথার ওপর থেকে গোল ম্যাকলারানের। ম্যাচের স্কোরলাইন ৫-০ হতে পারত। অন্তত চার গোলে জেতা উচিত ছিল। ম্যাচের ৭০ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছিল সবুজ মেরুন। কিন্তু বাইরে মারেন থাপা। পরিবর্ত হিসেবে নেমে জোড়া সুযোগ মিস জেসন কামিন্সের। দ্বিতীয়ার্ধে সেরা সুযোগ লিস্টনের। ম্যাচের ৮৭ মিনিটে বিপক্ষের কিপার মহম্মদ নওয়াজকে সামনে একা পেয়েও তাঁর গায়ে মারেন গোয়ান মিডিও।
