নিজস্ব সংবাদদাতা: এম/এস সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী প্রোডাকশন গর্বের সঙ্গে উপস্থাপন করছে ‘পরী মণি’ — একটি রোমহর্ষক হরর কাহিনি যা অতিপ্রাকৃততার গণ্ডি ছাড়িয়ে অনেক দূর যায়। এই গল্পের মূল কেন্দ্রে রয়েছে এক শক্তিশালী সামাজিক বার্তা, যেখানে ভয়ের আবরণে সমাজের গভীরে প্রোথিত সমস্যাগুলি প্রতিফলিত হয়েছে। নির্মাতাদের আশা, এই প্রজেক্টের মাধ্যমে দর্শককে শুধু বিনোদনই নয়, বরং চিন্তা ও আলোচনারও খোরাক জোগানো। তাই প্রস্তুত হোন — এক ভয়াল অভিজ্ঞতার জন্য, যা বহুভাবে মনে দাগ কাটবে।

 

'পরী মণি' প্রযোজনার দায়িত্বে রয়েছেন এম/এস সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী প্রোডাকশন, মুখ্যচরিত্রে দেখা যাবে -তনুশ্রী চক্রবর্তী, রজতাভ দত্ত, দেবরাজ ভট্টাচার্য, প্রজ্ঞা গোস্বামী-কে। ছবি জুটিতে পরিচালনা করেছেন সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী ও সৌভিক দে, গল্প লিখেছেন সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লেখার দায়িত্ব সামলেছেন সৌভিক দে, সুমন গিরি ও অভিজিৎ দাস, চিত্রগ্রাহকের আসন সামলেছেন অর্ণব গুহ, সম্পাদনা  অভিষেক মুখার্জির এবং সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন সৌম্য ঋত। 

 

নির্মাতাদের মতে, ‘পরী মণি’ আদতে ভৌতিক আতঙ্কের আড়ালে লুকিয়ে আছে এক কোমল সামাজিক বার্ত — এই বার্তাটি ‘পরী মণি’ ছবির প্রতিটি দৃশ্যে প্রতিধ্বনিত হয়। এই ছবি সামাজিক-হরর ঘরানার গল্প হলেও তার পরতে পরতে রয়েছে ভয়, ভালবাসা, অপরাধবোধ, দায়িত্ববোধ এবং জীবনের হাহাকার। ঘটনাটি ঘটে এক সাধারণ ঘরের মধ্যে, কিন্তু সেই ঘরের দেওয়াল যেন লুকিয়ে রেখেছে এক অসাধারণ অতীত — এক মা, এক কন্যা  এবং সেই শিশুর অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তন।

 

 

গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র পরী এক কিশোরী মেয়ে। এই ছবি তুলে ধরে এক মায়ের মানসিক বিপর্যয়, নারীর চেতনার বিকৃতি, এবং সমাজের নীরব নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে এক বিদ্রোহ। তাই পরী মণি শুধু একটি সিনেমা নয় — এটি এক প্রতিরোধের কণ্ঠস্বর, এক নিঃশব্দ আর্তনাদের প্রতিচ্ছবি, যা ভয়ের ভাষার মধ্যে দিয়েও মানুষই অসহায়তার বিষের বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলে।

 

 

ছবি নিয়ে পরিচালকদ্বয় সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী ও সৌভিক দে-র বক্তব্য – “ ‘পরী মণি’ শুরু হয়েছিল একটি ভূতের ছবি হিসেবে, কিন্তু যখন আমরা গল্পটি গঠন করতে শুরু করি, তখন বুঝলাম এটি আসলে আমাদের সমাজেরই প্রতিফলন — যেখানে আসল ভয় অনেক সময় লুকিয়ে থাকে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিকতার আবরণের নিচে। এই ছবির মাধ্যমে আমরা অতিপ্রকৃতির শিহরণ ও এক কঠিন সামাজিক বাস্তবতাকে একসঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করেছি — সেই বাস্তবতা, যা প্রায়শই অবহেলিত বা চুপ করিয়ে দেওয়া হয়। তাই, আমাদের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র দর্শককে ভয় দেখানো নয় — বরং তার মনের ভিতরে নাড়া দেওয়া, একটি প্রশ্ন তোলা, অস্বস্তির জন্ম দেওয়া, কিংবা একটি উপলব্ধি করানো। ‘পরী মণি’ আসলে এক রহস্যময় গল্প, তবে তার থেকেও বেশি — এটি একটি সতর্কবার্তা, যে আমাদের সবচেয়ে ভয়ের বিষয়গুলো অনেক সময় আমাদের সবচেয়ে কাছের জায়গা থেকেই উঠে আসে।”

 

তনুশ্রী চক্রবর্তী বললেন, “‘পরী মণি’ আমার জন্য একটি বিশেষ ছবি। এটি একটি হরর-থ্রিলার সিনেমা। আমার চরিত্রটির অনেক রং আছে, এবং এটা নিঃসন্দেহে আগের কাজগুলোর থেকে আলাদা। গল্পটা দারুণভাবে গাঁথা হয়েছে। আমরা ছবিটা শুট করেছি একটি অনবদ্য প্রাকৃতিক লোকেশনে। রজতাভ দত্ত অসাধারণ কাজ করেছেন। শিশুটিও দুর্দান্ত – এক দারুণ আবিষ্কার। ওর সঙ্গে কাজ করে খুবই ভাল লেগেছে। ছবির পরিচালক-জুটি  জানেন তারা কী চাইছেন, তাঁদের দৃষ্টি পরিষ্কার, এবং কাজের প্রতি তাঁদের প্রতিশ্রুতি অসাধারণ। তাঁদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল সত্যিই খুব ভাল।” 

 

‘পরী মণি’ কেবল একটি হরর ছবি নয় — এটি এক সামাজিক প্রতিচ্ছবি, এক নীরব বিদ্রোহের ভাষা, যা প্রতিটি চেনা ঘরের অন্ধকারে খুঁজে ফেরে মানুষের অপ্রকাশিত ভয়, অপরাধবোধ আর দীর্ঘশ্বাস।  তাই “পরী মণি” দেখার জন্য প্রস্তুত হন যদি আপনি সাহসী হন মুখোমুখি হতে সেই ভয়াবহতাকে, যা আসে বাইরে থেকে নয় — আসে আমাদের ভেতর থেকে!