সংবাদ সংস্থা মুম্বই: বাকু সফরে পাকিস্তানি তরুণদের মুখে দেশ নিয়ে ক্ষোভ শুনে বিস্মিত নন আদনান সামি।  জনপ্রিয় গায়ক জানালেন কেন বহু বছর আগেই পাকিস্তান ছেড়ে এসেছিলেন তিনি।

 

পাকিস্তান সেনাবাহিনী যে দেশ ও মানুষের মঙ্গল চায় না—এই উপলব্ধিই একসময় তাঁকে পাকিস্তান ছাড়তে বাধ্য করেছিল। আর এই মন্তব্যটি করেই ফের শিরোনামে উঠে এলেন প্রখ্যাত গায়ক আদনান সামি। সম্প্রতি, আজারবাইজানের বাকু শহরে ভ্রমণের সময় কিছু পাকিস্তানি তরুণের সঙ্গে দেখা হয় সামির। সেখানেই ঘটে এমন এক মুহূর্ত, যা গায়ক নিজেই তুলে ধরেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।

 

“বাকুর অপূর্ব রাস্তায় হাঁটার সময় কয়েকজন খুবই নম্র-ভদ্র পাকিস্তানি ছেলের সঙ্গে দেখা হল। ওরা বলল, ‘স্যার, আপনি খুব সৌভাগ্যবান। ঠিক সময়ে পাকিস্তান ছেড়েছেন। আমরাও নাগরিকত্ব বদলাতে চাই। আমরা আমাদের আর্মিকে ঘৃণা করি। ওরাই আমাদের দেশটা শেষ করে দিয়েছে।’ আমি বললাম, ‘আমি তো অনেক আগেই এটা বুঝে গিয়েছিলাম!’” — সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লিখেছেন সামি।

 

 

?ref_src=twsrc%5Etfw">May 4, 2025


এই মন্তব্যের পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ হামলার (যেখানে ২৬ জন প্রাণ হারান) পরে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পাকিস্তানি নাগরিকদের সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই প্রসঙ্গে এক সাংবাদিক আদনান সামির প্রসঙ্গ তোলায়, পাকিস্তানের প্রাক্তন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন—“আদনান সামির কী হবে?” প্রত্যুত্তরে সামির জবাব ছিল ঝাঁঝালো— “এই অশিক্ষিত বোকাটাকে কে গিয়ে বলবে কিছু?”সেখানে অবশ্য ব্যাপারটা থেমে থাকেননি। ফাওয়াদ দাবি করেন, সামির জন্ম লাহোরে। সঙ্গে সঙ্গেই সমাজমাধ্যমে সামি লেখেন, “আমার শিকড় পেশোয়ারে, লাহোরে নয়! আপনি তথ্যমন্ত্রী ছিলেন অথচ তথ্যের ছিটেফোঁটা জানেন না! আপনি তো সায়েন্স মন্ত্রীও ছিলেন, সেটা কি ‘বোকামির বিজ্ঞান’ ছিল নাকি?”

 


২০০১ সালে ভারতে চলে আসেন সামি। ২০১৬ সালে ভারতীয় নাগরিকত্ব পান। একসময় পাকিস্তান ও কানাডার ডুয়াল সিটিজেনও ছিলেন তিনি। সামি একাধিক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, পাকিস্তানে তিনি নিরাপদ ছিলেন না। ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য লেগে যায় প্রায় ১৮ বছর। এমনকি এক সময় তিনি রাষ্ট্রহীন অবস্থাতেও ছিলেন দেড় বছর। পাকিস্তান সেনার ভূমিকা নিয়ে যেমন তিনি স্পষ্ট, তেমনই নিজের ভারতবাসী পরিচয় নিয়েও। পেশোয়ারের সন্তান আজ মুম্বইয়ের বাসিন্দা। বলিউডের একাধিক হিট অ্যালবামের গায়ক তিনি—‘কভি তো নজর মিলাও’ থেকে ‘লিফট করা দে’—সবই জনপ্রিয় হয়েছে ভারতীয় শ্রোতাদের মধ্যে।

 

আদনান সামির এই টুইট-যুদ্ধ যেমন সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় ফেলেছে, তেমনই আবার নতুন করে সামনে এনেছে পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও সামরিক কাঠামো নিয়ে গভীর অসন্তোষের ছবিটা।