আজকাল ওয়েবডেস্ক: রঞ্জি ট্রফির ইতিহাসে দেখা গেল এক অবিশ্বাস্য ম্যাচ! অসম ও সার্ভিসেসের মধ্যে রঞ্জি ট্রফির এই লড়াই রেকর্ড গড়ল টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত লাল বলের ম্যাচ হিসেবে। পুরো ম্যাচে খেলা হয়েছে মাত্র ৯০ ওভার, আর সেই সময়ের মধ্যেই পড়ে গেছে ৩২টি উইকেট।

অর্থাৎ চার ইনিংসের খেলাই শেষ! রঞ্জি ট্রফির ৯১তম বর্ষপূর্তির আগে এমন এক বিরল ঘটনা নজির গড়ল টুর্নামেন্টে। তিনসুকিয়া ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশন গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে ব্যাটারদের, রাজত্ব ছিল সম্পূর্ণভাবে বোলারদের।

দুই দলের মোট রান দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩৫৯। খেলা শেষ হয়েছে দ্বিতীয় দিনের লাঞ্চের আগেই, এবং সার্ভিসেস জয় পেয়েছে ৮ উইকেটে। তিনসুকিয়া মাঠে মাত্র দ্বিতীয় রঞ্জি ট্রফি ম্যাচ ছিল এটি। প্রথম দিনেই পড়েছিল ২৫টি উইকেট!

মোট ৫৪০ বলের এই ম্যাচ ভেঙে দিয়েছে দিল্লি বনাম রেলওয়েজের ১৯৬১-৬২ মরশুমের রেকর্ড, যেখানে ৫৪৭ বলে ম্যাচ শেষ হয়েছিল ২২১ রানে। তবে সময়ের হিসাবে সবচেয়ে কম সময়ের ম্যাচের রেকর্ড এখনও রয়েছে রঞ্জি ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচের দখলে।

১৯৩৪ সালের নভেম্বর মাসে মাদ্রাজ ও মাইসোরের মধ্যে খেলা সেই ম্যাচটি শেষ হয়েছিল প্রথম দিনেই, ১০০.৫ ওভারে। অসম বনাম সার্ভিসেস ম্যাচটি আরও এক বিশেষ ইতিহাস গড়েছে। রঞ্জি ট্রফির ইতিহাসে প্রথমবার, একই ইনিংসে দুই বোলার হ্যাটট্রিক নিয়েছেন!

এর আগে এই কীর্তি ছিল একমাত্র জগিন্দর সিং রাওয়ের। তিনি সার্ভিসেসের হয়েই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে একই ইনিংসে দুটি হ্যাটট্রিক নিয়েছিলেন। এই ম্যাচে সার্ভিসেসের অফ-স্পিনার অর্জুন শর্মা ছিলেন সেরা বোলার। যিনি ম্যাচে মোট ৯ উইকেট নেন।

অসমের হয়ে সেরা পারফর্মার ছিলেন রিয়ান পরাগ, যিনি দুই ইনিংসে মিলিয়ে ৭টি উইকেট দখল করেন। প্রথম ইনিংসে ১০০-এর ওপরে রান তুললেও দ্বিতীয় ইনিংসে অসম গুটিয়ে যায় মাত্র ৭৫ রানে। এরপর সার্ভিসেস সহজেই লক্ষ্য তাড়া করে ৮ উইকেটে জয় পায়।

বোলারদের আধিপত্যেই রঞ্জি ট্রফির এই ম্যাচ আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছিল। ম্যাচের শুরুতেই সার্ভিসেসের স্পিনার অর্জুন শর্মা পান রাজস্থান রয়্যালসের ক্রিকেটার রিয়ান পরাগের উইকেট, এরপর একে একে সুমিত ঘটিগাঁওকর ও শিবশঙ্কর রায়কে ফিরিয়ে নেন এবং সম্পূর্ণ করেন চলতি মরশুমের প্রথম হ্যাটট্রিক।

অর্জুনের পর এবার মঞ্চে আসেন বাঁহাতি পেসার মোহিত জাঙ্গরা। তিনি অসমের ওপেনার প্রদ্যুন শইকিয়া (৫২ রান)-কে ফিরিয়ে দিয়ে নিজের হ্যাটট্রিকের সূচনা করেন। এরপর দ্রুত উইকেট নেন মুখতার হোসেন ও ভর্গব লাখারের, এবং রেকর্ড করেন নিজের প্রথম শ্রেণির কেরিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক।

দেড় দিনের এই ম্যাচে কেউ সেরকম রান তো করতেই পারেননি। কিন্তু বর্তমানে ব্যাটারদের আধিপত্যের যুগে এরকম আগুনে বোলিংয়ে টেস্ট ম্যাচের সমাপ্তিতে রঞ্জি ট্রফিতে রচিত হল নতুন ইতিহাস।