সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: গোটা ম্যাচে হয়তো হাতেগুণে মাত্র কয়েকবার দেখা গিয়েছে তাঁকে। কিন্তু ম্যাচ শেষে স্কোরশিটে তাঁর নামের পাশে লেখা 'হ্যাটট্রিক'। আর্লিং হালান্ডের এই বিশেষ গুণ রপ্ত করতে চান তাঁরই দেশের স্ট্রাইকার মুশাগা বাকেনগা। পাঞ্জাব এফসির হয়ে এবার আইএসএলে হাতেখড়ি হতে চলেছে নরওয়ের ৩২ বছরের স্ট্রাইকারের। একসময় একই ক্লাবে খেলেছেন দু'জন। অবশ্য একসঙ্গে খেলা হয়নি। মুশাগা রোসেনবার্গ ছাড়ার পর সেই ক্লাবে যোগ দেন হালান্ড। তবে দু'জনের সাক্ষাৎ হয়েছে। বাকেনগার থেকে অনেকটাই জুনিয়র ম্যান সিটির তারকা ফুটবলার। এক সময় মুশাগার গোলে মুগ্ধ হয়ে তাঁর সঙ্গে নিজেই আলাপ করতে আসেন হালান্ড। ছবি তুলতে চান। তখন অবশ্য হালান্ড খুবই ছোট। তবে রাতারাতি তারকা বনে যাওয়ায় পরবর্তীকালে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। বুধবার আইএসএলের মিডিয়া ডেতে গল্পের ছলে জানান নরওয়ের স্ট্রাইকার। মুশাগা বলেন, 'একবার আমি গোল করার পর হালান্ড নিজে আমার সঙ্গে আলাপ করতে এসেছিল। আমার সঙ্গে ছবি তুলতে চায়। তখন ও অনেকটাই ছোট। তার দু'বছর পর ওর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পারিনি। সময় বদলে গিয়েছিল। ও ততদিনে এখনকার মতো 'দ্য হালান্ড' হয়ে গিয়েছিল।' তারকা ফুটবলারের সঙ্গে পরবর্তীকালে আর যোগাযোগ না করতে পারার আক্ষেপ রয়ে গিয়েছে। তবে তাঁর একটি বিশেষ গুণ রপ্ত করতে চান মুশাগা। গোটা ম্যাচে চোখে না পড়লেও, আসল সময় ঠিক গোল করে দেন হালান্ড। পাঞ্জাব এফসির হয়ে এবার সেই কাজটাই করতে চান নরওয়ের স্ট্রাইকার। তবে পাশাপাশি জানিয়ে রাখলেন, কমপ্লিট ফুটবলার হিসেবে অনেক উন্নতি করেছে হালান্ড। মুশাগা বলেন, 'আমি হালান্ডের মতো অদৃশ্য থেকেও হ্যাটট্রিক করতে চাই। গোটা ম্যাচে তাঁকে দেখা না গেলেও হঠাৎ নিজের উপস্থিতির জানান দেন। এটাই ওর বিশেষ গুণ। ওর কনভার্শান রেট দারুণ। শুধুমাত্র শারীরিক বলের প্রয়োগ করে না, বুদ্ধিও ব্যবহার করে। মাথা খাটিয়ে সুযোগ বুঝে গোল করে বেরিয়ে যায়। ফুটবলার হিসেবে এখন ও অনেক বিকশিত।'
বর্তমানে বিশফুটবলে বড় নাম হালান্ড। কিন্তু কোনওদিন কি তাঁর বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন পূরণ হবে? মুশাগা বলেন, 'বিশ্বকাপ খেলার এটাই সেরা সুযোগ। এটাই নরওয়ের সেরা দল। মার্টিন ওডেগার, হালান্ডের মতো ফুটবলাররা রয়েছে। এখন না পারলে আর কোনওদিন পারবে না।' শুধুমাত্র ফুটবলেই সীমাবদ্ধ নেই মুশাগা। গ্র্যান্ডমাস্টার ম্যাগনাস কার্লসেনও তাঁর বন্ধু। মাঝেমধ্যেই তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা হয়। এমন হাই-প্রোফাইল ফুটবলার হঠাৎ পাঞ্জাব এফসির মতো আইএসএলে নবাগত ক্লাবে খেলার সিদ্ধান্ত কেন নিলেন? মুশাগা বলেন, 'আমার কাছে বেশ কয়েকটা ক্লাবের প্রস্তাব ছিল। কিন্তু পাঞ্জাবের ফুটবল দর্শন আমার ভাল লেগেছে। তুলনায় নতুন দলের হয়ে খেলা চ্যালেঞ্জিং। ভারতে সেই চ্যালেঞ্জটা নিতে চেয়েছিলাম।' আইএসএলে যোগ দেওয়ার আগে দুই কলকাতা জায়ান্ট মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের নাম জেনেছেন তিনি। শোনেন সুনীল ছেত্রীর নামও। ভারতে আসার পর কয়েক মিনিটের জন্য দেখাও হয় দেশের ফুটবল আইকনের সঙ্গে। এই প্রসঙ্গে মুশাগা বলেন, 'আমি মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলের নাম শুনেছি। এখানে আসার আগেই আমি ভারতের সর্বোচ্চ গোলদাতা সুনীলের নাম শুনেছিলাম। যেকোনও দেশের হয়ে এতগুলো গোল করা মুখের কথা নয়। সুনীলের সঙ্গে একদিন আমার জিমে কয়েক মিনিটের জন্য দেখা হয়। দু'জনেই শুভেচ্ছা বিনিময় করি। তবে ওর কীর্তিকে সম্মান জানাতেই হবে।' অভিষেক বছরে একটুর জন্য সুপার সিক্সে জায়গা হয়নি পাঞ্জাবের। এবার হালান্ডের দেশের ফুটবলার দলকে এই গণ্ডি পার করাতে পারে কিনা সেটাই দেখার।
